পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/৩১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ সংখ্যা । এদেশে সঞ্চিত রহিয়াছে। এই পূর্ণ শীতের সময়ে, আমাদের গ্রীষ্মশেষের শোভাসৌন্দর্য্য এখানে সম্ভোগ করিতেছি ... আমি ষে ভারতবর্ষে আছি, এই জ্ঞানটি আমার অস্তরের অন্তস্তলে জাগরূক থাকিলেও, যখনি আমি এখানকার কোন অনাদৃত জনবিরল স্থানে আসিয়া উপস্থিত হই, তখনি একপ্রকার মধুর স্মিয়সহকারে, জন্মভূমিসম্বন্ধীয় িবিধ বিভ্রমের চস্তে আপনাকে छ्iफुिग्नां मिझे । এই সকল ছোট-ছোট শাদ। প্রাচীর, চামেলি-লতা, হলদে-রং-ধরা ঘাস, শরৎঋতুসুলভ বিচিত্র রং—এই সবে স্বদেশকে স্মরণ হইয়া, মন ব্যাকুল হইয়া উঠে। তখন CHĘ Aunis,—criē La Saintongc-g মাঠ-ময়দান, আঙর পাকিবার সময়ে, সেই কনকোজ্জল-ঋতুকালীন Plcron-দ্বীপের সেই শান্তিময় বাড়াগুলি, আমার মনে পড়ে । . কিন্তু আবার, মধ্যে মধ্যে অনেক ছোটোখাটাে জিনিষ পথিমধ্যে উপস্থিত হইয়৷ আমার এই স্বপ্নের ব্যাঘাত করে । ঐ দেখ, ছয়বৎসরবয়স্ক একটি ছোট বালিকা, আমাকে একটা সংবাদ দিবার জন্ত, নিজগ্রাম হইতে প্রেরিত হইয়া এইখানে আসিয়াছে। ইহার কালো রহস্তময় চোখদুটি দীর্ঘায়ত ; ইহার নাক ফুড়িয়া চুনি-বুদানো একটি সোনার মাকৃড়ি আছে ; চুনিগুলি দেখিতে শোণিতবিন্দুর দ্যায় । 彎 দূরে, আমাদের বাড়ীর সংলগ্ন শান্তিময় প্রকৃতিক দৃশুটিকে উদ্বেজিত করিয়া কিএকটা অদ্ভূতু জিনিষ গাছের মধ্য হইত্ত্বে বাহির হইছে –ব্রাহ্মণক দেখালয়ের ইংরাজবর্জিত ভারতবর্ষ। ○>> একটি কোণ,—দেৰতা ও রাক্ষসাদির মন্দিরস্থ একটি কোণ । মন্দিরটি বিষ্ণুদেধের— গাছপালায় ঢাকা পড়িয়াছে। 飘 তরুগণের ছায়াসত্ত্বেও, মধ্যাঞ্জের স্বৰ্য্য আমাদের এই শাদা বাড়াটির উপর বাস্তবিকই একটু অতিরিক্ত-পরিমাণে আলোক ও উত্তাপ বর্ষণ করিভেছে। ছোট-ছোট ফল বাগানের উপর, অবসাদ-মিয়মাণ তৃণভূমির উপর আলো পড়িয়াছে—খুব উজ্জল আলো পড়িয়াছে। আমাদের সেপ্টেম্বরমাসের দীপ্ততম মধ্যাহুও এখানে হার মানে । চারিদিকই নিস্তব্ধ । মেঠে-ঘাসের পথে আর কোন পথিক নাই । বড়-বড় হাতপাখাগুলা এখন ঘুমাইতেছে ; যে সকল ভারতীয় ভূত্য ঐ সকল পাথা ব্যজন করিয়া থাকে, তাহারাও ঘুমাইতেছে । সব চুপচাপ। কোথাও টু শব্দ নাই । কেবল কতকগুলা দাড়কাক—যাকাদের দিবানিদ্রা নিষিদ্ধ—তাহারাই আমার কাম্রায় প্রবেশ করিয়া আমার চারিদিকে ক-ক-শব্দ করিতেছে। এই সকল নিম্পন্দ পদার্থের মধ্যে, উহাদেরি নাচুনি-চালের পদশক এবং উড়িবার পক্ষসঞ্চালনশব্দ ভিন্ন আর কিছুই শোনা पभ्रं नl t... হঠাৎ মনে পড়িল—খৃষ্টজন্মোৎসবের দিন আসন্ন ; আমনি এখানকার এই চিরনিৰ্ম্মল আকাশ-চিরগ্রীষ্মঋতু আমার কল্পনার উপর যেন ঘনঘোর বিষাদ ঢালিয়া দিল । এইবার একে-একে আমার যাত্রার গাড়িদুটি আসিয়া পৌছিল। এখান হইতে ত্ৰিবন্ধুরে যাইতে প্রায় দুইদিন লাগিবে।