পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

¢vს গুলি উদ্ধৃত করিয়া আনিয়া যদি দেশীয় পণ্ডিতগণের চক্ষের সম্মুখে ধরা যায়, তাহা হইলে তাহারা দেখিয়া আশ্চৰ্য্যাম্বিত হইবেন যে, তাহার একটিও নুতন নহে সমস্তই আমাদের দেশের বহুপুরাতন পৈতৃক-সম্পত্তি । দুঃখের বিষয় এই যে, কাণ্টের নিজের তত্ত্বান্বেষণের সেই প্রকৃষ্ট ফলগুলি তাহার নিজের ভোগে আসিল না—শুদ্ধকেবল ইউরোপীয় ধৰ্ম্ম যাজকদিগের প্রচলিত মতামতের সঙ্গে সেগুলির মিলু না-হওয়-গতিকে । তেলে-জলে কেমন করিয়াই বা মিশ খাইবে আমাদের দেশের তত্ত্বজ্ঞানীর সার সত্যের দৃঢ় ডাঙাভূমিতে দুই পায়ে ভর দিয়া দাড়াইয়া আছেন ; কাণ্ট, এক পা বাড়াইয়া সার সত্যের ডাঙtয় ভর স্থাপন করিয়াছেন, আর, র্তাহার আর-এক পী রহিয়াছে সংশয়ের তরঙ্গ-দোলায় দোলামান পিছনের নৌকায় ভর দিয়া—ই ত্যবসরে তিনি র্তাহার চারিদিকের ধৰ্ম্মৰাজকদিগের ক্ৰকুট-কুটিল মুখভঙ্গী দেখিয়া পিছনের প। ডাঙায় উঠাইতে সাহস পাইলেন না। কাণ্টের এক পা সংশয়-দোলায় দোদুল্যমান—আর-এক পা ধ্রুব-সত্যে প্রতিষ্ঠিত, ইহা দেখিয়া আমার মনে এইরূপ প্রতীতি জন্মিয়াছে যে, কান্ট অৰ্দ্ধ ংশয়বাদী—অদ্ধ স্থিরবাদী। তা বই, যাহারা বলেন যে, কাণ্ট প্রকৃতপক্ষেই সংশয়বাদী, * তাছাদের কথায় আমি কোনোক্রমেই সায় দিতে পারি না । তবে, এটা আমি মানি যে, আধুনিক ইউরোপের (বিশেষত ইংলণ্ডের) আর আর খ্যাতনামা পণ্ডিতগণ কাণ্টের দর্শনের উপরি-স্তরের তরঙ্গ-দোলায় ছলিয় বেড়ানো একটা খেল পাইয়াছেন মন্ট না ; তাছাদের মস্তিষ্ক-চালনার পক্ষে बक्रललन । [ ৪র্থ বর্ষ, তাহা এক প্রকার ফুটুবল বা লন্‌টেনিযু বা পোলো। এতদ্ব্যতীত, কাণ্টের দশনের অন্ত স্থলে যে অগাধ নিস্তরঙ্গ প্রশান্ত জল রহিয়াছে, তাহার তাহার বড় একটL খোজ-খবর রাখেন না । ফাণ্টের এইশ্রেণীর বহির্ভক্ত চেলার সংশয়বাদের লৌহশৃঙ্খলকেই আপনাদের কণ্ঠের হার করিয়াছেন, এ কথা খুবই সত্য –কিন্তু সে দোষ কাণ্টের নহে । দুঃথের বিষয় এই যে, ইউরোপের দেখাদেখি নব্য ভারতবাসীর। তাহাদের পিতৃপুরুষদিগের আবিষ্কৃত তত্ত্ব জ্ঞানের পথকে ব্যান্ত্রের মতো ডব্লাইতে শিথিয়াছেন । ইউরোপীয় ধৰ্ম্মযাজকদিগের সাম্প্রদায়িক স্থলদৃষ্টিতে তত্ত্বজ্ঞানের পথ যে অধঃপতনের পথ বলিয়। প্রতীয়মান হইবে—তাহ তে হইবারই কথা ! তন্ত্ৰজ্ঞানের আলোক যদি তাহাদের অন্ধকারীচ্ছন্ন সাম্প্রদায়িক কোটরে প্রবেশ করিয়া তাহাদের সাধের মুখস্বপ্ন ভঙ্গ করিয়া দ্যায়, • তবে তাছাদের আর থাকিবে কি ? কিন্তু আমাদের দেশের ধৰ্ম্মশাস্ত্রের সঙ্গে তত্ত্বজ্ঞানের তো আর সেরূপ মৰ্ম্মাস্তিক বিরোধ নাই ! উণ্ট। বরং বল যাইতে পারে যে, আমাদের দেশের ধৰ্ম্মশাস্ত্রের ভিত্তিমূল যদি কিছু থাকে, তবে তাহা তত্ত্বজ্ঞান। আমাদের দেশের সকল শাস্ত্রই একবাক্যে বলে যে, অবিপ্লাই, সমস্ত অনর্থের মূল ; কেবল তৰজ্ঞান পরম পুরুষার্থের সোপান । কিন্তু বিধির কি বিড়ম্বন-নব্যভারতের বিন্ধওলীর মুখে প্রায়শই এইরূপ একটু ইউরোপীয় বাগিং যখন তখনওঁনিতে পাওয়া বারবে: তত্বজ্ঞানের আলোচনাতে সত্যকে পাওয়া যায় না--