Ꮏ" বঙ্গদর্শন ' -ইতিহাসে এমন অদ্ভুত কথা খুজিয়া পাওয়া যায় সুতরাং মোটের উপরে সমাজ-সংস্কারের প্রয়োজনীতি সম্বন্ধে, প্রচলিত সমাজসংস্কারক দিগের সঙ্গেও গুরুদাস বাবুর মতের মিল আছে । তবে মতের মিল থাকিলেও কার্য্যের মিল নাই। তারই জন্যই গুরুদাস বাবুকে প্রচলিত অর্থে সমাজসংস্কারক বলা সঙ্গত নহে । সমাজসংস্কারকের সচরাচর সমাজের গতির বেঙ্কটাই বাড়াইয়া দিবার জন্যই ল্যস্ত ; তার গতির দিকটা স্থির রহিল কি না, তৎপ্রতি র্তাহীদের তেমন সজাগ দৃষ্টি নাই। আর এই থানেই তাহাদের সঙ্গে গুরুদাস বাবুর যা কিছু বিরোধ। সাধারণভাবে সমাজসংস্কারকদিগের, সন্ধুদ্দেশ্যের সঙ্গে গুরুদাস বাবুর অস্তিরিক সহানুভূতিই আছে। এই জন্য আপনি নিষ্ঠাবান ও একান্ত স্মৃতি-অনুগত হিন্দু হইয়াও, গুরুদাস বাবু কখনো শ্রতি স্মৃতি বিরোধী সংস্কারক-সম্প্রদায়ের নিন্দাবাদে প্রবৃত্ত হন নাই। বরং তারা যে সাধু ইচ্ছার দ্বার প্রণোদিত হইয়া সংস্কারকার্য্যে ব্ৰতী হইয়াছেন, সেই ইচ্ছার সফলতার জন্যই, তাহাদিগকে “অগ্রপশ্চাৎ ও চারিদিক দেখিয়া শুনিয়া সাবধানে” চলিতে বলেন । * হিন্দুর সমাজানুগত্য এই সংযম ও সম্যকুদৃষ্টিই গুরুদাস বাবুর কৰ্ম্মজীবনের মূলস্বত্র সমাজের কল্যাণের জন্য, প্রয়োজন মত, তার প্রাচীন ও প্রচলিত বিধি-ব্যবস্থার পরিবর্তন করা যাইতে পারে। কোন চিন্তাশীল এবং বিশেষজ্ঞ হিন্দুই এ পরিবর্তনের একান্ত বিরোধী নহেন। প্রাচীনকে বর্জন করাই যে মহাপাপ, হিন্দুর বিবর্তন
- "জ্ঞান ও কৰ্ম্ম-২৮° পৃষ্ঠ৷ ぬ
[ ১২শ বৰ্ষ, বৈশাখ, ১৩১৯ না। যাহা প্রাচীন ও প্রচলিত তাহাকে ভাঙ্গাই যে অধৰ্ম্ম, গুরুদাস বাবুও এমন মুনে করেন না। আবশ্যক হইলে, হিন্দু তার দেবতার মন্দিরও তে ভাঙ্গিয়া থাকেন। কিন্তু সে ভাঙ্গার ভাব ও ধরণ পৃথক। সে ভাঙ্গতে র্তার দেবতাও লুপ্ত হন না, তার দেবভক্তিও নষ্ট হয় না । দেবতার পীঠস্থান বলিয়াই তো দেবমন্দিরের মাহাত্ম্য ও পবিত্ৰতা । তারই জন্য তে সামান্ত ইটকাঠের ঘর ভক্তের ভক্তির বিষয় হইয়া উঠে। হিন্দুর সমাজ, সেইরূপ, হিন্দুর ধৰ্ম্মের বহিরাবরণ ও কায়বৃহস্বরূপ ধৰ্ম্মাবহ ও পাপমুদ বলিয়। হিন্দুর শ্রতি যাহার বন্দনা করিয়াছেন, তিনি নিতান্ত নিরাকার ভাবময় নহেন। কেবল মানুষের হৃদয়আকাশেই তার প্রকাশ ও প্রতিষ্ঠা হয় না । যেমন প্রত্যেক মানুষের প্রাণে, তার ধৰ্ম্মবুদ্ধিকে আশ্রয় করিয়া, তিনি আত্মপ্রকাশ করেন ; , সেইরূপ যে সমাজে সে ব্যক্তি বাস করেন, সেই সমাজ দেহে, তার রীতিনীতি এবং বিধিব্যবস্থার মধ্যেও তিনি আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করিয়া থাকেন । এই জন্য প্রত্যেক সমাজের বিধিব্যবস্থা, সেই সমাজের প্রাণগত ধৰ্ম্মের বহিরঙ্গ ও বহিঃপ্রতিষ্ঠা হইয়া রহে । অতএব হিন্দু আপনার দেহকে যেমন দেবতার মন্দির বলিয়া ভাবেন, তারু দেহ-পুরে যেমন তিনি সৰ্ব্বান্তৰ্য্যামী ও সৰ্ব্বলোকসাক্ষী নারায়ণকেই একমাত্র পুরস্বামীরূপে দেখিয়া সংযত চিত্তে, পবিত্রভাবে দেহের সেবা করেন ; সেই রূপ আপনার সমাজকেও হিন্দু সেই ধৰ্ম্মাবহ ও পাপমুদ পরমপুরুষের বহিরঙ্গ ও কায়ব্যুন্ম বলিয়া ভক্তি করেন। এই ফারণেই নিষ্ঠাবান