পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ সংখ্যা । ] প্যারাসেলসাস । \రివa প্যারাসেলসাসকে এতদিন কেহই জানিঙে পারে নাই। চারি শতাব্দীর পুঞ্জীকুত আবর্জনায় এই মহাত্মার জীবনকাহিনী ভীষণ হইয়া দাড়াইয়াছিল । ব্রাউনিং সকল জঞ্জাল বিদীর্ণ করিয়া এই মহাত্মার গভীর হৃদয়ের ক্রিয়া বাহির করিয়া দেখাইরাছেন । পরে প্যারাসেলসাসের যে ইতিহাস দেওয়া গিয়াছে, উহা হইতে এবং র্তাহার গ্রন্থাবলী হইতে প্যারাসেলসাসের বহ্রিমান উদ্যম, তাহার বিনাশবীজ, তাহার এ জীবনে ক্ষণিক বিনাশ, হৃদয়যন্ত্রণায় ঠাইবি নরকভোগ, পরিশেষে আশার সঞ্চtরান্তে মুতু্য প্যারাসেলসাসের এই গভীরতম জীবন ব্রাউনিং বহু পুষ্পপত্রে সজ্জিত করিয়া,—কবিত্বের ইন্দ্র জালে অন্তরঞ্জিত করিয়া, প্রকাশ করিয়াছেন । এইরূপ বড় জীবন লষ্টয়া কারবার করিয়াই তিনি দেখাইতে পারিয়াছেন- মানুষের বুকে কতখানি ধরে, মামুব কত বড় ! যাহারা ব্রাউনিংএর কাব্যরাজ্যে ভ্রমণ করিয়াছেন, তাহাদের কাছে প্যারাসেলসাসের আরও একটু বিশেষ সৌন্দর্য্য আছে । ‘পারাসেলসাস’ কাব্যথানি ব্রাউনিংএর প্রথম লেখা—সৰ্ব্বপ্রথম না হইলেও ঠিকৃ তার পরেরই লেখা । তাই ব্রাউনিং-ভক্তগণ দেখিতে পাইবেন–র্তাহার যে কাব্যরাজ্যে মানবজীবনের আনন্দমহোৎসব চলিতেছে, প্যারাসেলসাস ঠিক তাহারই সম্মুখবর্তী ধ্বজমাল্যসজ্জিত বিরাঢ় তোরণ দ্বারের উপযুক্ত বটে । এখন প্যারাসেলসাসের কিছু ইতিহাস দিয়া, তার পর কাব্যথানির আলোচনায় প্রবৃত্ত হইব । ১৪৯৩ খৃষ্টাব্দে সুইজলণ্ডের জন্মাণভাগে আইনসাইডেলন-নামক স্থানে প্যারাসেলুলাসের জন্ম। বাল্যে তিনি মায়ের কাছে ধৰ্ম্মশিক্ষা করেন,—মৃত্যুকাল পর্য্যস্ত র্তাহার ঈশ্বরভক্তি অটুট ছিল। পিতা এই বালককে সেকালের গ্রীকৃ-ল্যাটিন শিখাইয়াছিলেন এবং অ্যালকিমি-বিদ্যাতেও দীক্ষিত করিয়া দিয়াছিলেন । প্যারাসেলসাস কিন্তু ক্রমে এই স্বর্ণপ্রস্থ বিদ্যাকে আর সম্মান করিতেন না । কয়েকজন খ্ৰীষ্টান ভক্তের নিকটে তিনি বাইবেল শিথিয়া শেষে ঠাঙ্গার পৈতৃক ৬ জারিবাবসায় অবলম্বন কবেন । তপনই গ্যালেন, র্যাfজস, অ্যাভি, সেনা প্রভৃতি পুরাতন হাতুড়ে কবিরাজদের প্রতি র্তাহার অবজ্ঞা জন্মে । তিনি ডাক্তারীর মূল আয়ত্ত করিতে চাহিয়াছিলেন—কেবল এখানে-সেখানে দুচারিটি হাতুড়ে ঔষধ আবিষ্কার করিয়া তৃপ্ত ছিলেন না। তাই তিনি ভ্রমণে বাহির হইলেন ;— রুমিয়ার জঙ্গলে, তাতার নোমাড়দের মধ্যে,— নানা স্থানে নানা লোকের সঙ্গে গিয়৷ মিশিতে লাগিলেন । তিনি বলিতেন, “চাকরবাকর, ছোটলোক-বড়লোক, ওঝা, বুড়া স্ত্রীলোক প্রভৃতি সকল শ্রেণীর লোকের সঙ্গে মিশিয়া অামি জ্ঞানসঞ্চয় করিয়াছি।” শরীরে-মনে, কাজে-কৰ্ত্তব্যে, আশায় ভরে জড়াইয়া যে মানুষ, প্যারাসেলসাস তাহারি মূল অবধি জানিয়া স্বাভাবিক উপায়ে চিকিৎসা করিবার ইচ্ছা করিয়াছিলেন । আমাদের দেশের চিকিৎসকগণ ইহার অর্থ কতদূর বুঝিবেন জানি না, আধুনিক ইউরোপীয় ডাক্তারই বা কয়জনে বুঝেন! পরম