পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৪২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8>W). লেখক ধৰ্ম্মে পতিত হইবেন। সাদৃশ্য যথেষ্ট এবং তাহার প্রমাণস্বরূপ ইহা বলিতে পারি যে, দূর হইতে র্তাহার সে মূৰ্ত্তি দেখিয়৷ চৌকীদারের দল ইতিপূৰ্ব্বেই “চমকি সন্ত্রমে উঠি যেন” দাড়াইয়াছিল । জমাদারসাহেব বারান্দায় সমাগত হইবামাত্র তাহারা একযোগে সিপাহী-ধরণে র্তাহাকে অভি-' বাদন করিল। সেখানে ঢালা-বিছানা ও চেয়ার-টেবিল, দুই রকম আসনেরই ব্যবস্থা ছিল। কিযণসহায় আরামটাই বুঝেন ভাল, অতএব অৰ্দ্ধনিমীলিত নেত্রে তাকিয়া ঠেসান দিয়া বসিলেন। তখন ঠাক্কার সমক্ষে “ভেট সওগাদ” উপস্থিত করার জন্ত চৌকীদার মহলে হুড়াহুড়ি পড়ির গেল । কোন ভূম্যধিকারীর প্রতাপ ইহার সঙ্গে তুলনীয় ? সরকারী খাজান না দিয়াও যে দারোগা এবং জমাদার কনষ্টেবলের দল এদেশে এতটা আধিপত্যসুখ সম্ভোগ করে, ইহাতেই হয় ত জমাদারের দল ঈর্ষান্বিত ; এবং সরকার বাহাদুরের বামহস্তস্বরূপ পুলিসবিভাগের এতটা নিন্দাবাদ যে শুল যায়, তাহার প্রধান কারণ সম্ভবত ইহাই । যাহা হউক, জমাদারসাহেব সেই উপহারের রাশি নিতান্ত অপ্রসন্নদৃষ্টিতে দেখিতেছিলেন না । পক্ষিজাতীয় উপহারের দিকে কটাক্ষ করিয়া তিনি দারোগা মসুবজালীর বাসার দিকে তর্জনী নির্দেশ করিলেন। গব্যরসের বেলায় অঙ্গুলিটি স্বতই সেদিন—মহাহিন্দু তিনি—ষ্ঠাহীর বাসগৃহের দিকে হেলিল । মুহুর্ভে সে সওগাদশুপ দুই দিকে চলিয়া গেল, অথচ কিষণসহায়কে একটি বাক্য ব্যর করিতে হইল ৰঙ্গদর্শন। পোষ না । বাক্যবলের চেয়ে বাহুবলটাই যে শাসনপ্রণালীর পক্ষে অধিকতর উপযোগী, এই দৃষ্টাস্তে তাহা প্রমাণ হয় কি না ? খানায় খানায় প্রতি সোম মঙ্গলবারে চৌকীদারদের যে হাজিরি হয়, তাহার বিবরণ হরেদরে একই-রকম। দারোগ বা জমাদার সাহেব রেজেষ্টারি উল্টাইরা “বিটে”র ক্রমানুসারে হাকিয়া যাইতেছেন, অমনি ১০।১৫২০ জন চৌকীদার খাড়া হইয়া উঠির জন্ম, মৃত্যু, চুরী-চামারি প্রভৃতির ছাপা প্রশ্ন পাঠশালার ছেলেদের মত মুখস্থ উত্তরে পূর্ণ করিতেছে, কেহ সে অবস্থায় গালি থাইতেছে, কাহাকে ও হুকুমমত আপনার কান আপনি মলিতে হইতেছে, এ দৃশু হিমালয় হইতে কুমারিক পর্য্যস্ত বোধ করি সর্বত্র সুপরিচিত । কিলট ঘুষোট চাপড়টা কখন বেত্ৰাঘাত—ইহারও অপ্রতুল নাই । জেলার বা মহকুমার হাকিম জরিমানার কাৰ্য্যকারিত সম্বন্ধে আস্থাবান, পুলিস কৰ্ম্মচারীদের এরূপ ধারণা হইয়৷ গেলে তাহার “কোসিসে”রও অভাৰ হয় না । ইহার ফলে তিনটাকার চৌকীদীর তিনমাস পরে কখন কখন লগদ দেড় টাকা গৃহজাত করিয়া থাকে, তথাপি উর্দি ও কুৰ্ত্তির মারা ত্যাগ করিতে পারে না । চৌকীদারপত্নী তাহাতে খুৎখুৎ করিলে ভৰ্ত্তার কাছে শুনিতে পায়— *ৰলিস কি ক্ষেপি, পুলিসের অমন ইজ্জতের চাকরী এক কথার ছেড়ে দেব ? সমরে: অসময়ে আমন কত দেড়টাকা হাতে আসৰে “ উর্দু ও হিনী প্রচলিত জেলার পাঠকমহাশয় উক্তিটুকুকে মনে মনে জয়