পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

శ్రీశ్చి8 আর রসের এ সকল প্রকাশ জীবদেহেতেই হয় বলিয়া, তাহার রূপ বা মূৰ্ত্তি আছে বলা কিছুতেই অসঙ্গত হয় না। . পুৰ্ব্বপ্রবন্ধে আমি বাৎসল্য-রসের রূপ বা মাতৃমূৰ্ত্তির কথাই বিশেষভাবে ও বিস্তৃতরূপে বলিয়াছি। আত্ম সৰ্ব্বপ্রথমেই বাৎসল্যের ও মাতৃমূৰ্ত্তির আলোচনা করিয়াছি এই জন্য যে এই মূৰ্ত্তিটা অনেকেই, ভাগ্যগুণে, স্বচক্ষে নিজের ঘরে বা প্রতিবেশীদের ঘরে কখনও না কখনও দেখিয়৷ থাকিবেন বলিয়াই আমার বিশ্বাস। কিন্তু যেমন বাৎসূল্যের, সেইরূপ অন্যান্য রদেরও এক একটা নিজ নিজ মূৰ্ত্তি আছে। যে ভাবে বাৎসল্যের মূৰ্ত্তি জননীর দেহ-যষ্টিকে আশ্রয় করিয়া তাহার অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ফুটিয় উঠে, সেই ভাবে যখন যে রস কোনও ব্যক্তির অন্তরে জাগিয়া তাহার মনপ্রাণকে অধিকার ও অভিভূত করে, সেই রসের আপনার বিশেষ মুটি সেই ব্যক্তির দেহে তাহার অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে আশ্রয় করিয়াই প্রকাশিত হয়। কোনও রসের মূৰ্ত্তিই নিতান্ত বিদেহী নহে। . এইরূপে যেমন বাৎসল্যের সেইরূপ মাধুর্যেরও একটা নিজস্ব মূৰ্ত্তি আছে।" দাস্ত এবং সখ্যেরও আছে । এ সকলের মধ্যে দাস্যরসের মূৰ্ত্তিটাই সৰ্ব্বাপেক্ষা সরল। কারণ দাস্যরসও তত জটিল নহে। প্রভুতে একান্ত আত্মসমর্পণ ও প্রভুর সেবাতে চরম কৃতার্থতা লাভ করাই দাস্যরসের ধৰ্ম্ম। প্রভুর প্রতি সন্ত্রম, তাহার সেবাতে নিষ্ঠ, ও সৰ্ব্বতোভাবে তাহার আনুগত্য সাধনেই দাস্যরস স্তৃপ্তিলাভ করে। সুতরাং এখানে বঙ্গদর্শন [ ১২শ বৰ্ষ, মাঘ, ১৩১৯ সন্ত্রম ও আনুগত্যের ভাবটাই প্রধান। এই সন্ত্রম ও আনুগত্যেরওঁ একটা রূপ আছে। এই রূপও আমাদের মুখের ভাবে, চক্ষের চাহনিতে, চলাফেরার, বসা দাড়ানর ধরণেতে ধরা পড়িয়া যায়। র্যাহাকে অতিশয় সন্ত্রম করি, তাহার দিকে চাহিতে গেলে, চক্ষু আপন হইতেই আনত হইয়া আইসে। শরীরের সমস্ত পেশিগুলি শিথিল হয় না, কিন্তু কেমন যেন একটা নম্রভাব ধারণ করে। আর প্রত্যেক অঙ্গপ্রত্যঙ্গে একটা প্রগাঢ় অকিঞ্চনত ফুটিয়া বাহির হয়। এই রূপের মধ্যে ভয়ের চিহ্ন নাই, কিন্তু বশ্যতা আছে ; লোভের চিহ্ন নাই, অথচ সেবার আকাঙ্ক্ষা আছে ; হীনতা-বোধ নাই, কিন্তু অপূৰ্ব্ব দীনতা আছে ; স্পৰ্দ্ধা নাই, কিন্তু বিলক্ষণ আব্দার আছে। সখ্য, বাৎসল্য,মাধুৰ্য্য যতটা জটিল, দাস্যরস ততট। জটিল নয় বলিয়া ইহা যে একান্ত একটা সরল বস্তু, ইহার মধ্যেও যে অদ্ভুত, অপূৰ্ব্ব বিচিত্রত নাই, এমন মনে করা সঙ্গত নহে। দাস্যরসেও অশেষ প্রকারের তরঙ্গরঙ্গলীলা প্রকাশিত হইয়া থাকে। আর এই রস যখন জীবের অন্তরে জাগিয়া তাহার অন্তবাহ সমুদায় বৃত্তি ও ইন্দ্রিয়গ্রামকে অধিকার করে,—প্রভুই যখন দাসের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ও উপজীব্য হইয়া বসেন,—তখন এই রস দ্বাসের স্বায়ুমণ্ডলীকে অধিকার ও র্তাহার পেশিসমূহে শক্তি সঞ্চর করিয়া, তাহার,অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ভিতর দিয়া, আপনার নিজস্ব রূপটকৈ ফুটাইয়া তুলে। দৈনন্দিন জীবনে সচরাচর আমরা দাস্যমূৰ্বিটা দেখিতে পাই না। কারণ