পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/২৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৬২ ( J• ) দ্বিরুক্তিকালে দ্বিরুক্ত অংশের পূৰ্ব্বে আকার আগম। এই শ্রেণীতে ধ্বস্তাত্মক ছাড়া অন্তরূপ শব্দও আছে। সংস্কৃত ভাষায় ফলাফল, যোগাযোগ, মতামত, এই শ্রেণীর বলিয়া মনে হয়। বৈয়াকরণের অবশু এগুলি নঞযোগে সিদ্ধ বলিবেন ৷ ‘ হলাহল’ "যথাযথ’ দেখিতে এইরূপ, তবে অবশ্য অন্য প্রকারে ব্যুৎপন্ন। বাঙ্গালায় খবরাখবর, শরীর অশরীর (?) এই শ্রেণীর। ধ্বন্যাত্মক শব্দে বহু বহু দৃষ্টান্ত আছে। যথা কপাকপ, গবাগব, সপাসপ, বরাবর অবশ্য এ দলের নহে )। রবীন্দ্র বাবুর শব্দতত্ত্বে অনেক উদাহরণ আছে । থমথমা, রবরবী, গড়গড়), চটচটা, ঝনঝনাতে আকার সর্বশেষে বসিয়াছে। সংস্কৃত হলহলা এই শ্রেণীর নহে কি ? (৷০ ) দ্বিতীয়াদ্ধের শেযে ইকার আগম। যথা, খড়খড়ি, গড়গড়ি (উপাধি ), চড়চড়ি, সড়সড়ি, টিকটিকি, ধুকধুকি । জরজারি একটু নিয়মভঙ্গ করিয়াছে। ( /0 ) প্রথমার্দ্ধের শেষে অীকার ও দ্বিতীয়াদ্ধের শেষে ইকার আগম। সংস্কৃত ভাযায় এরূপ নিয়ম আছে, যথা, দস্তদন্তি, নথানখি। এইরূপ বাঙ্গালায় কাণাকণি। অনেক স্থলে প্রথমাদ্ধের আকার পূৰ্ব্ব হইতেই আছে, যথা ধাক্কাধাক্ক, রশীরশি, জান, হানা প্রভৃতি ক্রিয়া হইতে নিম্পন্ন জানাজানি, হানাহানি, মারামারি । অনেক স্থলে আকার উচ্চারণে ওকার হইয়া যায় যথা, ছুটোছুটি, উঠে উঠি, হুলোহুলি । খুনোখুনি, মুখোমুখি প্রভৃতি একটু স্বতন্ত্র রকমের। দ্বনোদ্বনি, ঘুষোঘুষি প্রভৃতির বঙ্গদর্শন ৭স, এাবণ, ১৫১৯ ওকার পূর্ব হইতেই আছে । এই অনুচ্ছেদে বর্ণিত শব্দগুলি ধ্বন্তাত্মক নহে। রবীন্দ্র বাবুর বহুতর দৃষ্টান্ত আছে, অতএব মিছামিছি বকবিপি করিব না। পূৰ্ব্বাদ্ধের একার দ্বিতীয়াদ্ধে ইকারের মত উচ্চারিত হয় যথা টেপটিপি, মেশামিশি ( কখন কখন এরূপ উচ্চারণ ঘটে না, যথা ঘেসাঘে সি ) ; এইরূপ পূৰ্ব্বাদ্ধের ওকার দ্বিতীয়াদ্ধে উকারের মত উচ্চারিত হয়,যথা মোটামুটি, রোখারুখি, খোলাখুলি পোটলাপুটলি, বোচক বচকি রোয়ারুয়ি । ( to 0 ) দ্বিতীয়াদ্ধে স্বরের অন্যরূপে পরিবর্তন। এ শ্রেণীতে ধ্বষ্টাত্মক শব্দ আছে। অন্য শ্রেণীর শব্দও আছে। প্রথমার্দ্ধে যে স্বরই থাকুক সা কেন, দ্বিতীয়াদ্ধে তাহা আকারে পরিবর্তিত হয়, ইহাই সাধারণ নিয়ম। যথা,—টিপিয়া টাপিয়া, ঠিকঠাক, ঝোপ বীপ, মিটমাট, যুৎযাৎ, যো যা, যোগে যাগে, গোছগাছ, গোলগাল, হুকুমহাকাম, (ধ্বন্তাত্মক গুপগাপ), চুপচাপ, ধুমধাম, শুকনাশাকন, খোলাখালী, চুণাচাণ, চুণে উচ্চারণ ), তল্লীতল্লা, ইত্যাদি বহু উদাহরণ পাওয়া যায়। স্বরের অন্তরূপ পরিবর্তনও ঘটে। যথা কালোকোলো, খাটোখোটো, গ্যাগো, গ্যাটমগোটম, গ্যাটাগোট, গ্যামগোম, ঘাটঘোট, ঘাতঘোত, ঘেরাঘোরা, ঘা ঘো, ছাকছোক, টায়টোয়, টানটোন, ঠারেঠোরে, ঢাবাঢ়োব, দাগণেগ ফারফোর, ফঁাকেফেঁাকে, ভাতেভোতে, ভাবেভোলে, সাফসোফ, (এ গুলিতে ওকার; কাতুকুতু,কারিকুরি (?), গাইগুই, জারীজুরী, ফারিফুরি, বেড়েকুড়ে, ডালডুল, তাড়াতুড়ি,