পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৪৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 बछझभञि পৌষ বর্ণনীয়ু বস্তু পরিষ্কারই হউক আর অপরিষ্কারই হউক বৰ্ণনায় হৃদয়গ্রাহিদ্ধ সমানই আছে । বায়রণের বর্ণনীয় ইউরোপ। সমস্ত ইউরোপে যা কিছু বর্ণনযোগ্য— আল্পসের চূড়া, রাইনেব বিশাল জলপ্রবাহ, গ্রীসের দ্বীপমালা, মাইকেল এঞ্জিলোর চিত্র ভিনিস ও রোমের ভগ্নাবশেষ। শিল্পে ও স্বভাবে যে কিছু মহান ও মনোহর, সকলই তাহার গ্রন্থমধ্যে স্থান পাইয়াছে। তাহাব বর্ণনা মধ্যে এক জিনিস আছে যাহা আর প্রায় কাহারও নাই। ঐতিহাসিক দৃশ্য বর্ণনে বায়রণের অসাধারণ ক্ষমতা, ওয়াটরলুব যুদ্ধ রুসের নিবাসস্থান বল্ডেরেব গির্জা বর্ণনায় বায়বণ র্তাহার বিশাল হৃদয়ের পূর্ণ প্রতিকৃতি প্রদান করিয়াছেন । এই সকল বর্ণনার পর তাঁহার উপদেশগুলি যুবকমণ্ডলীর অন্ত:করণে এরূপ অঙ্কিত হয় যে তাহা আর অপনীত হইবার নহে । পাঠক জিজ্ঞাসা করিতে পাবেন যে যুবকদিগের চরিত্রনিৰ্ম্মাণের কথায় স্বভাবের বর্ণনা আসিল কেন ? এ ধান ভানিতে শিবের গীত কেন ? তাহার উত্তর এই স্বভাব বর্ণনায়ও নীতিশিক্ষা আছে, আব সেটি দেখানও বড় সহজ, এই জন্য আগে স্বভাবের শোভা বর্ণিত দেখিয়া কি শিক্ষা পাই দেখাই, তাহার পর অন্য প্রকার শিক্ষা যথাশক্তি দেখাইতে চেষ্টা করিব । প্রথম কালিদাসেল বর্ণনায় সব শান্তিময় সব সুখময়, পড়িলে মনের শান্তিময় ভাব জন্মে । যখন ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয়েরা, পাদরি সাহেবরা ও ব্রাহ্ম মিসনবিগণ দিনরাত জগৎ দুঃখময় পাপের ভরে ডুবলে ডুবলো বলিতেছেন, তখন ওরূপ পুস্তক পড়িলে বাস্তবিকই জগৎ ছ:খময় নহে বলিয়া বোধ হয়। এ বড় সামান্য শিক্ষা নহে। বঙ্কিমবাবু স্বভাববর্ণনায় শুদ্ধ শান্তি নয় তাহার উপর যেন একটু কিছু আছে, যেন যে আনন্দ যৌবনের বড় প্রিয় সেইরূপ আনন্দ যেন বেশী আছে । বায়রণের বর্ণনায় শাস্তি নাই, কেবল পরিবর্তন হইতেছে অসংখ্য পরিবর্তন এটা ছেড়ে ওটা, ওটা ছেড়ে সেট, যেন তৃপ্তি হইতেছে না, যেন একটু চটা চটা ভাব উদয় হইতেছে যেন যাহার অন্বেষণে স্বভাবের শোভা দেখিতে আসিয়াছি সে মুখটুকু পাইতেছি না কেবল কৌতুহলতৃষ্ণায় কাতর হইয়া যাহা কিছু সুন্দর দেখিতেছি দেখিতে যাইতেছি, দেখিতেছি, তৃপ্তি হইতেছে, কিন্তু সে তৃপ্তি বেশীক্ষণ থাকিতেছে না। সংক্ষেপে তিনজনের বর্ণনায় তিনরূপ উদ্দেশু আর এক প্রকারে দেখান যায়। কালিদাস উপরে বসিয়া বিশুদ্ধ আনন্দের সহিত নীচেকার শোভা দেখিতেছেন আর দেখাইতেছেন। নিজে মন্থয্যের উপর উঠিয়া বসিয়া মনুষের