পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓ® 8 হইয়াছে। মিনিটে মিনিটে টিষ্টবের গাড়ী সকল আসা যাওয়া করে । একখানি ট্রেন আদিতেছে দেখিয়া আমার সঙ্গাদিগকে বলিলাম যে তারা এই ট্রেণে উঠিবার ভাণ মাত্ৰ যেন করেন, কিন্তু একেবারে যেন উগতে চড়িয়া বসেন না। ট্রেণ আসা মাত্র সে ব্যক্তি তাঁহাতেও উঠিয়া পড়িল । আমরা উঠিব উঠিব^করিয়া আর উঠলাম না টেণখানা ছাড়িয়া দিল। তখন সে ব্যক্তি ট্রেণ হইতে লাফাইয়া পড়িয়া প্লাটফমে একখানা বেঞ্চে যাইয়া বসিয়া পকেট হইতে একখানা খবরের কাগজ খুলিয়া পড়িতে আরম্ভ করিল। তখন প্লাটফরমে আমরা ক’জন ছাড়া আর একজন যাত্রীও ছিল না। আমি আস্তে আস্থে এ ব্যক্তির কাছে যাইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম--“তুমি কি আমার পিছু লাগিয়াছ ?” “Are me ?” সে গলা ভারি করিয়া বলিল— “না।” . আমি বলিলাম—“তাই যদি, তবে তুমি গাড়ীতে চড়িয়া, আমি উঠিলাম না দেখিয়া নাবিয়া পড়িলে কেন ?”—সে ব্যক্তি ইহার কোন উত্তর দিতে পারিল না। তখন আমি বলিলাম—“দ্যাখ, আমার পিছনে লোক থাকুক তাতে আমার কোনও আপত্তি নাই ; কিন্তু কে আছে, এষ্টট মাত্র আমি জানিতে চাই।” একটু পরে বলিলাম—“তুমি আমাকে চেন ? “স্থা আপনাকে চিনি বই কি আপনি মিঃ— ” “এই আমার পক্ষে যথেষ্ট । এখন তোমার কৰ্ত্তব্য তুমি কর, আমার কর্তব্য আমি করিব। দুজনে একটা বোঝাপোড়া হইল, ভালই।” এ সময়ে আবার আর একখানি ট্রেণ আসিয়া পড়িল, আমরা সকলে তাহাতে উঠিয়া বসিলাম । you following বঙ্গদর্শন [ ১২শ বর্ষ, চৈত্র, ১৩১ ‘প্রথম প্রথম একটু বিরক্তি বোধ হইল ; কিন্তু ক্রমে আমোদ লাগিল । আমার বাড়ীতে আমার পুত্র ছাড়া আর তিনচারিটা বাঙ্গালী ও মাহারাটি যুবক এক সময় আমার সঙ্গে ছিল। এই ইংরেজ টিকটিকীদের লইয়া তাহার মাঝে মাঝে বড় তামাসা করিত। একদিন দুজন লোক আমার বাড়ীর সন্মুখের রাস্তায় দাড়াইয়া বাড়ী পাহারা দিতে ছিল । ছেলেরা দুথান বড় বই লইয়া, একটা কাল টেবিলক্লথ দিয়া ঢাকিয় জানালা খুলিয়া গিয়া তাহাদের দিকে বই দুখানিকে নির্দেশ করিয়া যেই দাড়াইল, আর অমনি গরিব বেচারীরা উদ্ধশ্বাসে সেখান হইতে সরিয়া গেল। তারা ভাবিল এই বইগুলো বুঝি ফটোগ্রাফের ক্যামেরা, আর ছেলেরা বুঝি তাদের ছবি তুলিয়, কাগজ পত্রে একটা হাঙ্গামা করিবার আয়োজন করিতেছে। এদের কেহ কেহ আমার ছেলেদের পিছনে পিছনেও যাইত। স্তার কার্জন ওয়াইলীর হত্যার পরে অনেক দিন পর্যন্ত ছেলেদের তাহদের উপরে দৃষ্টি খুবই বেশী ছিল, আমার উপর ততটা ছিল না । আর ছেলেরাও দুঃমি করিয়া বেচারীদের হায়রাণ করিয়া মারিত। তিনজনে তিন পথে খামক খামক ঘুরিতে যাইত। এ গলি ও গলি করিয়া গরিবদের ঘুরাইয়া আমিত ইহারা সারাদিন দাড়াইয়া দাড়াইয়া যখন সন্ধ্যার প্রকালে একেবারে অবসর হইয় পড়িত, তখন ছেলেরা তিন চার.মাইল বেড়াইবার জন্ত বাহির হইত। সেই অবসন্ন দেহে এতটা ঘুরিতে তারা পরিবে কেন ? তাই ছেলেদের গাড়ীতে করিয়া বেড়াইতে যাইবার জন্য অনুরোধ করিত। “মিঃ