পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ཤྭས་། সংখ্যা । ] না করিয়া একটু হাসিয়া বলিলেন, “মা যদি কষ্টকুে কষ্ট জ্ঞান করিবেন, তবে কি উহাকে এ ঘরে আনি ! যেখালে সস্তানের চলিয়া যায়, সেখানে মায়ের ও চলে । কি বল মা ! সত্য কথা বলিতেঁছি –একটু কষ্ট দিতে ভালও লাগে, নহিলে গ্রেহের পরিচর পাওয়া যায় না । ( স্ত্রীর প্রতি ) যাই হেীকৃ, তুমি আর বাহিরে দাড়াইয়ে না - শরৎকালের রৌদ্রটা বড় খারাপ * এই বলিয়া চক্রবর্তী রমেশের নিকট বাহিরে চলিয়া গেলেন । হরিভাবিনী কমলার বিস্তারিত পরিচয় লইতে লাগিলেন। “তোমার স্বামী বুঝি উকিল ? তিনি কতদিন কাজ করিতেছেন ? তিনি কত রোজগার করেন ? এখনো বুঝি ব্যবসা আরম্ভ করেন নাই ? তবে চলে কি করিয়া ? তোমার শ্বশুরের বুঝি সম্পত্তি আছে ? জান না ? ওমা কেমন মেয়ে গো ? স্বশুরবাড়ীর খবর রাখ না ? সংসারখরচের জুষ্ট স্বামী তোমাকে মাসে কত করিয়া দেন ? শাশুড়ি যখন নাই, তখন ত সংসারের ভার নিজের হাতেই লইতে হইবে । তুমি ত & নেহাৎ কচি মেয়েটি নও—আমার বড়জামাই যা-কিছু রোজগার করে, সমস্তই বিধুর হাতে গণিয়া দেয়” ইত্যাদি প্রশ্ন ও মুস্তব্যের দ্বারা অতি অল্পকালের মধ্যেই কমলাকুে অৰ্ব্বাচীন প্রতিপন্ন করিয়া দিলেন। কমলাও যে রমেশের অবস্থা ও ইতিবৃত্ত সম্বন্ধে কত অল্প জানে এবং তাহদের সম্বন্ধ বিচার করিলে এই অল্পজ্ঞান .যে কত অসঙ্গত ও লোকসমাজে লজ্জাকল্প, হরিভাষিনীর প্রশ্নমালায় তাহ তাহার মনে স্পষ্ট ੇ। 84 উদয় হইল। সে ভাবিয়ঃ দেখিল, আজ পর্য্যস্ত রমেশের সঙ্গে ভাল করিয়া কোনো কথা আলোচনা করিবার অবকাশমাত্র সে পায় নাই সে রমেশের স্ত্রী হইয়। রমেশের সম্বন্ধে কিছুই জানে না । আজ ইহা তাহার নিজের কাছে অদ্ভুত বোধ হইল এবং নিজের এই অকিঞ্চিৎকরত্বে লজ্জ তাছাকে পীড়িত ‘ করিয়া তুলিল । - • হরিভাবিনী" আৰার সুরু করিলেন“বেীমা, দেখি তোমার বালা ? এ সোন ত তেমন ভাল নয় ? ৰাপের বাড়ী হইতে কিছু গহনা আন নাই ? বাপ নাই ? তাই বলিয়া কি এমন করিয়া গা খালি রাখে ? তোমার স্বামী বুঝি কিছু দেন নাই ? আমার বড়-জামাই দুইমাস-অন্তর আমার বিধুকে একখানা করিয়া গহনা গড়াইয়া দেয় ।” - এই সমস্ত সওয়াল-জবাবের মধ্যে শৈলজ। তাহার দুই বৎসর বয়সের কন্তার হাত ধরিয়া আসিয়া উপস্থিত হইল। শৈলজা শু্যামবর্ণ, তাহার মুখখানি ছোটখাট,—মুষ্টিমেয়, চোখদুটি উজ্জল, ললাট প্রশস্ত--মুখ দেখিলেই স্থির বুদ্ধি এবং একটি শাস্ত পরিতৃপ্তির ভাব চোখে পড়ে । - শৈলজার ছোট মেয়েটি কমলার সম্মুখে দাড়াইয়া মুহূৰ্ত্তকাল পর্যবেক্ষণের পর বলিষ্ঠা উঠিল—“মাসী” -বিধুর সঙ্গে সাদৃপ্ত বিচার * করিয়া যে বলিল, তাহ নহে–একটা বিশেষবয়সের যে-কোন মেয়েকে তাহার অপ্রিয় বোধ না হইলেই তাহাকেই সে নির্বিচারে মাসীনামে অভিহিত করে । কমলা তৎ, ক্ষণাৎ তাছাকে কোলে তুলিয়া লইল। . • হরিভাবিন শৈলজার নিকট কমলার