পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

boo बछलश्चfञ [४चार्छ অপমানে, আত্মতিরস্কাবে হৃদয় উদ্বেলিত হইল ; তখন তিনি কাদিয়া পলাইয়া গেলেন। কাহাকেও কিছু বলিলেন না। আর কোন রমণী দেবেন্দ্রের নিকট আনীত হইতে হয়তো সম্মত হইত না । কিন্তু সরলা কুন্দ কিছুই জানেন না, তিনি জড়ের মত আনীত হইলেন ; আনীত হইয়া আত্মপরিচয় দিয়া পলাইয়া গেলেন। সবলা, ভাবময়ী কুন্দকে লইয়া কি কোন ক্রীড়া চলে ? তাহার ভাবপূর্ণ জড়প্রায় ব্যবহার ক্রীড়াব অতীত । ইহার পর হরিদাসী বৈষ্ণবীব অভিনয় । নগেন্দ্রের অন্তঃপুরে হরিদাসী গাইতে আসিলে, শ্রোত্রীগণ নানাবিধ ফবমায়েস আবম্ভ করিলেন। বৈষ্ণবী সকলের হুকুম শুনিয়া কুন্দেব প্রতি বিন্দুদামতুল্য এক কটাক্ষ করিয়া কহিল – “হ গা তুমি কিছু ফরমাশ করিলে না ?” “কুন্দ তখন লজ্জাবনতমুখী হইয়া অল্প একটু হাসিল, কিছু উত্তর করিল না । কিন্তু তখনই একজন বয়স্তাব কাণে কাণে কহিল, কীৰ্ত্তন গায়িতে বল না ?” এতক্ষণ সবাই নানাবিধ ফবমাস কবিয়াছিল, কিন্তু কুন্দ চুপ করিয়াছিল। বিশেষকপে অনুরুদ্ধ হইলে কুন্দ আনন্দে একটু হাসিল ; কিন্তু তা বলিয়া ধৃষ্টতা দেখাইয়া উদ্ভব কবিবার লোক তিনি নহেন। তিনি এখন পুর্ণযৌবনা, বয়স ষোড়শেরও অধিক । যুবতাব কি এই ব্যবহার ? যৌবনের সে চঞ্চলতা ও অধীরভা কোথায় ? কুন্দের ইচ্ছ। মনে মনেই বিলান হইতেছিল । অপরে সে ইচ্ছা জানিতে চাঙ্গিলে তিনি সাহস ভরে তাহা উচ্চরবে প্রকাশ করিতেও পারেন নাচ । একজন বয়স্তার কাণে কাণে বলিয়া স্থির হইয়া বসিয়া রছিলেন । বঙ্কিমবাবুর এই চিত্রটি কেমন স্বভাবানুরূপ, কেমন সংক্ষেপে মুন্দর ও অর্থপূর্ণ ইত কুন্দনন্দিনীর যথাযথই চিত্র বটে। কুন্দনন্দিনীর এই প্রকৃতি বিশেষ সুস্পষ্ট দেখাইবার জন্যই তিনি নানাবিধ রমণীমণ্ডলে তাহাকে আনিলেন পরে বহুবিধ রমণীগণের সহিত তাহার প্রভেদ কি, তাহা কবির একটি মাত্র সুন্দর চিত্ৰলেখায় সমুদায় প্রকাশিত করিয়া দিলেন । এতক্ষণ আমরা কুন্দনন্দিনীর প্রকৃতি বিশেষেরই পৰ্য্যালোচনা করিতেছি। দেখিলাম সরলতা ও বালিকার্লেভ আচঞ্চলত, ভীরুতা, ও মৃত্তাহেতু নিশ্চেষ্টতা, বিচিত্রভাবে তাহার রমণীপ্রকৃতিতে মিশিয়াছে । মিশিয়া এক অসামান্ত বিচিত্র রমণীকে প্রদর্শন করিল। এ প্রকৃতির রমণী কেবল বঙ্গধামেই পাওয়া যায় । বঙ্গরমণীর এই প্রকৃতিবিশেষের ব্যবধানে কিরূপ কোমল হৃদয় লুকায়িত থাকে তাহা বঙ্কিমবাবু এখনও প্রকাশিত করেন নাই। তিনি প্রথমে বাহরেখায় এই বিচিত্র রমণীর ছায়াপাত মাত্র করিলেন ; এই ছায়াপাতেই চেল গেল কুনম্বিনী