পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৪২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Se. बछछब्{ञ [ আগ্রহায়ণ তুমিও যে তটিনী রে আমারই মতন, পাষাণে চাপিয়া বক্ষ কর সস্তরণ, নির্ণয়ের পদতলে, লুটাই নয়ন জলে, নিষ্ঠুর গিরির পদে তুমি অভাগিনী ! লুটাইছ তরঙ্গিণী দিবস যামিনী।” এইরূপ করুণরসের অবতারণা যে কেবল শিক্ষার গুণে বা যত্বের বলে হইয়াছে, এমত বোধ হয় না । কবির নিজের গুণে । ভাবের মধ্যে শোক র্তাহার মনে বিশেষ প্রবল বলিয়া বোধ হয় । এই জন্য করুণরসে র্তাহার এত অধিকার দেখা যায়। অন্যরসে যে তিনি সম্পূর্ণ বঞ্চিত এমত বলি না, তবে যে সকল রস র্তাহার চিত্ত স্পর্শও করে না সে সকল রস উদ্দীপন করিবার নিমিত্ত তিনি তুই এক স্থানে সময় নষ্ট করিয়াছেন, বোধ হয় তাহা কেবল অনুরোধে । কেন না লেখক আপনিই স্বীকার করিয়াছেন যে মধ্যে মধ্যে তিনি কাব্যের ফরমাইস্ লইয়া থাকেন। কিন্তু ফরমাইস্ বা চেষ্টা উভয়ই কবির পক্ষে কুপথ। যিনি তাহা অবলম্বন করিয়াছেন, তিনিই নিস্ফল হইয়াছেন । “কাব্য কি” ? র্যাহারা জানেন না, তাহারাই কাব্য লিখিতে চেষ্টা পান, বা লিখিবার নিমিত্ত অন্তকে অনুরোধ করেন । যে রস মনে কখন আসে নাই, সে রস অনুবোধে বা চেষ্টায় কিরূপে বর্ণিত হইবে । বোধ হয় তাহারা বলিবেন অনুভব দ্বারা । সত্য, মনে কোন ভাবের উদ্দীপন হইলে তাহার দুই একটি কার্যকেলি অনুভব করা যাইতে পারে। কিন্তু যে স্থলে ভাব কি রস কিছুই নাই, সে স্থলে কে তাহার ক্রিয় অনুভব করাইবে । যে স্থলে মেঘ নাই, সে স্থলে কে বৃষ্টি । বর্ষণ করিবে ? যদি তুমি জল ছিটাইয়া বল, এই বৃষ্টি হইল দুই একটা বালক ভিন্ন কে তোমার কথা বিশ্বাস করিবে ? ইদানীং বাঙ্গালার অধিকাংশ কাব্য লেখক যে কবি নহেন তাহার কারণ এই । অনেকে জল ছিটাইয়া বলেন, বৃষ্টি করিলাম ; ভাব বা রস কিছুই তাহাদের নাই, কেবল অনুভবের উপর তাহাদের নির্ভর । যে কখন স্বচক্ষে পৰ্ব্বত কি সমুদ্র দেখে নাই সে তাঙ্গ কি অনুভব করিবে ? অন্যের মুখে যাহা শুনিয়াছে বা অন্যের গ্রন্থে যাহা পাঠ করিয়াছে তাহাই লিখিবে । চৰ্ব্বণে যাহার রস গিয়াছে তাহাই আবার পুনশ্চব্বিত করিবে । পৰ্ব্বতে কি সমুদ্রে কাব্যরস নাই। তাহা কেবল দর্শকের অন্তরে থাকে। পৰ্ব্বত কি • সমুদ্র দেখিলে চিত্তের যে চাঞ্চল্য জন্মে তাহাই কাব্যরস । যে পৰ্ব্বত বা সমুদ্র দেখিল না, কেবল অন্যের মুখে শুনিল, সে এ চাঞ্চল্য কোথা পাইবে, অনুভৰে তাহা সম্ভবে না। কাজেই অনুরোধে কাব্যের স্বষ্টি হইতে পারে না।