পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দশম খণ্ড.djvu/৪১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

©8Ꮈx “তুই আলো জাল । চঞ্চল, চল আমরা বারান্দায় যাই ।” বিস্রস্ত কেশে, বিপৰ্য্যস্ত বেশেই মঞ্জুলা উঠিয় দাড়াইল । তাঙ্গর আয়তচক্ষে অতর্কিতে চলৎবিদ্যুৎ চমকিয়া উঠিল, অধরে স্মিতরেখা দেখা দিল, অঙ্গ শিহরিয়া উঠিল । চতুরা চঞ্চলা সকলই লক্ষ্য করিল। সে মনে মনে ভাবিল, বটে ? এখন হুইতে চাদের কিরণে গা জ্বালা করিবে ! দাসী পরিচারিকার আলো জালিতে লাগিল । চঞ্চল দ্রুতহস্তে মঞ্জুলার কেশপাশ এবং বেশভূষার একটুকু শৃঙ্খলা করিল। একখানি ঈষদলত্ত করক্র ওঢ়নি আনিয়া তাহার অঙ্গে পরাইয়া দিল । বারানায় ছোট ছোট বেত্ৰাসন, পাল , তাহাতে পুরু শয্যা । নিম্নে কত লতা— মুক্ত, মাধবী, লবঙ্গ –দক্ষ ১ালীপ যত্নকৌশলে ক্রমে বন্ধিত হইয়া বারীন্দীর স্তস্ত গুলি ঘিরিয়া ঘিরিয়া উপরে ছাদ পর্য্যস্ত উঠিয়াছে। লতায় ফুল ! আস্তোন্মুখ রক্তরবি-কিরণে পশ্চিমাকাশ তখন উদ্ভাসিত হইয়া উঠিয়াছে, সেখান হইতে সে অপূর্ব শোভ পরিলক্ষিত হয় । সেখানে পেী ছয় মঞ্জুলা বলিল ;– “মালী নিত্যকার ফুলমালা দিয়াছে ?” “হা, এখানে আনিব কি ?” *এখন না, সময় হইলে আনিবি । চঞ্চল, এখানে থাক্ ; চিত্রা, তাহাকেএখানে লইয়া আয় ।” প্রমীতসেন বারানায় পৌছিলে মধুলা সলজ্জ মৃদুপদে অগ্রসর হইয় তাহার সম্বৰ্দ্ধন করিল । স্মিতমুখে বলিল ;– কত বঙ্গদর্শন [ ১৩শ বর্ষ, কাৰ্ত্তিক, ১৩২০ “কি সৌভাগ্য আমার ! এ সামান্ত স্ত্রীলোককে আপনি বিস্কৃত হন নাই!” “বিস্কৃত হইব ? আপনি—তুমি এ অকিঞ্চিৎকর ব্যক্তিকে চিরজীবনের জন্ত ঋণী করিয়াছ । আগে জানিতে পারি নাই, জানিতে পারিলে কোন দিন আসিয়া এমন হিতকারিণী কে ধন্যবাদ- ধন্তবাদে কি কখনো চিত্তের তৃপ্তি হইতে পারে ?—” “কি জানিতে পারিয়াছেন ?—আপনি বস্থন ।” প্রমীতসেন একখানি আসনে বসিলেন, বলিলেন,— “জানিতে পারিয়াছি—তোমার অন্ম গ্রহে কারাগার চাইতে মুক্তি পাইয়াছি, তোমার অনুগ্রহে আমার মান, সন্ত্রম, জীবন রক্ষণ পাইয়াছে। সেদিন তোমারগৃহে আসিয়া অতুল আনন্দ ভোগ করিয়াছিলাম, কিন্তু তোমার নিকট যে আমি এত ঋণী, তাহা ত জনিতাম না।” “আপনার কারমুক্তিতে আমাদের যে কত আনন্দ হইয়াছে, তাহা আপনাকে কেমন করিয়া জানাইব ?” “আমার এমন মহোপকার তুমি করিয়াছ ; কিন্তু সে কথা অপ্রকাশ রাখিয়াছ ! আজি আমি সকলই শুনিয়াছি।” প্রমীত তখন অসঙ্গের নিকট শ্রুত নিজের কারামুক্তির ইতিবৃত্ত মঞ্জুলাকে জানাইলেন। কিন্তু ধৰ্ম্মপালের নাম প্রকাশ করিলেন না, অসঙ্গ তাহা নিষেধ করিয়াছিলেন। মঞ্জুলা বলিল ;– “আমি সেদিন দেবীকে প্রণাম করিতে গিয়াছিলাম । কুথtয় কথায় নিরপরাধে আপনার কারাবদ্ধের কথা তাহাকে জানাইয়াছিলাম মাত্র। দেবী দয়াময়ী, তিনি আপনার নির্দোযিত বুঝিতে পারিয়া আপনার