পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় সংখ্যা। ] প্রার্থনা । - • లిd . দিগকে নিজের অন্তগুঢ় ইচ্ছাটিকে জানিবার সহায়তা করেন। আমরা চিরকাল মনে করিয়া আসিতেছি, আমরা বুঝি পেট ভরাইপ্তেই চাই, আরাম করিতেই চাই—কিন্তু যখন দেখি, কেহ ধন-মান-আরামকে উপেক্ষ कद्रव সত্য, আলোক ও অমৃতের জন্ত জাবন উৎসর্গ করিতেছেন, তখন হঠাৎ একরকম করিয়া বুঝিতে পারি যে, আমার অন্তরাত্মার মধ্যে যে ইচ্ছা আমার অগোচরে কাজ করিতেছে, তাহাকেই তিনি র্তাহার জীবনের মধ্যে উপলব্ধি করিয়াছেন। আমার ইচ্ছাকে, যখন র্তাহার মধ্যে প্রত্যক্ষ দেখিতে পাই, তখন অস্তত ক্ষণকালের জন্ত ও জানিতে পারি---কিসের প্রতি আমার যথার্থ ভক্তি, কি আমার অন্তরের আকাজক্ষা ! তখন আরো একটা কথা বোঝা যায়। ইহ বুঝিতে পারি যে, যে সমস্ত ইচ্ছা প্রতিক্ষণে আমার স্বগোচর, যাহার কেবলি আমাকে তাড়ন করে, তাহারাই আমার অস্তুরতম ইচ্ছাকে, আমার সার্থকতালাভের প্রার্থনাকে বাধা দিতেছে, ফুৰ্ত্তি দিতেছে না, তাহাকে কেবলি আমার চেতনার অন্তরালবৰ্ত্তা, আমার চেষ্টার বহির্গত করিয়া রাখিয়াছে। আর, যাহার কথা বলিতেছি, তাহার পক্ষে ঠিক ইহার বিপরীত। যে মঙ্গল-ইচ্ছ, যে সার্থকতার ইচ্ছা বিশ্বমানবের মজ্জাস্বরূপ, যাহা মানবসমাজের মধ্যে চিরদিনই অকথিত ৰাণীতে এই মন্ত্র গান করিতেছে—আসতে মা সদগময়, তমস্ত্ৰো মা জ্যোতিৰ্গময়, মূত্যোর্মাস্বতংগম-এই ইচ্ছা তাহার কাছে সৰ্ব্বা, পেক্ষা প্রত্যক্ষ, আর সমস্ত ইচ্ছ। ছায়ার মুত তাহার পশ্চাদ্বত্তা, তাহার পদতলগত। তিনি জানেন—সত্য, আলোক, অমৃতই চাই, মামুষের ইহা না হইলেই নয়—অল্পবৃত্নধনমানকে তিনি ক্ষণিক ও অংিশিক আৰশুক বলিয়াই জানেন । বিশ্বমানবের অস্তর্নিহিত এই ইচ্ছাশক্তি র্তাহার ভিতর দিয়া জগতে প্রত্যক্ষ হয় বলিয়া, প্রমাণিত হয় বলিয়াই তিনি চিরকালের জন্ত মানবের সামগ্ৰী হইয়৷ উঠেন। আর আমরা থুই-পরি, টাকা করি, নাম করি, মরি ও পুড়িয়া ছাই হইয়৷ যাই—মানবের চিরন্তন সত্য ইচ্ছাকে আমাদের যে জীবনের মধ্যে প্রতিফলিত করিতে পারি না, মানবসমাজে সে জীবনের ক্ষণিক মুল্য ক্ষণকালের মধ্যেই নিঃশেষ হইয়া যায়। কিন্তু মহাপুরুষদের দৃষ্টান্ত আনিলে একটা ভুল বুঝিবার সম্ভাবনা থাকে। মনে হইতে পারে যে, ক্ষমতাসাধ্য, প্রতিভাসাধ্য কৰ্ম্মের দ্বারাতেই বুঝি মানুষ সত্য, আলোকও অমৃতানুসন্ধানের পরিচয় দেয়। তাহা কোনোমতেই নহে । তাহা যদি হইত, তবে পৃথিবীর অধিকাংশ লোক অমৃতের আশামাত্র করিতে পারিত না । যাহ। সাধারণ বুদ্ধিবল-বাহুবলের পক্ষে দুঃসাধ্য, তাহাতেই প্রতিভা বা অসামান্ত শারীরিক শক্তির প্রয়োজন, কিন্তু সত্যকে অবলম্বন করা, আলোককে গ্রহণ করা, অমৃতকে বরণ করিঙ্গ লওয়া, ইহা কেবল একান্তভাবে, যথার্থভাগ্য ইচ্ছার কৰ্ম্ম । ইহা অার-কিছু নয়—যাহা কাছেই আছে, তাহাকেই *ig || ইহ মনে রাখিতে হইবে, আমাদিগকে যাহা-কিছু দিবার, তাহ আমাদের প্রার্থনার