পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

پیامه বঙ্গদর্শন । [ ৪র্থ বর্ষ, জ্যৈষ্ঠ। কমলার কর্ণমূল একটুখানি লাল হইয়। উঠিল—রমেশের কথার কোন উত্তর না দিয়া কমলা একটু সরিয়া-গিয়া কহিল—“উম্শে, এইখানটায় আর এক-ঘড়া জল ঢালন— দেখছিস নে কত কাদা জমিয়া আছে! কাটাট। আমার হাতে দে দেখি ”—বলিয়া কাটা লইয়া খুব বেগে মার্জনকার্য্যে নিযুক্ত इहेण । । . রমেশ কমলাকে বাট দিতে দেখিয়৷ হঠাৎ অত্যন্ত ব্যস্ত হইয়া উঠিয়া কহিল, *আহ, কমলা, ও কি করিতেছ ?” পিছন হইতে শুনিতে পাইল, “কেন রমেশবাবু, অন্তায় কাজটা কি হইতেছে ? এদিকে ইংরাজি পড়িয়া আপনার মুখে সাম্য প্রচার করেন ; বাট দেওয়ার কাজটা যদি এতই ছেয় মনে হয়, তবে চাকরের হাতেই বা কাটা দেন কেন ? আমি মুখ, আমার কথা যদি জিজ্ঞাসা করেন, সতী মায়ের হাতের ঐ ব্যাটার প্রত্যেক কাঠি স্থৰ্য্যের রশ্মিচ্ছটার মত আমার কাছে উজ্জল ঠেকে । মা, তোমার জঙ্গল আমি একরকম প্রায় শেষ করিয়া আসিলাম, কোন্‌খানে তরকারীর ক্ষেৎ করিবে, আমাকে একবার দেখাইয়৷ দিতে হইবে।” কমলা কহিল, “খুড়ামশায়, একটুখানি সবুর কর, আমার এ ঘর সারা হইল বলিয়৷ ” এই বলিয়া কমলা ঘর-পৱিষ্কার শেষ করিয়া কোমরে-জড়ানো আঁচল মাথায় তুলিয়। বাহিরে আসিয়া খুড়ার সহিত তরকারীর ক্ষেৎ লইয়া গভীর আলোচনায় প্রবৃত্ত হুইল । তরকারীর ক্ষেৎসম্বন্ধে কোনোপ্রকারে অনধিকায় প্রবেশ হইতে পারে গা, উমেশের এইরূপ ধারণা ছিল, সুতরাং এই প্রসঙ্গের মাঝখানে বিশেষ ঔৎসুক্যসহকারে সে-ও অসিস্থা প্রবেশ করিল। রমেশও কাছে আসিয়া দাড়াইল—কিন্তু কপি-ৰীটশালগমের আবাদসম্বন্ধে অনভিজ্ঞতা ও ঔদাসীন্য বশত আলোচনার গভীর মাঝখানে তাহার স্থান হইল না । সে যা দুইএকটা কথা বলিবার চেষ্টা করিল, তাহ প্রাসঙ্গিক না হওয়াতে আলোচনাসমিত্তি তাছাত্তে বিশেষ কর্ণপাত করিল না ! এম্নি করিয়া দেখিতে দেখিতে দিন শেষ হইয়া গেল, কিন্তু ঘরগোছানো এখনো ঠিকমত হইয়া উঠিল না । বাংলাঘর অনেকদিন অব্যবহৃত ও রুদ্ধ ছিল, আরো দুইচারিদিন ঘরগুলি ধোয়া-মাজা করিয়া জানলাদরজা খুলির না রাখিলে তাহ বাসযোগ্য হইবে না দেখা গেল । কাজেই আবার মাজ সন্ধ্যার পরে খুড়ার বাড়ীতেই আশ্রয় লইতে হইল। আঞ্জ তাহাতে রমেশের মনটা কিছু দাময় গেল । আজ তাহদের নিজের নিভূত ঘরটিতে সন্ধ্যাপ্রদীপটি জ্বলিবে এবং কমলার সলজ্জ স্মিতহাস্তটির সম্মুখে রমেশ আপনার পরিপূর্ণ হৃদয় নিবেদন করিয়া দিবে, ইহা সে সমস্তদিন থাকিয়া-থাকিয়া কল্পনা করিতেছিল। আরো ইচাঃদিন বিলম্বের সম্ভাবন দেখিয় রমেশ তাছার আদালতুপ্রবেশসম্বন্ধীয় কাজে পরদিন এলাহাবাদে চলিয়া গেল । ● & ૩૧ r কাজের উৎসাহে, এবং সেদিন রমেশের কাছ श्रै८ङ যেটুকু আদরের সুস্পষ্ট ভূমিকা পাইল্প