পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Ե মদল রাজ নব সমাজ ভ্রমর ভ্রমণ চাতুরী ৷ তরল তাল গতি দুলাল নাচে নটিনী নটন সুর। প্রাণ নাথ করত হাত রাই তাহে অধিক পুর। অঙ্গ অঙ্গ পরশ ভোর কেন্থ রাত কায়ুক কোর s' জ্ঞানদাস , কহত রাস যৈছন জলদে বিজুরী জোর। মনের আনন্দে হৃদয়ের নৃত্যশীল গতি যেন এই কবিতার ছন্দের সহিত জড়িত হইয়। রহিয়াছে। এই একটা মাত্র ছন্দে জ্ঞানদাসের রাসানন্দ পর্য্যবসিত হয় নাই, বহুবিধ নূতন ছন্দোবন্ধে তাহা প্রকাশিত হইয়াছে। আরও কতকগুলি, ছন্দের পরিচয় আমরা এইখানে দিতেছি— চন্দন চান্দ কুসুম নব কিসলয় মন্দ পবন পিক রাব । বরিহ কপোত জোড়ে জোড়ে নাচত চিতক নিজ পর মাল ॥ ভালিরে ভালি অভিসার মদন সমাজে । রাধা রসবর্তী অতি রসে আরতি কামু রসিকবর রাজে। কুসুমিত কুঞ্জহি রঞ্জন মনসিজ নব নব রক্ষিণী মেলি । রসময় ভৃঙ্গ কতহু রস মধুকরী ভ্ৰমি ভ্ৰমি করু রস কেলি । ধনিরে ধনিরে ধনি দুই রূপ লাবণি ধনি বেদ গবি কত ভাতি । আর কে কহু কত দুহু রসে উনমত জ্ঞান কহে নাহি দিন রাতি ॥ বঙ্গদর্শন [ ১২শ বৰ্ষ, বৈশাখ, ১৩১৯ এই ছন্দে জয়দেবের প্রভাব বিলক্ষণ অনুভূত হয় । নুপুর ঘুঘুর মধুর বোল ঝনন ঝনন নটন রোল হাসি হাসি কেহ করত কোল , ভালি ভালি বোলনী । জ্ঞানদাস পড়ত তাল গায়ত মধুর অতি রসাল গুণত ভুগত জগত উমত হৃদয় পুভলী দোলনী ॥ এই ছন্দগুলির একটা মূৰ্ত্তি আছে, বচনবিষ্ঠাসের প্রতি দৃষ্টি পড়িবার পূৰ্ব্বেই শুধু স্পন্দনে সুরের সলিল-হিল্লোলে আমরা কবির ‘ হৃদয় পুতলী দোলন” স্পষ্ট অনুভব করিতে পারি ; কেবল ছন্দের গুণেই আনন্দরস মূৰ্ত্তিমান হইয়া আমাদের প্রাণে ঘাতপ্রতিঘাতের স্বষ্টি করে। ভাবব্যঞ্জক বাক্যাবলীর প্রতি লক্ষ্য ধাবিত ও নিবদ্ধ । হইবার প্রয়োজন হয় না, কবির অভি েএত ভাব আপনি যেন উছলিয়া উঠিয়া আমাদের সম্মুখেই উপস্থিত হয়। কাবাশিল্পে এ কৌশল বোধ হয় বঙ্গসাহিত্যে প্রথমে বৈষ্ণবকবিঙ্গ আমদানী করিয়াছেন। সঙ্গীতকলায় যেমন তালের ও সুরের পার্থক্যে অনেক ভাবের পার্থক্য আসে তেমনি কাব্য কলায় ও যে হইত্ত্বে পারে তাহা বঙ্গসাহিত্যে প্রথম দেখাইয়াছেন বৈষ্ণব কবিকুল ; এই জন্য বঙ্গ সাহিত্য চিরদিন র্তাহাদের কাছে ঋণী থাকিবে । তাই বলিয়। বৈষ্ণবকবি যে ছন্দ লইয়৷ ব্যতিব্যস্ত হইয়। পড়িয়াছিলেন তাহা নহে ; হৃদয়ের বিভিন্ন ভাবের অনুগামিনী ভাষা