পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৬২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

» Rvt ] চজের বৃত্তান্ত ఆసి তথাপি সূর্য্যের নিকট হইতে চন্দ্রের কিরণগ্রহণ সম্বন্ধে এক আপত্তি এই হইতে পারে যে, চন্দ্রে সূৰ্য্যকিরণের উষ্ণতা কই ? উলাষ্টন্‌ সাহেব পরীক্ষার দ্বারা স্থির করিয়াছেন যে চন্দ্রকর সূৰ্য্যকর অপেক্ষা ৮• • • • • ভাগে হীন। অর্থাৎ ৮• • • • • পূর্ণচন্দ্র একত্র করিলে সূৰ্য্যকিরণের সমান উষ্ণতা ও আলোক উপলব্ধি হইতে পারে। সচরাচর মনুষ্যরক্তের যেরূপ উষ্ণতা চন্দ্রকরের উষ্ণতা তাহা অপেক্ষ বাস্তবিক কম। এজন্য চন্দ্রকে শীতলই বোধ হয় । অনেকে অবগত আছেন যে, সচরাচর জলে কিয়ৎ পরিমাণে তাপাংশ থাকে কিন্তু আমরা তথাপি জলকে কত শীতল বিবেচনা করি ! ! যদি চন্দ্রকিরণে সূর্যাকিরণের কিয়দংশ আছে, তবে চন্দ্রহীন রজনীতে আমরা অধিক শৈত্য অনুভব না করিয়া বরং উষ্ণতা অনুভব করি কেন ? তাহার উত্তর এই, যে প্রত্যহই ক্ষিতিতল হইতে বাষ্পরাশি সমুদগত হইয় গগনের অত্যুচ্চ প্রদেশে তরল মেঘমালার স্মৃষ্টি করে। তাহা এত পাতলা যে, আমাদেব নেত্রগোচর হয় না, কিন্তু সেই দিবাকালীন সঞ্চিত মেঘস্তরের অস্তিত্ব আমরা রাত্রে ফলদ্বারা জানিতে পারি। মেঘ কিয়ৎপরিমাণে অপরিচালক । সূৰ্য্যাস্তেব পর পৃথিবীব সঞ্চিত তাপরাশি অন্তরীক্ষে অপস্থত হইতে চেষ্টা পায়। কিন্তু উপরোক্ত মেঘ সকল প্রতিনিয়তই সেই উত্তাপাগমের প্রতিবন্ধক হয়। সার জন হাসেল বলেন, পূর্ণিমার রাত্রে চন্দ্রকিবণে সেই মেঘ সকলের অপনয়ন হয়, কিন্তু অমাবস্তার রাত্রে তাহা হইতে,পায় না এ জন্য আমরা পূর্ণিমা অপেক্ষায় অমাবস্তাতে উষ্ণতা অনুভব করি। পূর্ণিমার রাত্রে পৃথিবীত্যক্ত উত্তাপ অবাধে অন্তরীক্ষে প্রসারিত হইয়া পড়ে, আমরা তজ্জন্ত শৈত্য অনুভব করি। অমাবস্যার রাত্রে আমরা পৃথিবীর তাপেই তপ্ত থাকি। চন্দ্রের সংস্কৃত নাম শীতরশ্মি, বা হিমাংশু, কিন্তু তাহার কারণ যে চন্দ্রে বরফ মাখান আছে তাহা নহে । এক্ষণে চন্দ্রকিরণ সম্বন্ধে আর এক আপত্তির নিরাস করিতে আমাদের বাকি আছে। কেহ কেহ বলিতে পারেন, যে চন্দ্রের সর্বগ্রাসের সময় পৃথিবীর মূর্ধ্যবিরহিত অংশই চন্দ্রের দিক্‌স্থ থাকে, কিন্তু তথাপি সে সময়েও চন্দ্রের স্থানে স্থানে অস্পষ্ট আলোক দৃষ্ট হয় কেন ? তাহার কারণ নির্ণয় বিষয়ে জ্যোতির্বিাদিগের আজিও মতভেদ আছে। যাহারা চন্দ্রে রাহুর অস্তিৰ স্বীকার করেন, উাহারা বলেন যে পৃথিবীর পশ্চাদিকস্থ স্বৰ্য্যকিরণ চন্দ্রের সীমাগত বায়ুরাশিতে তিৰ্য্যগ্ৰগতি ( refraction ) ; প্রাপ্ত হইয়া অল্পপরিমাণে চন্দ্রপৃষ্ঠকে আলোকিত করে। আবার কেহ কেহ বলেন যে চন্দ্রের ধাতুময় পাহাড় সকলের অনেকগুলি দীপক প্রকৃতিক (phosphorescent ) ; তজ্জন্ত সৰ্ব্বগ্রাস সময়ে পূৰ্ব্বসঞ্চিত কিরণরাশির এককালে অপনয়ন হয় না। আমরাও গ্রহণের কিছু পর পর্যন্তও চজকে অপরিস্ফুট দেখি ।