বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২শ সংখ্য। ] ব্যতীত আমি আর একটি কথা আপনাদের সমক্ষে উপস্থাপিত করিয়াছি;—সে কথাটি এই যে, ভাষায় তেজ, আবেগ, বল, জীবন, প্রাণ আনিতে বা রাখিতে হইলে লিখিত ভাষায় কথিত ভাষায় অধিকতর সংস্রব রাখিতে হইবে। সকল বিষয়েই আমরা প্রাণচহারাইতে বসিয়াছি, যদি ভাষায় বা সাহিত্যে একটু প্রাণ রাখিতে পারি বা আনিতে পারি, তাহা হইলেও আমরা ক্রমে সকল বিষয়েই প্রাণ পাইতে পারি। প্রাণের একটা দৃষ্টান্ত দিব। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের স্থানে আমরা ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষা করিয়াছি। তিনি সংস্কৃতাতুযায়িনী ভাষায় অদ্বিতীয় শায়েন শাহ সম্রাট্র— তখনও যেমন এখনও তেমনই। সেই বিদ্যাসাগর মহাশয় যখন দেশাচারের উপর খড়্গহস্ত চইয়া ভৎসনা করিতেছেন, তখন তাহার ভাষার ভঙ্গি শুকুন,—“ধন্য রে দেশাচার ! তুই শাস্ত্রের মস্তকে পদার্পণ করিয়াছি, ধৰ্ম্মের মৰ্ম্মভেদ করিয়াছিস্ ইত্যাদি।” দেখুন, এখানে বিদ্যাসাগর মহাশয়কেও ইতর লোকের মত ‘তুই মুই করিতে হইয়াছে। পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, নিম্নস্তরের প্রাণের ভাষা না লইলে প্রাণের আবেগ প্রকাশ করা ষায় নম । , প্রাণ, নিম্নস্তরে ; নিম্নস্তরের ভাষা আমা-" দিগকে লুইতেই হইবে। লিখিত ভাষা যত কথিত ভাষার সহিত কাছাকাছি থাকিবে, তত লিখিত ভাষায় জীবন পাওয়া যাইবে। লিখিত ভাষা কথিত ভাষাকে যত দূরে ফেলিয়া রাখিবে, ততই আপনি জীবন হাল্লাইবে, সংস্কৃত, ল্যাটিন, গ্রীকের মত হইবে, নানা গুণ থাকিলেও জীবন্তবং পড়িয়া থাকিবে। এখনও যে সংস্কৃত ভাষায় একটু একটু প্রাণ অভিভাষণ ৭২১ ধুক্‌ ধুক্‌ করে, সে কেবল দেবারাধনা কোথাও কোথাও একটু আধটু জীবিত আছে বলিয়া । ভাষাকে জীবন্ত রাখিতে হুইলে, তাহ সাধারণের বোধগম্য করা আবশ্বক ; আর ভাযাকে মুন্দর করিতে হইলে তাহাতে রস সংযোগ কর। অবশ্যক। রসময় ভাষাই সাহিত্যের আধার। \ . এই সময় বঙ্কিমবাবুর কথা আর একবীর বলিব । এবার বন্ধুভাবে, শিষ্য ভাবে নহে, বিরোধ ভাবে বলিল । আমরা জানি বিরোধে সাজুয্য শাঘ লাভ করা যায় । বঙ্কিমবাবু লিখিয়াছেন, ‘স্বষ্টি কৌশল কবির প্রধান গুণ, কবির আর একটি বিশেষ গুণ —রসোদ্ভাবন । রসোদ্ভাবন কাহাকে বলে, আমরা বুঝাইতে বাদনা করি, কিন্তু রদ শব্দটি ব্যবহার করিয়া আমরা সে পথে কাট দিয়াছি। এ দশায় প্রাচীন আলস্কারিকদিগের ব্যবহৃত শব্দগুলি এ কুলে পরিষ্ঠাৰ্য্য ; ব্যবহার করিলেই বিপদ ঘটে— - * এবম্বিধ পারিভাষিক শব্দ লইয়া সমালোচনার কার্যা সম্পন্ন হয় না। আমরা বাহা বলিতে চাঙ্গি, তাহ। অল্প কথায় বুঝাইতেছি। আলঙ্কারিকদিগকে প্রণাম করি।” আমরা গ্রহণ করিতে পারিলাম না ; প্ৰণাম করি। ‘রস’শব্দ, বঙ্কিমবাবুর ব্যঙ্গভাবে প্ৰণম্য অভাগা আলঙ্কারিকদিগের স্বল্প শব্দ নহে। অলঙ্কার-শাস্ত্র স্বল্প হইবার বহু বহু পূৰ্ব্বে ঋষিরা এই রসে লিটলায়মান ছিলেন ; ‘বেদ ,ল’য়ে ঋযি রসে ব্রহ্ম নিরূপিলা ।” ভারতচন্দ্রর এই শ্লিষ্ট শোকাদ্ধে তাছারই 發 র্তাহার উপদেশ র্তাষ্ঠীকে