পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/২৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

←br তাহা হইলে সবগুলি তুলিয়া দেখাইতাম ; স্থানতাব সত্ত্বেও কতকগুলি এখানে উদ্ধত করিয়া দিলাম, রসজ্ঞ পাঠক সেগুলির তাবপ্রবণতা ও প্রণয়ৈকরলতায় মুগ্ধ হইবেন সন্দেহ নাই। শ্রীকৃষ্ণের প্লেমোল্লাস ও একাগ্রতা এই পদগুলিতে উজ্জল মূৰ্ত্তি ধারণ করিয়াছে—ইহাদের প্রত্যেক চরণ, প্রত্যেক বাক্য, ভাবের এক একটা প্রস্রবণ ছুটাইয়াছে। শিশুকাল १हं, বন্ধুর সহিতে পরাণে পরাণ লেহ । না জানি কি লাগি কো বিহি গড়ল ভিন ভিন করি দেহ ॥ সই কিবা সে পিরীতি তার । আলস করিয়া পাসরিতে নারে কি দিয়া সুধিব ধার ॥ আমার অঙ্গের বরণ লাগিয়া পীতবাস পরে শ্যাম । প্রাণের অধিক করের মুরলী লইতে আমার নাম ॥ আমার অঙ্গের বরণ সৌরত যখনে যে দিকে পায় । বাহু পাসরিয়া বাউল হইয়া তথনে সে দিকে ধtয় ॥ লাখ কামিনী ভাবে রাতিদিনি যে পদ সেবিতে চায়। জ্ঞানদাস কহে আহীর নাগয়ী পিরীতে কিনিল তায় ॥ প্রিয়ের প্রণয়ে রাধার হৃদয়ে কি মধুর গৰ্ব্ব ! প্রিয়ের প্রণয়-কীৰ্ত্তনে তাহার কি আনন্দ, কত উল্লাস ! যব দেখা দেখি হয়ে হেন তার মনে লয়ে गछैन। ১২শ পদ, শ্রাবণ, ৩১৯ নয়নে নয়নে মোরে প্রিয়ে । পিরীতি আয়তি দেখি হেন মনে লয় সখি আমি তারে চাহিলে সে জীয়ে ॥ আহা মরি মরি মুঞি কি করিব আরতি । কি দিয়া সুধিব শ্যাম বন্ধুর পিরীতি ॥ রসিক নাগর যে নিতুই দুয়ারে সে বিন! কাজে কত আসে যায়। জ্ঞানদাস তবে কয় তোমার চরিতে যেবা লয় তাহা বা ক হব! তুমি কায় । কিন্তু ইহা কেবল গৰ্ব্বেখ তাবই নহে, ইহার সহিত প্রিয়তমের মাধুর্য্য ও সৌন্দৰ্য্য-স্মৃতিও জড়িত আছে, তাই এ সৌভাগ্যমদে তীব্রত না আসিয়া ভাববিহবলতা আসিয়াছে— হাসিয়া হাসিয়া মুখ নিরথিয়া মধুর কথাট কয়। ছায়ার সহিতে ছায়া মিশাইতে পথের নিকটে রয় ॥ আলে। সই সে জন মানুষ নয় । তাহার সঙ্গেতে পিরীতি করয়ে কি জানি কি তার হয় ॥ সহজে রসের আকার সে যে ভাবের অঙ্কুর তায় । বাতাসে বসন উড়িতে আপন অঙ্গেতে ঠেকাইয়া যায় ॥ চমক চলনি ওগিম দোলনী রমণী মানস চোর । জ্ঞানদাস কহে সো পিয়া পিরীতি মরমে পশিল তোর ॥ ভাবের নেশা--ভালবাসার তন্ময়ত প্রেমাদ্রীকুত “আমিত্বের” তরল ও সরল প্রসার এমন মধুরভাবে আর কোথাও বর্ণিত হইতে দেখিয়াছি কি না জানি না।