পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৬০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেশ হইতে আমদানী জিনিষ কিনিতে হইলে এক্সচেঞ্জ দিতে হয়। এই এক্সচেঞ্জের দরুণ কখন কখন লাভও হয় । লাভই হউক, আর লোকসানই হউক, শতকরা ২৩ টাকার উপর এক্সচেঞ্জ প্রায়ই কখনই দিতে হয় না। কিন্তু আজি কালি শতকরা প্রায় ২২ টাকা এক্সচেঞ্জ দিতে হইতেছে। যদি কোনরূপ এক্সচেঞ্জ না থাকে তবে এক পেণ্ডের জিনিষ এখানে ১০২ টাকায় বিক্রয় হয়। এক পাউণ্ডের রীতিমত দাম ১০ টাকা । ১০ পাউণ্ডের জিনিব ১০০ টাকায় বিক্রয় হয়। কিন্তু এখন ১০ পাউণ্ডের জিনিসের মূল্য ১২২ টাকা হইয়াছে। ইহার দরুণ যে শুদ্ধ যাহারা বিলাতী জিনিস কেনে তাহাদেরই অসুখ হইতেছে তাহা নহে। ভারতবর্ষীয় গবর্ণমেণ্টকে প্রতি বৎসর বিলাতে প্রায় এক কোট পঞ্চাশ লক্ষ পাউণ্ড অথবা পনর কোটা টাকা পাঠাইতে হয়। এখন এই এক্সচেঞ্জ গোলমালের দরুণ প্রায় ৪ কোট টাকা অধিক পাঠাইতে হইতেছে। ইহার দরুণ সমস্ত ভারতবর্ষবাসী প্রজাদিগেরষ্ট কষ্ট হইতেছে। যেখানে ১৫.৬ কোট টাকায় হইত, সেখানে এখন ১০২০ কোটী লাগিতেছে। এরূপ এক্সচেঞ্জ গোলমাল হইবার কারণ কি ? এই প্রশ্নের মীমাংসা করিতে হইলে প্রতিপাদ্য বিষয় দুইভাগে বিভক্ত করিতে হয়। ১ম বিদেশীয় বাণিজ্য হইলেই অল্পবিস্তর এক্সচেঞ্জ কেন দিতে হয় । ২য় আজি কালি সেই এক্সচেঞ্জ এত বেশী কেন হইল ? প্রথম নিয়মমত এক্সচেঞ্জ হইবার কারণ এই যে, যখন দুইটি দেশে বাণিজ্য কার্য্য আরম্ভ হয়, তখন কিছু ক্রয় বিক্রয় নগদ টাকায় হয় না। বাণিজ্য— বিশেষতঃ বিদেশীয় বাণিজ্য ধারেই নির্বাহ হয় । ফ্রান্সের লুইস যখন ইংলণ্ডের হেনেরির নিকট ব্র্যাপ্তি বিক্রয় করিল তখন হেনেরি তাহাকে এক খত লিখিয়া দিল যে উহার দাম ছয় মাস পরে দিব। আবার যখন ইংলণ্ডের জন ফ্রান্সের চার্লসের নিকট কাপড় বিক্রয় করিল তখন চালর্সও পূৰ্ব্বোক্তরূপ খত লিখিয়া দিল। এইরূপ ইংলণ্ডের উপর ফ্রান্সের ও ফ্রান্সের উপর ইংলণ্ডের অনেক খত জমিল। ইংলণ্ডের লোক ফ্রান্সে ঠাক পাঠাইতে হইলে নগদ টাকা না পাঠাইয়া