পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৪৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Գe - यछझझमि” পৌধ আমি এখন উচ্চ স্থান হইতে অবতরণ করিলাম ও একটি ক্ষুদ্র ছড়ি হস্তে লইয়া মৃত ব্যস্ত্রকে টুক টুক করিয়া কয়েকটিবার প্রহার করিলাম। বাটতে যাইয়া গল্প করিতে পারিব যে, আমিও ব্যাঘ্র মারিয়াছি। পাঠক আমার কথা শুনিয়া হাসিতেছ ? তোমরা কি গল্পচ্ছলে দিল্লী জয় কর না ? বাঘ মার না ? আমার বীরত্ব দেখিয়া অমরেন্দ্র আপনার ব্যথা ভুলিয়া মুচকি মুচকি হাসিতেছেন। তাহার জখম তাদৃশ গুরুতর হয় নাই তথাপি রক্ত অনর্গল পড়িতেছিল। সত্বর আহত স্থান বন্ধন করা হইল। প্রায় পঞ্চ ক্রোশ পথ যাইতে হইবে। আর বিলম্ব করা হইবে না কাহার কথা না শুনিয়া আবার অশ্বারোহী হইলেন। একজন সওয়ারকে অগ্রে শিকারের সম্বাদ দিবার জন্য কৰ্ত্ত মহাশয়ের নিকট ত্বরিত প্রেরণ করিলেন। রঘুবীরকে একথান পাগড়ি ও রজত বলয় এক যোড়া পুরস্কার দিবার হুকুম হইল। মৃত ব্যাক্সটি হাতীর পৃষ্ঠে বোঝাই হইল। আমাদের অশ্বশ্রেণী ঐনগরাভিমুখে ধাবিত হইল। তিন ক্রোশ আসিয়া রমণা পার হওয়া গেল। জলে জঙ্গলে যে দিকে ঋজু পথ সেইদিকেই অশ্ব চালিত হইতেছে। ঘৰ্ম্মে অশ্ব স্নাত, সেই ঘৰ্ম্মে তাপ উঠিতেছে। অশ্বমুখে লৌহখানিতে ফেণা উঠিতেছে। নাসারন্ধ্র বিস্তার করিয়া লোহিত বর্ণ অশ্বদল দোঁড়িতেছে। সকলের কৌতুকের বিষয় এই যে আমিও আমার ঘোড়ায় বৃহৎ অশ্ব সুনিপুণ আরোহীদের সঠিত সমধাববান হইয়াছি। এখন শান্তিপুর ও শ্রীনগরের মধ্য প্রান্তরে যে ক্ষুদ্র নদী ছুটিতেছিল, তাহার কুলে কৃলে আমরা যাইতেছিলাম ; ছায়াহীন বিস্তৃত শস্তক্ষেত্র মধ্য দিয়া পথ। সূৰ্য্য প্রখর হইয়া উঠিতেছে, বোধ হইল যেন অমরেন্দ্র নাথের ব্যথা বৃদ্ধি হইতেছে, অমর বাবুর মুখঐ কিঞ্চিৎ মলিন বোধ হইতেছে, তিনি আহত শরীরে ক্লান্তি বোধ করিতেছেন, অমরেন্দ্ৰ কহিলেন, “সম্মুখে ঐ নদীর তটে কুটারটি কার?” এক সওয়ার কহিল, "তর্কালঙ্কার মহাশয়ের আবাসভূমি”। অম। আমি তাই ভাবিয়াছিলাম। শ্ৰীনগর এখান হইতে কত দূর ? সওয়ার। প্রায় দুই ক্রোশ। অমর বাবু কহিলেন, “আমি তর্কালঙ্কার মহাশয়ের আশ্রমে একবার আরাম করি । তোমরা সকলে যাও, অপর কোন যান লইয়া আইস । সকলে ষ্ট্রনগরাভিমুখে চলিল কেবল একটি বিশ্বস্ত ভৃত্যসহিত অমরেন্দ্রনাথ তর্কালঙ্কারের গৃহমুখে চলিলেন, গঙ্গাধরও ক্লান্ত হইয়াছেন, সুতরাং র্তাহার সঙ্গী হইলেন। রোজনামচায় নুতন সম্বাদের দিকে আমার সর্বদাই দৃষ্টি। ভাবিলাম সঙ্গে যাই তুই এক নূতন বিষয় দেখিব। নূতন কথা শুনিবই শুনিব ।