পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২১৬ মুঙ্গেরের তাম্রশাসনে তাহার, দিগ্বিজয়ের উল্লেখ নাই; বঙ্গভূমিতে অধিকারবিস্তৃতিরও আভাস প্রাপ্ত হওয়া যায় না । মুঙ্গেরের তাম্রশাসন একখানি ভূমিদানপত্র। তন্ত্রার দেবপালদেব শ্ৰীনগর-( পাটলিপুত্র )-ভুক্তির অন্তর্গত ক্রিমিল-নামক বিভাগে মেসিকনামক নগর দান করিয়াছিলেন। কিন্তু দিনাজপুরের অন্তর্গত বোদালের গরুড়স্তম্ভে থোদিত লিপিতে দেবপালের দিগ্নিজয়ের উল্লেখ আছে । তাছা ভট্টগুরব-নামধের নারায়ণপালের সুবিখ্যাত মন্ত্রীর সংস্থাপিত । ভট্টগুরব যে নারায়ণপালের মন্ত্রী ছিলেন, সে কথা ভাগলপুরের তাম্রশাসনেও উল্লিখিত আছে। সুতরাং ভট্টগুরবের গরুড়স্তম্ভলিপির বর্ণনা প্রত্যাখ্যান করা যায় না । তাহাতে দেবপালের দিগ্বিজয়-ব্যাপারে বাহুবল অপেক্ষ ভট্টগুরবের আরাধ্য প্রপিতামহ দর্ভপাণি মিশ্রের নীতিকৌশলেরই প্রাধান্ত কীৰ্ত্তিত হইয়াছে। যথা :– “আরেবাজনকন্সতঙ্গজমদস্তিম্যচ্ছিলীসংহতেরাগৌরপিতুরীশ্বরেন্কিরণৈঃ পুষ্যৎসিতিয়ে গিরেঃ। মাৰ্ত্তগুস্তিময়ে(দয়ারুশজলাঞ্জাবারিরাশিদ্বয়tৎ নীত্য যন্ত ভুৰং চকার করদাং হীদেবপালে৷ নৃপঃ।” দেবপালের নাম বঙ্গীয় ঘটক ও কুলজগণের গ্রন্থেও অ পরিচিত নহে। ধৰ্ম্মপাল ও দেবপাল তাহদের পাটলিপুত্র ও মুদ্রগগিরির জয়স্কন্ধাবার হইতে বঙ্গভূমির শাসনকাৰ্য্য যথাবিধি সুসম্পন্ন করিতে সক্ষম হইতেন কি না, তাহাতে নানা সংশয় উপস্থিত হয়। কারণ, বীরেন্দ্রবংশাষলীলেখক কুলঙ্কগণের মতামুসারে এই সময়ে আদিশূর-নামক নরপতি গৌড়াধিপতি ছিলেন, জানিতে পারা যায়। বঙ্গদর্শন । [ ২য় বর্ষ, শ্রাবণ । পালবংশীয় চতুর্থ নরপালের নাম বিগ্ৰহ"পাল । ইনি ইতিহাসে প্রথম বিগ্রহপাল বলিয়া পরিচিত। ভট্টগুরবের পিতা কেদারমিশ্র সুরপালনামধেয় নরপতির প্রধান মন্ত্রী ছিলেন, এ কথা বোদালের গরুড়স্তম্ভে খোদিত আছে। সুরপাল প্রথম বিগ্রহপালের অন্ত নাম কি ন, তাহ নির্ণয় করিবার উপায় নাই। ভট্টগুরব পুরুষানুক্রমে পালবংশীয় নরপালের কৰ্ম্মচারী। র্তাহার পিতা কোন নরপতির মন্ত্রিত্ব করিতেন, তদ্বিষয়ে ভট্টগুরবের ভ্রান্তি সংঘটিত হওয়া সম্ভব বলিয়া বোধ হয় না । ভট্টগুরব কেবল স্বরপালের নামোল্লেখ করিয়াই নিরস্ত হন নাই ; তিনি যে উড়িষ্যা, দ্রাবিড় ও গুর্জর জয় করিয়াছিলেন, সে কথা ও লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন । প্রথম বিগ্রহপালের এরূপ কোন দিগ্বিজয় সাধন করার পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায় না। র্তাহার পুত্র নারায়ণপাল তাম্রশাসনে পিতার পরিচয় দিবার সময়ে এরূপ কোন দিগ্বিজয়ের উল্লেখ করেন নাই। কেবল বলিয়াছেন,—পিত। বিগ্রহপাল আজন্ম অজাতশত্রুর দ্যায় শক্রশূন্য ছিলেন। নারায়ণপালের তাম্রশাসনে বিগ্রহপালের যে পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায়, তাহা নিম্নে উদ্ধত হইল – “শ্ৰীমান বিগ্রহপলন্তংহুনুরজাতশত্রুরিব। জাতঃ শক্ৰবনিতাপ্রসাধনবিলোপিৰিমলাসিজলধারঃ ॥ রিপবে। যেন গুবীণাং বিপদামাস্পদকুতাঃ । পুরুষায়ুষদীর্ঘাণাং সুহৃদঃ সম্পদামপি । লজ্জতে তস্য জলখেরিল জঃ কস্ত। পত্নী বভূব কৃতহৈহরবংশভূষ। 象 যন্তীঃ শুটনি চরিতানি পিতুশ বংশে পর্তুশ পাবনবিধিঃ পরমে বভূৰ।" প্রথম . বিগ্রহপাল ।