পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দশম খণ্ড.djvu/১৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& “ . করিবার উদ্যোগের অর্থ আত্মবিনাশে সংকল্প। তাই কমল, যে সতীশচন্দ্রের মুখ দেখিলে আর সকল কাৰ্য্য ভুলিয়। যাইতেন, সেই সতীশচন্দ্রকে পশ্চাতে ফেলিয়া, অতি উৎকণ্ঠিত চিত্তে গোবিন্দপুরের বাড়ীতে প্রবেশ করিলেন ; প্রবেশ করিয়া সাহসশস্ত হৃদয়ে স্থৰ্যমুখীর সংবাদ জিজ্ঞাসা করিলেন, ভয় যদি কেহ বলিয়া ফেলে নগেন্দ্রের সহিত কুন্দনন্দিনীর বিবাহ দিয়া স্বৰ্য্যমুখী প্রাণত্যাগ করিয়াছেন । কমল সত্যই তবিয়াছিলেন। স্বৰ্য্যমুখী প্রাণ ত্যাগের সংকল্পই করিয়াছিলেন, আত্মহত্যার দ্বারা নহে, কারণ আত্মহত্য সেরূপ ধীর, গম্ভীর, সহিষ্ণুপ্রকৃতির পক্ষে অস্বাভাবিক হই ত। স্বর্যমুখী ‘গৃহত্যাগ করিয়া, শারীরিক ক্লেশ, অনশনদি স্বর জীবনশেষের অভিপ্রায় করিয়াছিলেন। বুঝি বা আত্মহত্যা করিয়া, স্বামীর মুখকান্তি দর্শনের, স্বামীর চরণসেবার, আশা হইত্ত্বে একেবারে চিরদিনের জন্য বঞ্চিত হইবার অবস্থার সহিত নিজের হৃদয়কে মিলিত করিতে পারেন নাই । তাহার এরূপে আজীবন:দুঃখভোগে আত্মেঃ ংসর্গের মূলে স্ত্রীসুলভ অভিমান থাকিয়া থাকিলে, কবি বোধ হয় ইহাও দেখাইতে চাহেন যে, সে অভিমান তাছার পতিসেবার লালস্যকে পরাজিত করিতে পারে নাই ; অন্য দিকে, সে ভাবের অনুগামী হইয় গৃহত্যাগ করায়, অন্তকে স্বামী দান করিয়া সে অবস্থা সহ্য করিবার অক্ষমতা প্রদর্শিত হইয়া পতিময়ঞ্জীবিতর, পতিসৰ্ব্বস্ব রমণীর, চরিত্রের সঙ্গতি বা স্ব। ভাবিকত্ব রক্ষিত হইয়াছে। কেবল তাই ই নহুে । বঈw শন । { ১০ম বর্ষ, ফাল্গুন, ১৩১৭ ৷ আপন স্বামীতে স্থৰ্যমু7র এত ছিল বলিয়াই, স্বামীর প্রী ত্যর্থে সে স্বর্থ ত্যাগে র্তাহার এত মহত্ব। কমলমণি স্বৰ্য্যমুখীর শয়নগৃহে প্রবেশ করিয়া স্বৰ্য্যমূীকে এক রুদ্ধ গসাক্ষসন্নিধানে অধোবদনে বসিয়া দেখিলেন । পরে স্বর্য্যমুখী উঠিয়া নিকটে আসিলে দেখিলেন, “সুর্য্যমুখীর কাধের হাড় উঠিয়া পড়িয়ছে, নবদেবদারুতুল্য স্বৰ্য্যমুখীর দেহ তরু- ধতুকের মত ভাঙ্গিয়া পড়িয়াছে, স্থৰ্যমুীর প্রফুল্ল পদ্মপাশ চক্ষু কোটরে পড়িয়ছে, স্থধ্যমুখীর পদ্মমুখ দীঘকৃত হইয়াছে।” ইহা দেখিয়া বুঝিতে বাকি থাকিল না যে বিবাহ হইয়। গিয়:ছে । তথন স্বর্যমুখী কমলের কোলে মাথা লুকাইয়। কঁদিতে লাগিলেন, কমলের চক্ষের জলে স্থৰ্য্যদুখীর বক্ষ ও কেশ সি ধ্রু করিতে লাগিল । পরে উভয়ে কথোপকথনে সমর্থ হইলে, এইরূপ কথোপকথন হইল – 3. 1 হইয়াছে—কেন তুমি আপনার উদ্যোগ আপনি করিলে ? স্বৰ্য্যমুখী হাসি৷ বলিলেন, “আমি কে ?” —মৃদ্ধ ক্ষীণ হাসি হাসিয়া উত্তর করিলে ন – বৃষ্টির পর আকাশ প্রাস্তে ছিন্নমেঘে যেমন বি6্যৎ হয়, সেইরূপ হাসি হাসিয়৷ উত্তর করিলেন “আমি কে ? একবার তোমার ভাইকে দেখিয়া আইস–সে মুখভর। অহিল:দ দেখিয়া আইস ;–তখন জানিবে তিনি আজ কত সুখে সুখী । তাহার এত সুখ যদি আমি চক্ষে দেখিলাম, তবে কি আমার জীবন সার্থক হইল না ? কোন সুখের তোমার যন্ত্রেই মৃত্যুর এ বিব{হ