পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૩૨, ૬ ] ब्रून्मन्बिभैौ a ফুটিয়াছে, যেন চুম্বনের জন্য তোমাকে আহবান করিতেছে। অবগুণ্ঠন বিমুক্ত সেই রূপমাধুরী দেখিয়া যেমন মোহিত ও আশ্চৰ্য্য হইতে হয়, কুন্দনন্দিনীর হৃদয় নীরবতার আবরণ বিমুক্ত হইয়া যখন প্রকাশিত হইয়া পড়ে, আমরা তদ্রুপ মোহিত ও আশ্চৰ্য্য হই । আমরা এই আবরণ ভেদ করিয়া তাহার হৃদয় দেখিবার জন্য বরাবর তাহাকে অনুসরণ করিয়াছি। সেই ত্রয়োদশ বর্ষীয়া বালিকা যখন মুম্ষুদ্ৰ পিতার শিয়রে বসিয়া ছল ছল করিয়া চাহিয়া আছেন, ভাবিতেও পারেন না যে তাহার পিতার মৃত্যু সন্নিকট, কেন না তাহা হইলে তিনি একেবারে নিরাশ্রয়া হইবেন, মৃত্যু অঙ্কে তাহাকে শায়িত দেখিয়া ভাবিতেছেন, তিনি বুঝি আবার নিদ্রাভিভূত হইলেন ; পৃথিবীর ভাবগতিক কিছুই জানেন না। তখনকার এই সরলতা দেখিয়া ভাবিলাম, ইহা বুঝি তাহার বালস্বভাবের অনভিজ্ঞতা মাত্র। কারণ, এই তাহার প্রথম পরিচয় । তৎপরে যখন চাপা কুন্দকে সঙ্গে করিয়া নগেন্দ্রের দিকে লইয়া যাইতেছেন, “আসিতে আসিতে দুব হইতে তখন নগেন্দ্রকে দেখিয়া, কুন্দ অকস্মাৎ স্তম্ভিতের ন্যায় দাড়াইল । তাহার আর পী সরিল না। সে বিস্ময়োৎফুল্ল লোচনে বিমূঢ়াব ন্যায় নগেন্দ্রের প্রতি চাহিয়া রহিল।" “দেখিল যাহাকে স্বপ্নে দেখিয়াছেন, নগেন্দ্র ঠিক সেই মূৰ্ত্তি। তখন তাহাকে ভয়বিহ্বল ও সপ্তচিন্তা দেখিয়া নগেন্দ্র কুন্দকে অনেক বুঝাইয়া বলিলেন। কুন্দ কোন উত্তর কবিতে পারিল না ; কেবল বিস্ময়বিস্ফাবিত লোচনে নগেন্দ্রের প্রতি চাহিয়া রহিলেন " তৎপরে তাহার অমুগমনে কলিকাতায় যাইলেন। এই নিরীহ, অশক্ত, সবল বালিকা যখন স্নেহময়ী কমলের নিকট লেখা পড়া শিখেন তখন তিনি লেখা পড়া সুন্দর শিখিতে পারেন, “কিন্তু অন্ত কোন কথাই বুঝেন না। বলিলে, বৃহৎ, নীল, দুইটি চক্ষু—চক্ষু দুইটি শরতের পদ্মের মত ‘ সৰ্ব্বদাই স্বচ্ছ জলে ভাসিতেছে—সেই দুইটা চক্ষু নগেন্দ্রের মুখের উপর স্থাপিত কবিয়া চাহিয়া থাকে কিছুই বলে না—নগেন্দ্র সে চক্ষু দেখিতে দেখিতে অন্যমনস্ক হন।" সে চক্ষের প্রভাব নগেন্দ্র কেন, অন্ত লোকেও বিলক্ষণ অনুভব করিত। সে দৃষ্টির সরলতা, অর্থপূর্ণতা, নিরাশ্লয়ের ভাবব্যঞ্জকতা, সূৰ্য্যমুখীও সহস্ৰবাক্যে । তত মুন্দর প্রকাশ করিতে পারিতেন না। তারাচরণ যখন এই কুন্দনন্দিনীকে সাজাইয়া আনিয়া দেবেন্দ্রের সঙ্গে আলাপ করিয়া দিলেন ; “কুন্দ তখন দেবেন্দ্রের সঙ্গে কি আলাপ করিলেন ? ক্ষণকাল ঘোমটা দিয়া দাড়াইয়া থাকিয়া কাদিয়া পলাইয়া গেলেন ।” তাহাব এই ব্যবহার সকলই নীরব, অথচ কত দূর ভাবব্যঞ্জক। প্রথমে তিনি থতমত খাইয়া অপ্রস্তুত হইয়া লজ্জায় ঘোমটা দিলেন, অনন্তৰু কি করিবেন কিছুই জানেন না বলিয়া ক্ষণিক স্তম্ভিতভাবে দাড়াইয় রছিলেন। দাড়াইয়। কি ভাবিলেন। অবশেষে একদা লজ্জায়,