&&b” এমন কি উপকার হওয়া সম্ভব, যাহতে এই সকল ভীত-পীড়িত পলায়নেচ্ছু মানুষদিগকে অহরহ এত কষ্ট দিয়া মৃত্যুর পথে তাড়ন করা লেশমাত্র বিহিত বলিয়া গণ্য হইতে পারে ? কিন্তু কই, এজন্য ত লেখকের সঙ্কোচ নাই, পাঠকের অনুকম্পা নাই ? তিববতীর কিরূপ নিষ্ঠুরভাবে পীড়ন ও হত্যা করিতে পারে, শোকার সেই কারণে তিববতীদিগকে কিরূপ ভয় করে, এবং তাঁহাদিগকে তিববতীদের হস্ত হইতে রক্ষা করিতে ব্রিটিশরাজ কিরূপ অক্ষম, তাহ ল্যাওর জানিতেন-ইহাও তিনি জানিতেন, তাহার মধ্যে যে উৎসাহ-উত্তেজনা ও প্রলোভন কাজ করিতেছে, শোকাদের মধ্যে তাহার লেশমাত্র নাই । তৎসত্বে ও ল্যাগুর তাহার গ্রস্থের ১৬৫ পৃষ্ঠায় যে ভাষায় যে ভাবে তাহার বাহকদের ভয়দুঃখের বর্ণনা করিয়াছেন, তাহা তর্জমা করিয়া দিলাম ৪— “তাহারা প্রত্যেকে হাতে মুখ ঢাকিয়া ব্যাকুল হইয়া কাদিতেছিল । কাচির দুই গাল বাহিয়া চোখের জল ঝরিয়া পড়িতেছিল--দোল ফোপাইয়া কাদিতেছিল, এবং ডাকু ও অন্য যে একটি তিববতা আমার কাজ লইয়াছিল, যাহারা ভয়ে ছদ্মবেশ গ্রহণ করিয়াছিল, তাহার। তাহীদের বোঝার পশ্চাতে লুকাইয়া বসিয়া ছিল । আমাদের অবস্থা যদিও সঙ্কটাপন্ন ছিল, তবু আমাদের লোকজনদের এই আতুল্লদশা দেখিয়া আমি না হাসিয়া থাকিতে পারিলাম না ।”— ইহার পরে এই দুর্ভাগার পলায়নের চেষ্টা করিলে ল্যাগুর তাহাদিগকে এই বলিয়া শাস্ত করেন যে, যে কেহ পলায়নের বা বঙ্গদশন । [ ৩য় বর্ষ আশ্বিন বিদ্রোহের চেষ্টা করিবে, তাহাকে গুলি করিয়া মারিৰ ! কিরূপ তুচ্ছ কারণেই ল্যাগুরু-সাহেবের গুলি করিবার উত্তেজনা জন্মে, আদ্যন্ত্র তাহার পরিচয় পাওয়া গেছে । তিববতী কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে ল্যাওর যখন প্রথম নিষেধ প্রাপ্ত হইলেন, তখন তিনি ভাণ করিলেন, যেন ফিরিয়া যাইতেছেন । একটা উপত্যকায় নামিয়া আসিয়া দূরবীণ কৰিয়া দেখিলেন, পাহাড়ের শৃঙ্গের উপর হইতে প্রায় ত্ৰিশটা মাথ। পাথরের আড়ালে উকি মারিতেছে । সাহেব লিখিতেছেন—“আমার বড় বিরক্তিবোধ হইল । যদি ইচ্ছা হয় ত ইহার প্রকাশুভাবেই আমাদের অমুসরণ করে না কেন—দুর হইতে পাহারা দিবার দরকার কি ! অতএব আমি আমার আটশ'-গজী রাইফেল লইয়া মাটিতে চ্যাপট হইয়া শুইলাম এবং যে মাথাটাকে অন্তদের চেয়ে স্পষ্ট দেখা যাইতেছিল, তাহার প্রতি লক্ষ্য স্থির করিলাম ।” এই “অতএব”-এর বাহার আছে ? লুকাচুরিকে ল্যাওর-সাহেব কি ঘৃণাই করেন ! তিনি এবং তাহার সঙ্গের আর একটা মিশনারি-সাহেব নিজেদের হিন্দু তীর্থযাত্ৰী বলিয়া পরিচয় দিয়াছেন, প্রকাশু্যে ভারতবর্ষে-ফিরিবার ভাণ করিয়া গোপনে লাসায় যাইবার উদ্যোগ করিতেছেন, কিন্তু পরের লুকাচুরি ইহার এতই অসহ যে, ভূমিতে চ্যাপ্টা হইয়া গুইয়া আত্মগোপনপূর্বক তৎক্ষণাৎ আটশ'গজী রাইফেল বাগাইয়া কছিলেন, “I only wish to teach these cowards a lesson.—আমি এই কাপুরুষদিগকে শিক্ষণ
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৬১
অবয়ব