পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয়-সংখ্যা । { নিঃস্থ ত হয়, তদ্বারা পুষ্টিলাভ” করিয়া জীবশরীরের আয়তন বৃদ্ধি করা এবং শরীরের দৃঢ়তা বৃদ্ধি করা ব্যতীত কোষাবরণের অপর কোন কাৰ্য্য দেখা যায় না । কোষসামগ্রী-সম্বন্ধীয় আর একটা নুতন তত্ত্ব আবিষ্কৃত হইয়াছে। অধ্যাপক শুলঞ্জ টেschulzte ) প্রমুখ কয়েকজন আধুনিক পণ্ডিত বহু পর্য্যবেক্ষণ করিয়া দেখিয়াছেন, জীবমাত্রেরই কোষসামগ্রী একই উপাদানে গঠিত – উদ্ভিদের কোষে যে সামগ্ৰী বৰ্ত্তমান, গোমেষমহিষাদি জীবমাত্রেরই কোষেও সেই একই পদার্থ আছে । কুম্ভকার যেমন একই স্ত,প হইতে কদম লইয়া, ঘট কলস ও পাকનામ নিন্মাণ করে, প্রকৃতির কারখানায় কোষসামগ্রীর যে অক্ষ য়ু ভাণ্ডার আছে, সেই একই ভাণ্ডারস্থ একই উপাদান লইয়। প্রকৃতি দেবী, মানুষ গৰ্দ্দভ পণ্ডিত মূৰ্খ এবং বৃক্ষলতা সকলেরই স্বষ্টি করিতেছেন । এই বিশাল জগতে সেই কোষসামগ্রীই একমাত্র সজীব পদার্থ, এতদ্ব্যতীত আর সকলই }মজীব,—বহিস্থ পদার্থ হইতে পুষ্টিক র-থাদ - ওহণ-ক্ষমত। প্রভৃতি জৈবধৰ্ম্ম কেবল ইহাতেই বৰ্ত্তমান । প্রাণি ও উদ্ভিদ দেহ, উক্ত কোষসামগ্ৰী দ্বারা গঠিত, কাযেই ইহারা ও সজীব । এই মহাবিষ্কার দ্বারা জীববিজ্ঞানে এক মহাবিপ্লব উপস্থিত হইয়াছে । প্রাচীন পণ্ডিতগণ আশা-নিয়াশা, উদ্যম-অমুদ্যমের মধ্য দিয়া ধীরে ধীরে অগ্রসর হইয়া, জীবতত্ত্বের নানাবিভাগসম্বন্ধে যে সকল কষ্ট*ধিত আম্বমানিক সিদ্ধান্ত খাড়া করিয়াছিলেন,-কোৰসামগ্রীর আবিষ্কার ও জীবকোষ । ᏜᏄ তাহার অদ্ভূত ধৰ্ম্মের কথা প্রচারিত হওয়ায়, আজ তাহার সকলই ভূশায়ী হইয়া পড়িয়াছে। নবাবিষ্কৃত তত্ত্ব দ্বারা আজকাল জীবতত্ত্বের সকল জটিলতা দূরীভূত হইয়া, প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের অপরাপর শাখার ন্যায় এটাও একটা সরল ও সহজবোধ্য শাস্ত্র হইয়া পড়িতেছে । এখন দেথা যাউক, সৰ্ব্বজীবের গঠনোপাদান উক্ত কোষসামগ্ৰী কোন্‌কোন মৌলিক পদার্থের যোগে উৎপন্ন, এবং ইহার সজীবতা-ধৰ্ম্মটার উৎপত্তি কোথায়। বিশুদ্ধ কোষসামগ্ৰী প্রচুরপরিমাণে সংগ্ৰহ করিতে না পারিয়া, রসায়নবিদগণ ইহার বিশ্লেষণকায্যে প্রথমে বড়ই কষ্ট অনুভব করিয়াছিলেন ; এখন সহজে কোষসামগ্রীসংগ্রহের উপায় আবিষ্কৃত হওয়ায়, সম্প্রতি ইহার গঠনোপাদান আবিষ্কৃত হইয়াছে । পাঠকপাঠিকাগণ বোধ হয় আলবুমেন’-নামক এক প্রকার জৈবপদার্থের নাম শুনিয়া থাকিবেন, রাসায়নিকগণের মতে কোষসামগ্ৰীট সেই আলবুমেনশ্রেণার এক অতি জটিল পদার্থ ব্যতীত আর কিছুই নয় । আলবুমেনের দ্যায় ইহাতে ও কেবল অঙ্গার, অক্সিজেন, হাইড্রোজেন ও নাইট্রোজেন আছে। এথন পাঠকপাঠিকাগণ জিজ্ঞাসা করিতে পারেন—যদি আলবুমেন ও কোষসামগ্রী একই জাতীয় হইল, তবে একটি জড়ধৰ্ম্মী এবং অপরটি জীবধৰ্ম্মসম্পন্ন দেথা যায় কেন । এতদুত্তরে কিছুদিন পুৰ্ব্বে বিজ্ঞানবিদগণ বলিতেন,— আলবুমেন পূৰ্ব্বোক্ত মৌলিক পদাৰ্থচতুষ্টয়ের সহজ ও অজটিল মিশ্রণে উৎপন্ন,কিন্তু কোষসামগ্ৰীটা ঐ পদার্থ কয়েকটির জটিল-মিশ্রণ