পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দশম খণ্ড.djvu/৩৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] প্রগাঢ়, বিচ্ছেদ দুৰ্ব্বিষহ, শোক সৰ্ব্বগ্রাসী ; ভাই এই শোকের আঘাতে র্তাহার পুরাভ্যস্ত জগংটা চুরমার হইয়া গিয়া, সমগ্র বিশ্ব সমস্তাকে নুতন ও বিকট আকারে, তাহার চক্ষের উপরে উজ্জ্বল করিয়া তুলিয়াছে । কোনও রস যতক্ষণ না গাঢ় হইয় উঠে, ততক্ষণ তাহার নিজস্ব রূপটা সুস্পষ্ট হইয়t ফুটিয়া উঠে না। অক্ষয়কুমারের শোক অতিশয় গভীর ; তাহার বিরহ-আগুনে পুনঃ পুনঃ আবৰ্ত্তিত হইয়া এ শোক যেন নিরেট হইয়া উঠিয়াছে । এইজন্তই ত{হার শোক গাথাতে সে গভীর শোকের বিচিত্র রূপ গুলি এরূপ বিশদভাবে ফুটিয়াছে ! যেখানেই কোন ও বিশেয রস, কোন ও ক্ষেত্রবিশেষে, তাহার আপনার নিজস্ব রূপগুলিকে ফুটtহয়। তোলে, সেখানেই তাহা আপনার বিশিষ্ট আধারের সঙ্কীর্ণ সীমাকে অতিক্রম করিয়া, সাৰ্ব্বজনীন ও বিশ্বজনীন হইয় উঠে । একের রস তথন সকলের রস, একের ভয় ও ভাবনা, আশা ও আ কাজক্ষা, সন্দের্চ ও শ্রদ্ধ,—তখন বিশ্বের ভয় ও ভাবন, আশা ও আকাঙ্ক্ষা, সন্দেহ ও শ্রদ্ধা হইয়া পড়ে ; দর্পণে লোকে যেমন আপন আপন মুখ দেখিয়া থাকে, সেইরূপ এই প্রস্ফুট ও উজ্জ্বল রস-চিত্রের মধ্যে বিশ্বজন আপন আপন অন্তরের অদৃষ্টপূৰ্ব্ব রসের রূপের ও স্বরূপের সাক্ষাৎকার লাভ করিয়া, বিস্মিত, পুলকিত, মুগ্ধ ও তৃপ্ত হইয় উঠে । এই লক্ষণাক্রাস্ত রস-পটই সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট । এইরূপ কাব্যস্থষ্টিই রসবিচারে সৰ্ব্বোচ্চ স্থান প্রাপ্ত হয়। শোকচিত্রের মধ্যে, এই গুণেই, 三ー હીમો - '8e ○ অক্ষয় কুমারের এষা’থানি অসাধারণ উৎকর্ষ লাভ করিয়াছে । ‘કુમાર જનમ ૭ પ્લાન જીન-ફ્રેશર অসাধারণ বস্তুতন্ত্রত । কবি আপনার জীবনের বাগ্নিরের ও ভিতরের অতি ঘনিষ্ঠ ও পরিচিত অভিজ্ঞতার উপরে এই কবিতাগুলি গড়িয়া তুলিয়াছেন। যে যেমন দেখে, সে তেমনি অ’াকে । চিত্রের অস্পষ্টতা চিত্রকরের দৃষ্টির অক্ষমতাই প্রমাণ করে। "এষার চিত্রগুলিতে কোথাও এরূপ অস্পষ্টতা দেখিতে পাই না । ইহার মধ্যে কোণ ও কিছুহ ছুবোধ্য বা অবোধ্য নাই। অক্ষয়কুমার সুকুমার গোধূলালয়ে তাহার কবিতাদুন্দরীর অবগুণ্ঠনখানি ঈষদপস্থত করিয়া, সেই আলো-অাঁধারের ইন্দ্রজালপ্রভাবের মধ্যে, তাছার অপ্রাকৃত মাধুর্যের প্রতিষ্ঠা করিবার চেষ্টা করেন না । তিন কাব্যই স্বষ্টি করেন, সুললিত শব্দ যোজনা করিয়া, ইন্দ্র সভার অনিন্দ্য সঙ্গীতের ঝঙ্কার তুলিয়, কবিতার নামে কে বল মোহিনী হেঁয়ালি রচনা করেন না । এই বিষয়ে অক্ষয়কুমার আধুনক বাংলা-সাহিত্যের আদশের অনুকরণ করেন নাই, প্রাচীন কৰি কুলশিরোমণিদিগেরই পদাঙ্কামুসরণ করিবার চেষ্টা কঃিয়াছেন। বিদ্যাপতি বা চণ্ডীদাস, মুকুন্দরাম কি ভারতচন্দ্র, ইংদের কে হই কাব্যের ছল করিয়৷ হেঁয়ালি গড়েন নাই । সুনিপুণ সঙ্গীতজ্ঞের মতন, কেবল শব্দহীন রাগরাগিণীর আলাপ ও করেন নাই । হেঁয়ালি জিনিষটা ক্ষেয় নহে ; উৎকৃষ্ট, স্বনিপুণ হেঁয়ালি সাহিত্যভাণ্ডারের রত্নবিশেষ সন্সেছ নাই । রাগিণীর অনর্থক অtলাপও নিষ্ফল হয়