পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শান্তিলতা —উপন্যাস। ঐউমেশচজ গুপ্ত প্রণীত। মূল্য ১২ এক টাকা । যিনি কেবল গল্পের হিসাবে পড়িবেন, তাহাকে এই উপন্যাসখানি পড়িতে মন্দ লাগিবে না। তাহার কারণ এই যে, हेशप्ड. বণিত ঘটনাবলী কৌতুহলোদ্দীপক এবং তাহার পারস্পৰ্য্য স্ববিদ্যস্ত। যদি পুৰ্ব্ববঙ্গের বাক্যব্যবহারপ্রণালীর পরিচয়স্থলগুলি—বড় অল্প নহে–ছাড়িয়া দেওয়া যার, তাহা হইলে বলিতে পারা যায় যে, রচনা মোটের উপর সরস ও চিত্তাকর্ষক হইয়াছে। সুতরাং উপর-উপর পড়িয়া যাইতে কোন আয়াস লাগে না । কিন্তু যিনি ভিতরে প্রবেশ করিয়া চরিত্রচিত্রের বা সাহিত্যিক নিপুণতার অমুসন্ধান করিবেন, অনেক ক্রটি ও দোষ তাহার চক্ষে পড়িৰে । এই প্রায় দুইশত পাতার উপন্যাসে, চরিত্র কেবল একটিমাত্র—সে গ্রন্থকার স্বয়ং। অনেকগুলি স্ত্রী ও পুরুষের নাম আছে বটে ; কিন্তু কেবল নামই আছে— পৃথক পৃথক মানুষ নাই। উপন্যাসের নরনারাগুলি যে-ই যাহা বলিয়াছে ও করিয়াছে, সে সকলই গ্রন্থকারের নিজের কথা ও কাৰ্য্য। উমেশবাবু বোধ হয় কথাবার্তায় এবং লেখার সংস্থতবচনের বুক্‌নি দিতে কিছু অতিরিক ভালবাসেন। সেইজন্তই বোধ-কল্পি দেখিতে পাই যে, এই উপন্ডসের বাপুজবগুলি যখন তখন, যেখানে-সেখানে, **डीब्र कॉप्इ, नश्कृङ क्षाक्लिदाब्र cणांड সংবরণ করিতে পারে নাই। সংস্কৃত জানা ৰাঁহার সম্ভব নহে, সে-ও সংস্কৃতবাক্যের টুকুর ব্যবহার করিতে ছাড়ে লা। স্বরেশৰাবু তাহার কুড়িয়ে-পাওয়া মেয়েটিকে জগদম্বা-গোয়ালিনীর হাতে সমর্পণ কৱিৰায় সময় বলিয়া দিতে ভুলেন না যে— “যা দেবী সৰ্ব্বভুতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিত।” ধনবানের দেব কেহ ধরে না, এই কথা গোয়ালিনীকে বুঝাইতে গিয়া বলেন-– ' “ব্ৰহ্মহাপি নরঃ পূজ্যে যস্তাত্তি বিপুলং ধনম্।” ডাক্তারবাবু রোগী দেখিতে আসিয়া সাংখ্যদর্শন ঝাড়েন— - “ঈশ্বরাসিদ্ধেঃ—প্রমাণাভাবাৎ ।” নৰ্ম্মদ ছাত্রবৃত্তি পাস করিয়াছে ; স্বতরাং আত্মার অবিনশ্বরত্ব ও বাইবেলে লিখিত স্বষ্টিতত্বের অসারতা প্রতিপাদন করিবার অধিকার ত তাহার জন্মিয়াছেই, তদ্ব্যতীত পিতার ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বয়ংবর হইবার অধিকারও জন্মিয়াছে। অতএব নৰ্ম্মদ তাহার প্রাইভেট্ টিউটর নটবরবাবুকে রাত্রি সাড়ে দশটার সময় অতি সংগোপনে নিজের কামরার ডাকাইয়া আনিল এবং বিবাহের, জন্ত চাপিয়া ধরিল। অন্তান্ত যুক্তিতর্কের পর বলিল—“যিনি আমার এ হৃদয়রাজ্যের রাজা হইবেন, তাহাকে আপনিই দেখিয়াশুনিয়া অভিষিক্ত করিব । আমার সম্বন্ধে তুমিই সৰ্ব্বদেবময়ে হরিণ।” আরও বলিল, “যোইসি সোহসি নমোহস্ত তে”—অর্থাৎ আমি তোমারি ; আর কাহারও হইব না।