পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6t ওরে মৌন মুক, কেন আছিস নীরবে অস্থর করিয়া রুদ্ধ ? এ মুখর ভবে তোর কোন কথা নাই, রে আননাহীন ? কোন সত্য পড়ে নাই চোখে ? ওরে দীন, কণ্ঠে নাই কোন সঙ্গীতের নব তান ? তোর গৃহপ্রান্ত চুম্বি স্বমুদ্র মহান্‌ গাষ্টিছে অনন্ত-গাথা পশ্চিমে পুরবে, কত নদী নিরবধি ধায় কলরবে তরল-সঙ্গীতধারা হয়ে মূৰ্ত্তিমতী ! শুধু তুমি দেখ নাই সে প্রত্যক্ষ জ্যোতি ‘ণ সত্যে, যাহা গীতে, আননো, আশায়, ফুটে উঠে নব নব বিচিত্র-ভাষায় ! তব সত্য তব গান রুদ্ধ হয়ে রাজে রাত্রিদিন জীণশাস্ত্রে শুষ্কপত্রমাঝে ! $9 শক্তি-দম্ভ স্বার্থলোভ মারীর মতন দেখিতে দেখিতে আজি ঘিরিছে ভুবন ! দেশ হতে দেশান্তরে স্পর্শ বিষ তার শান্তিময়-পল্লী যত করে ছারখার ! শুচি শাস্ত্র, সরলভা-জ্ঞানে সুমুজ্জ্বল, স্নিগ্ধ স্নেহে রসসিক্ত, সন্তোষে শীতল, ছিল এই ভারতের তপোবনতলে বস্তুভারহীন মন ; সৰ্ব্ব জলেস্থলে পরিব্যাপ্ত করি’ দিওঁ উদার কল্যাণ, জড়ে জীবে সৰ্ব্বভূতে অবারিত ধান পশিত আত্মীয়রূপে ! আজি তাহ নাশি, চিত্ত যেথা ছিল, – সেথ। சுெ দ্রব্যরাশি, তৃপ্তি বেথা ছিল,—সেথা এল আড়ম্বর, শান্তি যেথা ছিল,—সেথ স্বার্থের সময় । বঙ্গদর্শন । [ বৈশাখ q কোরে না কোরে না লজ্জা, হে ভারতবাসি, শক্তিমদমত্ত ওই বণিক্বিলাসী ধনদৃপ্ত পশ্চিমের কটাক্ষসম্মুখে শুভ্র উত্তরীর পরি’ শান্ত সৌম্যমুখে সরল জীধনখানি করিতে বহন । শুনো না কি বলে তারা, তব শ্রেষ্ঠ ধন থাকুক হৃদয়ে তব, থাক তাহ ঘরে, থাক তাহ স্বপ্রসন্ন ললাটের পরে অদৃশু মুকুট তব ! দেখিতে যা বড়, চক্ষে যাহা স্তুপাকার হইয়াছে জড়, তারি কাছে অভিভূত হয়ে ধারে বারে লুটায়ে না আপনায় ! স্বাধীন আত্মারে দারিদ্র্যের সিংহাসনে কর প্রতিষ্ঠিত, রিক্ততার অবকাশে পূর্ণ করি চিত! tro হে তারত, নৃপতিরে শিখায়েছ তুমি ত্যজিতে মুকুট, দণ্ড, সিংহাসন, ভূমি, ধরিতে দরিদ্রবেশ ; শিখায়েছ বীরে ধৰ্ম্মযুদ্ধে পদে পদে ক্ষমিতে অরিরে ভুলি জয় পরাজয় শর সংহরিতে । কৰ্ম্মীরে শিখালে তুমি যোগযুক্ত চিতে । সৰ্ব্বফলপূহ ব্রহ্মে দিতে উপহার ! গৃহীরে শিখালে গৃহ করিতে বিস্তার প্রতিবেশী আত্মবন্ধু অতিথি অনাথে ! ভোগেরে বেঁধেছ তুমি সংযমের সাথে, নিৰ্ম্মল বৈরাগ্যে দৈন্ত করেছ উজ্জ্বল, সম্পদেরে পুণ্যকৰ্ম্মে করেছ মঙ্গল, শিখায়েছ স্বার্থ ত্যজি সৰ্ব্ব দুঃখে-মুখে . • সংলার রাখিতে নিত্য ব্রহ্মের সম্মুখে !