পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

se “ তৃতীয় সংখ্যা । ] শৈল কহিল, “ন ভাই, তুমি উঠিয়ে না, লার একটু ঘুমাও-নিশ্চয় তোমার শরীর ভাল নাই । তোমার মুখ বড় শুক্নে৷ দেখাইতেছে, চোখের নীচে কালী পড়িয়৷ গেছে । কি হইয়াছে ভাই আমাকে বল না !”—বলিয়া শৈলজ। কমলার পাশে বসিয়া তাহার গলা জড়াইয়া ধরিল। কমলার বুক ফুলিয়া উঠিতে লাগিল— তাহার অশ্রু আর বাধা মানে না ! শৈলজার কাধের উপর মুখ লুকাইয় তাহার কান্না একেবারে ফাটিয়া ৰাছির হইল । শৈল একটি কথাও না বলিয়। তাছাকে দৃঢ় করিয়া আলিগন করিয়া ধরিল। একটু পরেই কমলা তাড়াতাড়ি শৈলজার বহিৰন্ধন ছাড়াইয়া উঠিয়া পড়িল—চোখ মুছিয়া-ফেলিয়া জোর করিয়া হাসিতে লাগিল । শৈল কহিল, “নাও নাও, আর হাসিতে হইলে না ! ঢেরঢের মেয়ে দেখিয়াছি, তোমার মত এমন চাপা মেয়ে আমি দেথি নাই। কিন্তু তুমি মনে করিতেছ আমার কাছে লুকাইবে আমাকে তেমন হাবা পাও নাই ! তবে বলিব ? রমেশবাবু এলাহাবাদে গিয়া অবধি তোমাকে একখানি চিঠি লেখেন নি-- তাই রাগ হইয়াছে—অভিমানিনী ! কিন্তু তোমারে বোঝা উচিত, তিনি সেখানে কাজে গিয়াছেন, ছদিন বাদেই আসিবেন— ইহার মধ্যে যদি সময় করিয়া উঠিতে না পারেন, তাই বলিয়া কি অত রাগ করিতে আছে ! ছি:! তাও বলি ভাই, তোমাকে আজ এত উপদেশ দিতেছি—আমি হইলেও ঠিক ঐ কাওটি করিয়াল্পদিতাম। ভূমি যদি তখন আমাকে বুঝাইতে আসিতে, আমি কি নৌকাডুবি | .* 56. বুঝিতাম মনে কর ? এমন মিছিমিছি কাল্প মেয়েমানুষকে অনেক কাদিতে হয় ! আবার এই কাল্লা ঘুচিয়া-গিয়া যখন হাসি ফুটিয়া উঠিবে, তখন কিছুই মনে থাকিবে না ।” এই বলিয়া কমলাকে বুকের কাছে টানিয়ালুইয়া শৈল কহিল—“আজ তুমি মনে করিতেছ, রমেশবাবুকে আর কখনো তুমি মাপ করিবে না তাই না ? আচ্ছা সত্যি बल !” 彎 কমলা কহিল—“হ, সত্যিই বলিতেছি।” শৈল কমলার গালে করতলের আঘাত করিয়া কহিল—“ইস্ ! তাই বই কি ! দেখা বাইবে । আচ্ছা বাজি রাখে৷ ” 够 এই কান্না এবং হাসি, এই য়াগ করা: এবং ক্ষমা করা, দাম্পত্যপ্রেমের এই যে তরঙ্গলীলায়িত স্রোতের খেল—ইহারি একটি ছায়ালোকখচিত মৃদুরবিস্তৃত শাস্তিময় নিভৃত সুখের ছবি, শৈলজার কথার মুহূর্তের মধ্যে কমলার মনের মধ্যে ফুটিয়া উঠিল এবং তাহার হৃদয় বিদীর্ণ করিয়া একটা দীর্ঘনিশ্বাস উচ্ছসিত হইল । শৈল অমনি চিবুক ধরিয়া কমলার মুখ তুলিয়া ধরিল। কহিল, “একেই বলে বাড়াবাড়ি । অতটা ভাল নয় ভাই- তুই আমাকেও ছাড়াইয়া উঠিয়াছিস্ ! আমার অভিমানের • এত জোর •নাই । অমন করিয়া কি নিশ্বাস ফেলিতে আছে-গুৰু চোখের, জলের উপর দিয়া যায়, সেই ভাল!” 叠 আজ শৈলজার ঘরে বিশেষ একটা উৎসৰ ছিল । আজ তাহাদের বিবাহের সাংরৎসরিক পৰ্ব্ব । এই পৰ্ব্বপালন বিপিনের একটা বিশেষ