পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/১৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

2ԳՎ, ব্যগ্র হইয়া পড়িয়াছে—এমন স্থলে পলায়ন ছাড়া সে কোনো উপায় খুজিয়া পাইল না । 釁 ছাদের উপরে উঠিলেওরমেশের রুদ্ধদ্বার পরিত্যক্ত বাসা, নুতন অন্ধ যেমন করিয়া আকাশের আলোর দিকে তাকায়, তেমনি করিয়া শূন্তদৃষ্টিতে হেমনলিনীর দিকে যেন তাকাইয়া থাকিত—আমনি সেই মুহূৰ্ত্তেই তাহার কাছে সমস্ত আকাশ, সমস্ত আলোক বিবর্ণ হইয়া যাইত—মুথের উপরে অঞ্চল ঢাকিয়৷ সে বসিয়া পড়িত—বলিত, “হে ঈশ্বর, আমি আর পারিতেছি না।” দুঃখের কারণ ও ইতিবৃত্ত যদি অস্পষ্ট থাকে, তবে দুঃখের ভিতরেও যেটুকু আশ্রয় পাওয়া যাইতে পারে, মানুষ তাহা হইতেও বঞ্চিত হয়। হেমনলিনী আপন আকস্মিক দুঃখঘটনার আগাগোড়া কিছুই জানে না— মন নানারকম কল্পনা করিতে যায়, মনকে সে জোর করিয়া প্রতিনিবৃত্ত করে ;– রমেশকে অপরাধী করিবার জন্ত তর্ক মাথ৷ তুলিয়া উঠিতে চায়—বারংবার সেই উষ্ঠত তর্ককে সে দলন করিয়া ফেলে। এইরূপে, নিজের দুঃখের কাছে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করিবার অবকাশ সে পাইতেছে না। বাহিরে অদৃষ্টের কাছ হইতে এবং অস্তরে আপন চিস্তার কাছ হইতে কেবলি তাহাকে লুকাইয়া লুকাইয়া ৰেড়াইতে হইতেছে। এইরূপে এস্ত হরিণীর মত হেমনলিনী যখন পলায়নপরা হইয়া ছিল, उषन अब्रनবাবুও তাহার নাগাল পাইতেছিলেন না । হেমনলিনীর সঙ্কোচশীল প্রকৃতি র্তাহার জানা ছিল--এইজন্য বন্ধুবান্ধবের সহায় বঙ্গদর্শন । [ ৪র্থ বর্ষ, শ্রাবণ । ভূতির মুষলধারাবর্ষণ ঠেকাইবার ভার তিনিই লইয়াছিলেন । এদিকে র্তাহার মন কক্সার ক্ষতবেদনার উপর স্নেহমুধা ঢালিবার জন্ত উদ্বিগ্ন হইয়া আছে, কিন্তু নিরালায় তাহাকে কাছে পাইবার সময় করিয়া উঠিতে পারেন না। আত্মীয়তাভিমানীরা একেবারে হেমনলিনীর কাছে গিয়া পড়িতে চায়, অন্নদা তাহাদিগকে নানা উপায়ে আকর্ষণ করিয়া রাখিবার জন্ত সৰ্ব্বদা সতর্ক হইয়া বসিয়া আছেন । অল্পদ স্বভাবত কৌশলী মানুষ নহেন –তিনি যেটাকে সুচতুয় কায়দা বলিয়া নিজের মনে বাহাদুরা লইতেন, অন্তের কাছে তাস্থায় কিছুই অস্পষ্ট থাকিত না। সকলেই বুঝিতে পারিল, হেমনলিনীর সহিত সাক্ষাংকারে অন্নদা বাধা দিতেছেন—ইহাতে লোকে রাগ করিতে লাগিল এবং রহস্ত বাড়িয়াউঠিয়া নানাবিধ নিষ্ঠুর অমূলক অপবাদে পল্লবিত হইতে থাকিল । এইরূপে গোলেমালে কিছুকাল কাটিয়া গেল। যখন হেমনলিনীর দিকে একটুখানি মনোযোগ দিবার অবকাশ ঘটিল, তখন একদিন অপরাষ্ট্রে, অনেককাল পরে হেমনলিনীর সহিত একত্রে মিভূতে চা খাইবার প্রত্যাশায় অল্পদাবাৰু তাহাকে সন্ধান করিবার জন্ত দোতলায় আসিলেন— দোতলায় বসিবার ঘরে তাহাকে খুজিয়া পাইলেন না, গুইবার ঘরেও সে নাই। বেহারাকে জিজ্ঞাসা করিয়া জানিলেন, হেমনলিনী বাহিরে কোথাও যায় নাই। তখন অত্যন্ত উৎকণ্ঠিত হইয়া অল্পদ ছাদের উপরে উঠিলেন, இ •

  • তখন কলিকাতা-সহরের নানা আকার