পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৪৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৮৫ ] বঙ্গীয় যুবক ও তিল কবি । 8�ሞ কমিতে কমিতে র্তাহাদের শক্তিরও হ্রাস হইয়া আসিয়াছিল। যাহা দমন করিবার জন্য বাল্মীকি বেদব্যাস হৃদয়বিন্দ্রাবিণী উম্মাদিনী কবিতাবলী রচনা করিয়াছিলেন সেই পদার্থ সেই শক্তি লোপ হইয়াছিল। দৌরাত্ম্যপ্রিয় উৎপাতপ্রিয় তেজস্বী আৰ্য্য যুবক কবিতার মোহিনী বলে মেষশাবকবৎ নিরীহ হইয়াছিলেন। বঙ্গদেশের শক্তি স্বাধীনতা তেজ গিয়া উহা কারখানার একটা একটী কলের মত হইয়াছিল। যেমন বাষ্পীয় বলপ্রভাবে সহস্ৰ সহস্ৰ নলী একই ভাবে সকালে ছয়টা হইতে সায়াহ্নে ছয়টা পৰ্য্যস্ত চলে তেমনি বঙ্গীয় সহস্ৰ সহস্ৰ লোক জন্ম হইতে মৃত্যু পৰ্যন্ত একই ভাবে চলিত । চালাইত কে ? কোন বাষ্পীয় যন্ত্রের এরূপ অসীম শক্তি ? হিন্দুসমাজের দমন শক্তি। যেমন মধুর সঙ্গীতে বনের মত্তহস্তী পোষ মানিয়া চালকের বশে চলে তেমনি বাল্মীকি ও বেদব্যাসের মনোমোহিনী বীণার বশ হইয়া দুরন্ত শুরজ বংশীয়েরাও দমন হইয়াছিল ; বাঙ্গালী ত কোন ছার। আদিম অবস্থার সমাজ-শাসনের প্রধান বিস্তু এই যে মনুষ্য কেহ কাহার অধীন হইতে চাহে না এবং সকলেই যাহা খুসী তাই করিতে চায়, সমাজবন্ধন করিতে গেলে obedience প্রথম প্রয়োজন। এই জন্য যাহারা প্রথম সমাজ বন্ধন করিয়াছিলেন তাহারা ঐটা শিক্ষা দিবার জন্য চেষ্টা করেন। একপুরুষে সকল উদ্ধতস্বভাব লোককে শাসনাধীন করা যায় না এই জন্য ১০১৫ পুরুষ পৰ্য্যন্ত এক নিয়মে থাকিয়া সমাজমধ্যবৰ্ত্তী সমস্ত লোককে বশুতা স্বীকার করান চাহি । রামায়ণ ও মহাভারত এই উদেশ্বাসাধনের জন্য নিৰ্ম্মিত । বহুকাল অবধিই হিন্দুরা রাম ও যুধিষ্ঠিরের চরিত্রানুকরণ করতঃ সমাজশাসনের অধীন হইয়াছেন। সমাজও উত্তমরূপে দৃঢ়বদ্ধ হইয়াছে। কিন্তু শুদ্ধ সমাজবন্ধনই ত মমুৰ্য্যের উদ্দেশু নহে, সমাজবন্ধন পথ । এই পথে মনুস্থ্য সভ্যতাসোপানে আরোহণ করিবে ; ক্রমে জড়জগতের উপর আধিপত্য করিবে, আপন জাতির মুখস্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধি করিবে । প্রথম আপন জাতির, ক্রমে আপন দেশের, তাহার পর সমস্ত মনুষের, তাহার পর সমস্ত জীবলোকের উপকার করিবে । যাহাতে জীবলোক জড়ের সহায়তায় দীর্ঘকাল আনন্দ অনুভব করিয়া বিনা ক্লেশে দেহ ত্যাগ করিতে পারে তাহার চেষ্টা করিবে তবে ত পথ সার্থক হইবে, নচেৎ বনমধ্যে পথ কাটিয়া রাখিলে তাহাতে লাভ কি ? সমাজবদ্ধ হইল কিন্তু সমাজের উদ্দেশু কিছু রহিল না। যেমন রাম লক্ষ্মণ ভরত শক্রয় দেখিয়া মনুষ্য শাস্ত হইল সেইরূপ শান্ত হইয়া কি করিবে বুৰিতে পারিল না। তাহাতে এই হইল যে কতক লোক ভোগে জাশক্ত হইল আর কতক এ জন্মের ভোগ ত্যাগ করত; পরলোকের ভোগের জন্য ব্যস্ত হইল। কতক মুন্দরী