৯ম সংখ্য। ] ভক্তির উপরেই এই অদ্ভুত সমাজানুগত্য গড়িয়া উঠিয়াছিল। - আর ইহাই উপাধ্যায়ের স্বদেশিকতার বিশেষত্ব ছিল। উপধ্যায় তার নিজের দেশকে ও সমাজকে যে চক্ষে দেখিতেন, আমর। আজি পৰ্য্যন্ত সে চক্ষু লাভ করিয়াছি বলিয়া মনে হয় না। আমাদের স্বদেশপ্রেম অতি হাল্কা বস্তু। আমরা এ পর্য্যন্ত গোট দেশটাকে ভাল বাসিতে শিখি নাই। আমরা দেশটাকে টুক্র টুক্রা করিয়া দেখি । কিয়দংশ বা তার ভাল, আর কিয়দংশ বা তার মন্দ, এরূপ ভাবে স্বদেশের সভ্য ল্ল ও সাধনার ভালমন্দের মধ্যে আমরা একটা ভাগ-বাটোয়ার করিয়া, যেটুকু আমাদের চক্ষে বা বিচারে ভাল লাগে, তাহাকেই ভালবাসি ; আর যেটুকু ভাল লাগে না, তাহাকে ঘৃণা করিয়া, তাহা হইতে নিজেদেরে যথাসাধ্য. দূরে রাখিতে চেষ্টা করি। কিন্তু প্রকৃত প্রেমের ধৰ্ম্ম এ নহে। ভালও-মন্দ-জড়িত ষে গ্রেমের পাত্র প্রেমিকের চিত্তকে আকর্ষণ করে, প্রেমিক তাহাকে গোটাভাবেই দেখে এবং গোটাভাবেই তাহাকে গ্ৰীতি করে। যার এ প্রেম নাই, সে এ ভালমন্দ-মিশ্রিত বস্তুর বা ব্যক্তির ভালকেওঁ ভাল করিয়া বোঝে না ; মন্দকেও ভাল করিয়া ধরে না । প্রেমকে লোকে অন্ধ বলে । কিন্তু প্রকৃত পক্ষে প্রেমের মতন এমন চক্ষুষ্মান আর কিছুই নাই। প্রেম অপরের চাইতে কম দেখে না; বেশী দেখে। আর বেশী দেখে বলিয়াই প্রেমপত্রের মন্দের মধ্যেও যে ভালটুকু লুকাইয়া আছে, সে উপাধ্যায়ের স্বদেশিকতা ¢ዓቖ তাহাকেও দেখে, শুধু মন্দৰ্টুকুকে দেখিয়াই তাহা হইতে ফিরিয়া আইসে না। উপাধ্যায় ভারতবর্ষকে এবং ভারতবর্ষের পুরাগত সভ্যতা ও সাধনাকে এইরূপ প্রেমের চক্ষে দেখিতেন বলিয়াই তার নিকটে স্বদেশ-বস্তু যেরূপে আত্মপ্রকাশ করিয়াছিল, আমাদের মধ্যে অতি অল্পলোকের নিকটেই যেরূপ করিয়াছে।. অনেক সময় এ বিষয়ে উপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার গুরুতর মতবিরোধ উপস্থিত হইয়াছে। তিনি যে চক্ষে স্বদেশকে ও স্বদেশী সমাজকে দেখিতেন, আমি সে চক্ষে ঠিক দেখি তাম না। অথচ উপাধ্যায় যে নিরতিশয় রক্ষণশীল ছিলেন, বা ঘেট যেমন আছে, যেটা ঠিক তেমনি থাকুক, ইহা যে তিনি চাহিতেন, এমন কথাও বলিতে পারি না । তিনি সংস্কারের পক্ষপাতী ছিলেন। যে সমাজ যুগে যুগে বিবৰ্ত্তিত হয় না, তাহা মৃত, জড় ; তার ভূতগৌরব যাহাই থাকুক না কেন, ভবিষ্যৎআশা যে কিছুই নাই, আমরা যেমন ইহা বুঝি, উপাধ্যায়ও ঠিক সেইরূপই বুঝিতেন। তাহাকে প্রকৃত অর্থে কিছুতেই “রি-অ্যাক্ষdist" (Re-actionary) ni HHG sẽG না । অথচ, অন্তপক্ষে তিনি যে প্রচলিত অর্থে সংস্কারক বা তাহাও নহে । কারণ তিনি স্বদেশকে যে ভাবে, যতটা ভাল বাসিতেন ও ভক্তি করিতেন, কোনও সংস্কারকের পক্ষে তাহা আদৌ সম্ভব বলিয়াই বোধ হয়.মা। সংস্কারকের অন্তঃপ্রকৃতিটা যে কি, তাহ নিজের জীবনে, আর যৌবন-কালের চারিপাশের বন্ধুবান্ধব Reformer foo,
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৫৮৪
অবয়ব