পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VHIN বঙ্গদর্শন । [ ২য় বর্ষ, আশ্বিন। “আজ একবার বাচিতে চাই । আর এ আশাভয়ের আন্দোলনে ঘূর্ণ্যমান ইইয়া থাকিতে পারি না । সাধারণ লোকের সঙ্গে মিশিয়া সাধারণ হইয়া যাই ! কেন এ পতন ? কেন কিছু হইল না ? যাক, আমার কাজ ত আমি করিয়াছি । আমি ত জ্ঞানের পথে নিরস্তর চলিতে অ{লস্ত করি নাই । এই সামান্ত হৃদয়বেদন আজ তামাকে পরাভূত করিবে কি ? যে জন পৃথিবীর গুপ্তমন্দিরে জ্যোতিৰ্ম্ময়ী প্রতিমার জ্যোতি চক্ষে রাথিয়া সমস্ত প্রাসাদ অতিক্রম করিয়৷ মাসিয়াছে, সে কি সবশেষে ভূতের আর ফ্র চক্ষু দেখিয়া ভয়ে ঘুরিয়া পড়িবে ? কখনে নয় ! এই দেখ, অন্ধকার-মন্দিরদ্ধায়ে সে তাহার মস্তকাবরণ উন্মোচন করিয়া মাথ৷ পাতিয়া দাড়াইয়াঁছে—সে যদি জয়লাভ করিয়া পৌরোহিত্যে বৃত হয়, ভাল—ন হয়, সে দেবরোযে দগ্ধ, ভস্মীভূত হইয়া যাউক— সে-ও ভাল । সফলতা-বিফলতা আমার কি করিবে ? আমি ত সেই এক প্রেরণার দ্বার। হৃদয়ের আর সব বাঞ্ছাকে অভিভূত করিয়া রাখিয়াছি—জীবনের আর-সব মুখ জ্ঞানের জন্ত বিসর্জন করিয়াছি ! এ জীবনেও একদিন ত প্রেম ছিল ! যাকৃ, ভালই হইয়াছে। প্রেমপ্রীতির চর্চার দিকে গেলে, হয় ত প্রবৃত্তির কলুষে যৌবন পঙ্কিল হইয়া যাইত ! ( প্যারাসেলসাস প্রেমকে এইরূপেই জানিতেন বটে ! ) যা হোক, আমার সমস্ত জীবনটা একটা দিনের মত একটা লক্ষ্যের আলোকে দীপ্ত হইয়া রহিয়াছে। জীবন, মৃত্যু, আলো, অন্ধকার, জগতের রূপ-রসগন্ধ স্পৰ্শ-শব্দ, সৰ্ব্বত্রই আমি জ্ঞানকে খুজি য়াছি। একটি ক্ষুদ্র সত্যের আভাসে, আমি বায়ুত্রস্ত-দেবদারুর অন্ধকারে আবৃত গিরিপার্শ্ব হইতে অনুসন্ধান আরম্ভ করিয়া,তাহার অনিশ্চিত কম্পিত দীপ্তির অনুসরণে জলত্ত,যারের অসীম শূন্তবিস্তারে ধাইয়া গিয়াছি অবশেষে খনিজের শিরা-উপশিরা ছড়ানো আকরমধ্যে বহির আবরণে ঢাকা অামার তরল সত্যস্বর্ণের সাক্ষাৎ পাইয়া কৃতার্থ হইয়াছি। সমস্ত সৌন্দর্য্য, সমস্ত বিস্ময়, বস্ত্রের মত দুধারে খসিয়া পড়িয়া গিয়াছে,— আমি ভিতরের পঞ্জরট-দৃঢ় সত্যের আকারটি দেখিয়া তৃপ্ত হইয়াছি । স্থপ সৌন্দয্যের তীর হইতে, আমার এ তরঙ্গাকুল সমুদ্রে কতদূর আসিয়া পড়িলাম ! এ সমুদ্রে লাভ যাই হোক, ঐ তীরেও ত একটি মধুর স্বৰ্য্য সমুদিত হইয়া আছে— কিন্তু এ সমুদ্রে একি ভীষণতা—কেবল সুগভীর জলতল হইতে একটা ভয়ঙ্কর রশ্মি উপরের দিকে ছুটিয়া উঠিতেছে। Oh, bitter; very bitter যদি আবিষ্কৃত ঔযধখণ্ডগুলির মধ্যেও কোন একটা অলৌকিক ভেয়া পাওয়া যাইত—এক-ফোটা শক্তি, যাহার বলে বৃদ্ধের বলিত চৰ্ম্মে যৌবনের লাবণ্য সঞ্চার করা যাইত—একটা কৌশল, যাহাতে সোণ৷ তৈয়ার করা যাইত—একটা আকর্ষণ, যাহাতে চন্দ্ররশ্মি সংহত করিয়া শতধার প্রবাল রচনা করা যাইত !—কেবল আজ তাহা সক্রোধে দুরে নিক্ষেপ করিয়া প্রবলভাবে আমার পবিত্র জ্ঞানান্বেষণম্পূহ প্রতিপন্ন করিতাম। যাক, গিয়াছে যাক “ প্রাণ কেন শাস্ত হয় না যে, যদি আমার চেষ্টা