পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৬২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*}• यक्षभे। [ চৈত্র রসি করিয়া তফাতে ৩৬৫টা বৃক্ষ বৃত্তাকারে শ্রেণীবদ্ধ হইয়া ক্রমান্বয়ে সমদূরবর্তী ভাবে অবস্থিত আছে। একজন অশ্বারোহী পুরুষ প্রত্যেক বৃক্ষের প্রায় ১ রসি করিয়া তফাতে থাকিয়া ১৪টা বৃক্ষের বামপাশ্ব ও ১৪টা বৃক্ষের দক্ষিণ পার্শ্ব অতিক্রম করিয়া যাইতেছে। এইরূপে সেই অশ্বারোহী পুরুষ ২৬ বার পার্শ্ব পরিবর্তন করিয়া পূৰ্ব্বস্থানে আসিল । ঐ অশ্বারোহী পুরুষ যে বয়ে চলিল, সৌরজগতে চন্দ্রের বক্সও ঠিক তাহাই। কিন্তু পৃথিবীর লোকেরা চন্দ্রকে ঠিক বৃত্তাকারে পৃথিবীকে বেষ্টন করিতে দেখিবে । মনে কর ঐ ৩৬৫টা বৃক্ষ আর কিছুই নহে, একটি সচল বৃক্ষের ৩৬৫ দিনের ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান মাত্র ও একটি বৃক্ষই অশ্বারোহী পুরুষকে টানিয়। ঘুরাইতে ঘুরাইতে লইয়া যাইতেছে। তাহা হইলে বৃক্ষের লোক অশ্বারোহীকে কিরূপ অবস্থায় দেখিবে ? তাহার দেখিবে যে অশ্বারোহী তাহাদিগকে বৎসরে ১৩ বার অর্থাৎ ২৮ দিনে একবার প্রদক্ষিণ করিতেছে। সেইরূপ পৃথিবীর লোকেরা চন্দ্রকে নিত্যই ১৫ অংশ ৰুরিয়া পশ্চিম হইতে পূর্বদিকে অগ্রসর হইতে দেখে । এই জন্য চন্দ্রকে শুরু প্রতিপদ হইতে তিথিবৃদ্ধি ক্রমে পনর অংশ করিয়া উপর উপর উদয় হইতে দেখি । এই জন্যই ৪৮ মিনিট করিয়া চন্দ্র দেরি করিয়া উঠেন । চন্দ্রের নিজের কিরণ নাই। সূৰ্য্যকিরণেই ইহার দীপ্তি। পূর্ণিমার সময় পৃথিবী, সূৰ্য্য ও চন্দ্রের মধ্যভাগে পড়ে, এ জন্ত চন্দ্রের পৃথিবীসম্মুখীন পৃষ্ঠটা সমস্তই আমরা উজ্জল দেখিতে পাই । ক্রমে চন্দ্র যত আপন পথে অগ্রসর হইতে থাকে, ততই এ পৃষ্ঠের কিয়দংশ করিয়া রবিকরবিরহিত হইতে থাকে। আমরাও চন্দ্রকে ক্ষীয়মাণ দেখি । অমাবস্তার সময় চন্দ্র, পুথিবী ও সূর্য্যের মধ্যভাগে পড়ে, এ জন্ত চন্দ্রের অপর পৃষ্ঠে সূর্য্যের সমস্ত কিরণ পড়ে আমাদের দিকে কিছুই পড়ে না। এজন্য তখন আমরা চন্দ্রকে এককালীন দেখিতে পাই মা ! কোন কোন পূর্ণিমাতে চন্দ্র, পৃথিবী ও সূৰ্য্য সমসূত্রপাতে অবস্থিত হয় বলিয়া পৃথিবীর করাল ছায়ায় চন্দ্র আবৃত হয় । ইনিই আমাদের রাহু। এই রাহুর গ্রাসে চন্দ্রগ্রহণ হয় । দ্বিতীয় ও তৃতীয়াতে চন্দ্রকে হামুলির মত দেখায় । সূৰ্য্যকরদীপ্ত অংশ আমরা স্পষ্টই দেখিতে পাই, অবশিষ্ট ভাগ আমরা অস্পষ্ট দেখিতে পাই। ইহার কারণ আর কিছুই নহে, ঐ ঐ দিনে পৃথিবীর অধিকাংশ উদ্দীপ্ত অংশ চন্দ্রের দিকে ফিরান থাকে, পৃথিবী হইতে মূৰ্য্যকিরণ প্রতিফলিত হইয়া চন্দ্রকে আলোকিত করে। চন্দ্রের অপেক্ষা পৃথিবী দেখিতে ১ং গুণে বড় । স্বতরাং ইহা বিচিত্র নহে চন্দ্রকিরণে আমরা যেমন আলোকিত হই, পৃথিবীকিরণে চন্দ্র তাঙ্কার তের গুণ উদ্ভাসিত হইবে । কোন কোন জ্যোতির্বিদ বলেন, যে দক্ষিণ আমেরিকার নিবিড় অরণ্যানি সময়ে সময়ে চন্দ্রকে হরিদ্বর্ণ করিয়াছে।