পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গদর্শন । ৩য় বৰ পোৰ । সম্মুখস্থিত মৃগের প্রতি লক্ষ্য করে, তখন তাছার ভাখ লোভে এবং ক্রোধে দিগ্বিদিকপূত হইয় উঠে- ব্যাস্ত্রী আবার যখন শাৰকের গাত্রলেহন করে, তখন তাহার সাখা ঙ্গেহমমতায় গলিয়া পড়িতে থাকে । ও তিনরকমের স্বাখা’র কোনোটা’রই সঙ্গে মন্থষ্যের ভাখার মিল খায় না । মনুষ্যের দ্যাখা প্রবুদ্ধরকমের স্তাখা—সে দ্যাখা’র উপরে মুঢ়তা-মত্ততা এবং বিক্ষেপের অধিকার কম, বুদ্ধির অধিকার বেশী । সে সাখার কৰ্ম্মক্ষেত্রে প্রাণমনকে নীচে দাবিয়া-রাখিয়া বুদ্ধি আপনীয় উচ্চ পদবীতে ভর দিয়া দাড়ায় । মনে কর, রাত্ৰি আগত প্রায়—আকাশ মেঘাচ্ছন্ন —এমন সময়ে দেবদত্তনামক জনৈক পথিক মাঠের মাঝখান দিয়া চলিতে চলিতে অনতিদূরে নিবিড় বট-অশ্বখের আড়ালে চাহিয়া দেখিল—প্রদীপ জলিতেছে। সেই প্রদীপের রশ্মিছটা দেবদত্তের চক্ষুর ভিতরে তৈজসী কম্পনক্রিয় উৎপাদন করল । তৃৈজলী কম্পনক্রিয়া চলিতে লাগিল প্রাশে । প্রাণের তৈজসকম্পনে মনের স্বারে ঘনঘন আঘাত পড়িতে লাগিল। প্রাশের ডাক শুনিয়া মন দৌড়িয়া আসিল । প্রাণের তৈজসকম্পনে মনের সংযোগ হইবামাত্র প্রাণমনের সন্মিলনক্ষেত্রে আলোকদর্শনরূপিণী চেতনা (sensation ) উদ্ভাসিত হইয়া উঠিল । রেলগাড়ির প্রহরী যেমন নিশান ঘুরাইরা বাষ্পঘন্ত্রীকে ( এঞ্জিন-চালককে ) গাড়ী চালাইতে সঙ্কেত করে, চেতনা’র উদ্ভাসন তেমনিআরো একপ্রকার নিশান-ঘুরানে। তন্দ্বষ্টে বুদ্ধির এইরূপ জ্ঞান হয় যে, দৃপ্তমান অব wetzofa ( phenomenonian ) ocess - বত্ত্ব একটা-কিছু অাছে। “একটা কিছু আছেএটা হ’চ্চে সামাদ্য জ্ঞান । “সে ৰম্ভ না জানি কি ?” এইটি হ’চ্চে বিশেষের জিজ্ঞাসা। “দেখি রোসো ভাবিয়া ;–মাঠের চরমসীমায় গাছপালায় ঘেরা গ্রাম থাকিবারই কথা ; গ্রামের প্রাস্তভাগে চাসাদের বাসস্থান অবশুই আছে !” ইহার নাম ভাবনা । “বুঝিয়াছি —কোনো চাসা-র কুটীরে প্রদীপ জলিতেছে, তাহারই আলো . গাছপালার ফাকের মধ্য দিয়া ছট্‌কিয়া বাহির হইতেছে।” ইহার নাম বিশেয জ্ঞান ৰ৷ বিজ্ঞান । চেতনার সঙ্কেত শিরোধার্য্য করিরা বুদ্ধি কৰ্ম্মক্ষেত্রে অবতীর্ণ হওয়াতে হইল যাহা, তাহা এই – ( ১ ) বুদ্ধির এপারে দেখা দিল—”ৰম্ভ একটা আছে” এই সামান্ত জ্ঞান । (২) ওপারে দেখা দিল—“চাসার কুটীরে প্রদীপ জ্বলিতেছে" এই বিশেষ জ্ঞান । (৩) স্থই পারের মাঝখানে দেখা দিল— ভাবনা-ক্রিয়া বা ধীশক্তির পরিচালনা । অতঃপর দ্রষ্টব্য এই যে, “একটা কোনো বস্ত আছে* এই প্রকার সামান্তজ্ঞানের দ্বার দিয়া আমরা আত্মসত্তা উপলব্ধি করি এবং “ঐ থানটিতে প্রদীপ জলিতেছে।” এইপ্রকার বিশেষ জ্ঞানের দ্বার দিয়া আমরা বস্তসত্তা উপলব্ধি করি । শেষের এই কথাটি অতীব একটি গুরুতর কথা ; উছার আদ্যোপাস্ত রীতিমত পৰ্য্যবেক্ষণ করিয়া দেখা জাবশ্যক। এইজন্ত উহার পর্য্যালোচনাকাৰ্য্য আগামিবারের জন্ত হাতে রাখিয়া দেওয়া হইল । ঐদ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর ।