পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/৩২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩১৬ ' rবঙ্গদশন । | ৪র্থ বর্ষ, আশ্বিল । গৌরব নছে ; আমরা সেই ঐশ্বৰ্য্য বিস্তার করিতেছি, ইহাই যখন সমাজের সর্বত্র আমরা উপলব্ধি করি, তখনি নিজের প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা সঞ্জাত হইয়া আমাদের মোহ ছুটিতে থাকিৰে । আমাদের এই নিক্রিয় নিশ্চেষ্ট অবস্থা কেন ঘটিয়াছে, আমার প্রবন্ধে তাহার কারণ দেখাইয়াছি। তাহার কারণ ভীরুতা। আমাদের যাহা-কিছু ছিল, তাহারই মধ্যে কুঞ্চিত হইয়া থাকিবীর চেষ্টাই বিদেশীসভ্যতার আঘাতে আমাদের অভিভূত হইবার কারণ | কিন্তু প্রথমে যাহা আমাদিগকে অভিভূত করিয়াছিল, তাহাই আমাদিগকে জাগ্রত করিতেছে । প্রথম সুপ্তিভঙ্গে যে প্রখর আলোক চোখে ধাধা লাগাইয়া দেয়, তাহাই ক্রমশ আমাদের দৃষ্টিশক্তির সহায়তা করে । এখন আমরা সজাগভাবে, সজ্ঞানভাবে নিজের দেশের আদর্শকে উপলব্ধি করিতে প্রবৃত্ত হইয়াছি। বিদেশী আক্রমণের বিরুদ্ধে নিজের দেশের গৌরবকে বৃহৎভাবে, প্রত্যক্ষভাবে দেখিতেছি । এখন এই অাদর্শকে কি করিয়া বাচানে। যাইবে, সেই ব্যাকুলত নানাপন্থামুসন্ধানে আমাদিগকে প্রবৃত্ত করিতেছে । যেমন আছি, ঠিক তেমনি বসিয়া থাকিলেই যদি সমস্ত রক্ষা পাইত, তবে প্রতিদিন পদে পদে আমাদের এমন দুৰ্গতি ঘটিত না । , আমি যে ভাষার ছটায় মুগ্ধ করিয়া তলে তলে হিন্দুসমাজকে একাকার-করিয়া দিবায় মৎলব মনে মনে আঁটিয়াছি, বঙ্গবাসীর কোনো'কোনো লেখক এরূপ আশঙ্কা মুহুভব করিয়াছেন। আমার বুদ্ধিশক্তির “প্রতি । তাহার যতদূর গভীর অনাস্থা, আশা করি, অন্ত দশজনের ততদুর না থাকতে পারে। আমার এই ক্ষীণহস্তে কি ভৈরবের সেই পিনাক আছে ? প্রবন্ধ লিথিয়া আমি ভারতবর্ষ একাকার করি ত্ৰ ! যদি এমন মৎলবহ আমার থাকিবে, তবে আমার কথার প্রতিবাদেরই বা চেষ্টা কেন ? কোনো বালক যদি নৃত্য করে, তবে তাহfর মনে মনে ভূমিকম্পন্সষ্টির মতলব আছে শঙ্কা করিয়া কেহ কি গৃহস্তদিগকে সাবধান করিয়া দিবার চেষ্টা করে ? ব্যবস্তাবুদ্ধির দ্বারা ভারতবর্ষ বিচিত্রের মধ্যে ঐক্যস্থাপন করে, এ কথার অর্থ ইহা হইতেই পারে না, ভারতবর্ষ ষ্টাম্রোলা বুলাইয়া সমস্ত বৈচিত্র্যকে সমভূম, সমতল করিয়া দেয় । বিলাত পরকে বিনাশ করাই, পরকে দূর করাই আত্মরক্ষার উপায় বলিয়৷ জানে, ভারতবর্ষ পরকে আপন করাই আত্মসার্থকতা বলিয়া জানে। এই বিচিত্রকে এক করা, পরকে আপন করা যে একাকার করা নহে, পরস্তু পরস্পরের অধিকার স্বম্পষ্টরূপে নির্দিষ্ট করিয়া দেওয়া, এ কথা কি আমাদের দেশে ও চীৎকার করিয়া বলিতে হইবে ? আজ যদি বিচিত্রের মধ্যে ঐক্যস্থাপন করিতে, পরত্বে আপন করিতে ম৷ পারি—আমরাও যদি পদশব্দটি শুনিলেই, • অতিথি-অভ্যাগত দেখিলেই অমনি হাৰ্হাঃশব্দে লাঠি হাতে করিয়া ছুটিয়া যাই, তবে বুঝিব, পাপের ফলে আমাদের সমাজের লক্ষ্মী অামা .দিগকে পরিত্যাগ করিতেছেন এবং এই লক্ষ্মীছাড়া অরক্ষিত ভিটাকে আজ লিঙ্গুত