পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/৩৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ সংখ্যা । ] ৗকাডুবি! లచ్చిత ভাল হয়। . আর, আমার মনে হয়, আপনি সেই যে শিকড়ের রসটা আমাকে পরীক্ষার সময় দিয়াছিলেন, সেটা আশ্চৰ্য্য বলকারক ! যে কোনো লোক সৰ্ব্বদা মনকে খাটাইতেছে, তাহার পক্ষে এমন মহৌষধ আর নাই। আপনি যদি একবার নলিনাক্ষ বাবুকে— যোগেঞ্জ একেবারে চৌকি ছাড়ির উঠিয়াপড়িয়া কহিল—“আঃ, অক্ষয়, তুমি জালাইলে! বড় বাড়াবাড়ি করিতেছ ! আমি চলিলাম ! 86. অপরাচুের দিকে দোতলায় বসিবার ঘরে অন্নদাবাবু একটা কেদারার উপরে ঘুমাইয়া পড়িয়াছেন—পাশে একটি ছোট চৌকিতে বসিয়া হেমনলিনী তাহার পিতার জন্ত নুতন বালিশের ওয়াড় তৈরি করিতেছে । মাঝে মাঝে এক একবার উদ্বিগ্নচিত্তে নিদ্রিত অন্নদাবাবুর মুখের দিকে চাহিয়া দেখিতেছে । খেলা জান্‌লা দিয়া তাহার মুখের উপর বে আলো আসিয়া পড়িয়াছে, সেই আলোতে জাজ অল্পদাৰাবুর মুখ স্পষ্টই হলদে দেখাই_তেছে। অল্পদিনের মধ্যেই তাহার মুখে জরার চিন্থগুলি ফুটিয়া উঠিয়াছে। আজকাল প্রত্যহ বেলা দুটাে-তিনটের পর তাহাকে ঘুমে অভিভূত করিয়া ফেলে; হাজার কাজ থাকিলেও তিনি স্থাপনাকে - জাগাইয়া • রাখিতে পারেন না ;–হেমনলিনীর সঙ্গে কথা কহিতে কহিতেও তাহার চোখ ঘুমে জড়াইয়া আসে। এমন কি, সকালবেলাতেও • প্রায় মাঝে মাঝে দেখা যায়, চৌকিতে বসিয়া একখানা বই;হাতে করিয়া তিনি ঘুমাই, পড়িয়াছেন। প্রত্যহ নিয়মিত বেড়াইতে যাইতেন, এখন আর তাহাতে প্রবৃত্তি নাই —এখন ঘর’ হইতে বাহির হইতে . ক্লাস্তি ও অনিচ্ছ বোধ হয়। পূৰ্ব্বে যখন র্তাহার শরীর ভুলি ছিল, তখন তিনি ਚਿਆਿ ও কবিরাজি নানাপ্রকার বটিকাদি সৰ্ব্বদাই ব্যবহার করিতেন-—এখন আর ওষুধ খাইবারও উৎসাহ নাই—এবং নিজের অস্বাস্থ্য লইয়া আজকাল তিনি আর আলোচনা মাত্রও করেন না, বরঞ্চ তাহা গোপন করিতেই চেষ্টা করেন। হেমনলিনী আজকাল আর তাহার কাছছাড়া হয় না । তাহারি কাজে তাহার দিন কাটিয়া যায়। অন্নদাবাবু তাহার শয়নঘরে গিয়া দেখেন, প্রায় প্রত্যহুই তাহার ঘরের ছোটখাট পরিবর্তন হইতেছে। একদিন দেখিলেন, চোখে জালো লাগে বলিয়া তাহার জানলা গুলিতে সবুজ ছিটের ছোট ছোট পরদা খাটানো হইয়াছে। একদিন দেখিলেন, তাহার বসিবার কেদারায়, যে জায়গাটাতে মাথার তেল লাগিয়া কালো হইয়া গিয়াছিল, সেখানে ফুলের কাজ-করা কাপড়ের জাৰরণ পড়িয়াছে। তাহার চিরকেলে টিপাইটার উপর একটা পশমের টিপাইঢাকা কোথা হইতে অবতীর্ণ হইয়াছে ! তাহার শোবায় ঘরের প্রবেশদ্বারের জন্ত একটা নানারঙের পুথির পরদাও-ষে তৈরি হইতেছে, তাহারও সন্ধান তিনি পাইয়াছেন। পূৰ্ব্বে ৰাছির হইবার সময় অন্নদাবাবু তাহার জামা চাদরের ছিদ্র প্রভৃতিসম্বন্ধে বিশেষ মনোযোগী ছিলেন না—এখন এ সকল বিষয়ে তাহার নিজের স্বাধীনতা আর চলিতুেছে না। অন্নদাবাবু বলেন, “মা হেম আমাকে আমার