পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দশম খণ্ড.djvu/৪৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮ম সংখ্যা ] মঞ্জুল হাসিল, বলিল – *তিনি আমার জীবন রক্ষা झिाङन .” “তুমি আমাদের প্রাণ-মান মৰ্য্যাদা রক্ষা করিয়া চিরদিনের জন্ত আমাদিগকে কিনিয়া ফেলিয়াছ ।” “শ্ৰীচরণের দাসীকে ও কথা বলিবেন Fil 1'" “তুমি আমার পরম শহদ, প্রাণপিয় ভগিনী !” মঞ্জুল পালঙ্ক চাইতে নামির উৎপলার পদে মস্তক লষ্ঠিত করির প্রণাম করিল। উৎপলাও নামিলেন এবং দুই হাতে মঞ্জুলাকে ধরিয়া তুলিয়া উচ্ছ,সিত হৃদয়ে তাহাকে গাঢ় আলিঙ্গন করিলেন । উৎপল। তখন হাতে ধরিরা মঞ্জুলাকে লইয়া অস্তঃপুরস্ত গৃহকক্ষ পুকুর উদ্যান ইত্যাদি দেখাইতে লাগিলেন। উৎপলার কক্ষগুলি সুন্দর ও সুসজ্জিত । মঞ্জুল দেখিয়াই বুঝিতে পারিল, কমলপুরে তাহার নিজের কক্ষগুলি কারুকার্য্যে অথবা মূল্যবান দ্রব্যসম্ভারে উৎপলার কক্ষগুলি অপেক্ষা অনেক শ্রেষ্ঠ ; কিন্তু নিৰ্ব্বাচন ও সন্নিবেশ-পারিপাটো, প্রিয়জনের প্রীতি এবং প্রয়োজন সম্পাদনে এই গৃহিণী গৃহের নিকট কমলপুরের সেই প্রয়োজনহীন মহাৰ্ঘ সাজসজ্জাপূর্ণ অতি-অলঙ্কত বিপণী বা দ্রব্যভাণ্ডার মাত্র । উৎপলার শয়নকক্ষে বিস্তৃত পালঙ্কে দুগ্ধগুভ্র আস্তরণযুক্ত প্রশস্ত শয্যা, তাহাতে যুগা উপাধান। শয্যাপাশ্বে অধত্বরক্ষিত সপ্ত-আবলী স্বর্ণমেখলা, তাহারই পাশ্বে মনোহর করিয়া কক্ষগুলি সজ্জিত উৎপল

  • స్సెలీ

স্বর্ণ-শৃঙ্খল। এক কোণে শুভ্ৰ পাছক, মণিখচিত সিংহমুখ যষ্টি ; অন্ত কোণে ত্রিপদীর উপর মুকুর, কঙ্কতি, গন্ধচুর্ণ, কবরীবন্ধন স্বত্র, বিবিধ অঙ্গরাগ-সামগ্ৰী । কক্ষের এক । পার্থে মন্থণ কণ্ঠদণ্ডের উপর রক্ষিত পুরুষ পরিধেয় ধৌত কৌশেয়, ধুতি, উত্তরীয় ; নিকটেই রমণী-পরিধান-যোগ্য সাটী, প্রাবৃত ওঢ়নি, কঞ্চলিকা । মঞ্জুল বিস্মিতনেত্ৰে সাগ্রহচিত্তে দেখিতে লাগিল, কক্ষের সর্বত্র এক নবীন ভাব, অদৃষ্টপূৰ্ব্ব এক কমনীর চিত্র । শৌর্য্যমাধুর্য্যের এরূপ মিলন, সুন্দর আর মুনারীর এরূপ সামঞ্জস্ত, যুগের এরূপ অবিচ্ছিন্ন একত্ব মার কোথায় ও তাঁহার চক্ষুগোচর হয় নাই । তাহার নিজগৃছে ত সে ভাবের লেশ মাত্র নাই। মহারাজ্ঞী কারুবকীর কক্ষ ত রাজকক্ষ, সেখানেও মঞ্জুল এ ভাব লক্ষ্য করে নাই । অন্ত গৃহস্থ লোকের ঘর সংসার মধুলা কমই দেখিয়াছে । দেখিয়া দেখিয়া মঞ্জুল মুগ্ধ হইল। তাহার জীবনে সে কখনো এ সৌনার্যোর লীলা দেখে নাই, সুতরাং তাহার মহিমা কি অভাব কোন দিন অতুভব করে নাই । স্বাধীনীর জীবন যে চির অভাবময়, আর পরাধীন যে ঐশ্বৰ্য্যশালিনী—এক যে কিছুই নয়, দু’য়ের একত্বই যে পূর্ণ জীবন, মঞ্জুলার মনে ত কোন দিন সে কথা উদয় হয় নাই। অষ্ঠের ঐশ্বৰ্য্য দেখিয়াই লোকে নিজের অভাব বুঝিতে পারে, অনাসক্ত সংযমীর চিত্ত তাহাতে বিচলিত হয় না । কিন্তু সংসারে তেমন মহাত্যাগী সংষতবৃত্তি কয় জন ? মঞ্জুল বুঝিতে পারিল না, কিন্তু তাহার হৃদয়ের অন্তস্তলদেশে