পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ꭸ" বঙ্গদর্শন । নোলজিগতত্তর নাই-ইন সেই ছেকে t বেলায় আমার ভারি নূতনরকমের মনে হইয়া, ছিল। মনে পড়ে, রাজবাটীর উদ্যানসন্নিহিত দ্বিতল গৃহে আমাদের বাসস্থান নির্দিষ্ট হইয়াছিল এবং সে গৃহে অন্তান্ত পুস্তকের মধ্যে একখানি কাদম্বরীর বাঙলা অনুবাদ দেখিতে পাইয়া গল্পটা খুব শীঘ্ৰ পড়িয়া শেষ করির ফেলিয়ছিলাম। নিষ্ঠুর ব্যাধ বৃক্ষকোটরের আশ্রয়স্থান হইতে পক্ষিশবিক অপহরগু করিয়া সজোরে আছড়াইয়া মারিতেছে—কাদম্বরীর এই করুণ চিত্র আমার তরুণ হৃদয়ে বড় আঘাত করিয়াছিল এবং পুঠিয়ার প্রাথমিক স্মৃতির সঙ্গে সে বেদনাটুকু মৰ্ম্মে মৰ্ম্মে জড়িত হইয়া আছে । ১২৭৭-৭৮ সনের পূজার পর পুনরায় ভূমির পুঠিয়ায় গেলাম। মহারাণীনতার অপত্যনিৰ্ব্বিশেষ স্নেহে এবং তাহার অলৌকিক পবিত্রজীবনের ছায়ায় আমার পরম লাভ হইল। তাহার আদেশে প্রত্যহ সন্ধ্যার প্রাকৃকালে.আমি রাজরাট যাইতাম এবং প্রহর বাজিয়া না গেলে বাসায় ফিরিতে পারিতাম না। এই আড়াই-তিন-ঘণ্টা মাতা কতক আমার সহিত, কতক বার্তাঙ্গর চারিপার্শ্ববর্কিনী আশ্রিত সধবা-বিধবাদের সঙ্গে কথাবার্তায় কাটাইতেন । আমার কুশলাদিজিজ্ঞস করার পরই স্বধাই তেন—“ত্মাজ কি কি দিয়ে খাওয়া হোল ?” তার পর অন্যান্ত কথা হইত। ছুটির দিন ছাড়া সচরাচর প্রাতে বা মধ্যাহ্লে রাজবাড়ী যাইতাম না, কিন্তু অনিবার্ষ্য কারণে কোন-. नि७३ সায়-কালীন মাতৃদর্শন বাদ গেলে আমি ক্লিক্স হইতাম, তিনিও লোক পঠাইয়া তৰ লতেন-কোন অম্লখ করে নাই ত? też w tris রাজবাটীর মহিলারা আমায়ু ঘরের ছেলে মনে করিয়া অসঙ্কোচে গল্পগুজব করিয়া যাইতেন, তাহাতে মধ্যে মধ্যে রাজবাটীর ছোট-বড় কৰ্ম্মচারীদের সমালোচনাও পূরামাত্রায় রীতিমত না চলিত, এমন নহে । কিন্তু বহিরে আসিয়া সে কথা কখন আমি কাহারও কাছে বলিতাম না। এই সময়ে মহারাণীমাতার সাবালিকাবস্থায় বিষয় কোর্ট-অব ওয়ার্ডস্মুক্ত হওয়ার পর, শেষে যিনি দেওরান ছিলেন, র্তাহাকে কৰ্ম্মচুত করায় প্রয়োজন হইয়াছিল এবং পিতৃদেবমহাশয়কে সে পদে নিযুক্ত করার কথা চলিতেছিল। স্বপক্ষ-বিপক্ষ সকল দলের কথা শুনিতে-বুঝিতে পরিতাম না, এমন নহে। কিন্তু পিতা কখন কিছু জিজ্ঞাসু করিলেও মৌনী থাকিতাম। এই খবর কি করিয়া মহারাণীমাতা জানিতে পারিয়া প্রীত হইয়াছিলেন । কিন্তু ইহা তাহারই দৃষ্টান্তের ফল। আমি দেপিতাম, কথাবার্তায় অধিকাংশসময়ে তিনি শ্রোতা মাত্র । আমার সমক্ষেই তাহার শয্যা রচিত হইত।, প্রকা ণ্ড দরদালানের মধ্যস্থলে শীতের সময় দেখিতাম, হৰ্ম্ম্যতলে একখানি মাছরের উপর সামান্ত পাতলা তোষক বৃহৎ একখণ্ড চাদরে আবৃত, তাহাতে একটিমাত্র লেপ ও উপাধান। গ্রীষ্মের দিনে একটি শীতলপাটিমাত্র । চারিদিকে আশ্রিত আত্মীয়া ও ননাথ ব্রাহ্মণবিধবাদের শয্যা পড়িত। কি শীত, কি গ্রীষ্মে প্লরিধেয় একমাত্র বারহাতের মোটামুণ । সুচরাচর ময়মনসিংহের জমিদারী পুখুরিয়া পরগণা হইতে সে বস্ত্র প্রস্তুত হইয়া আলিত। ' অগ্রহায়ণ-পৌষ-মাসে অপরাহ্লে প্রণাম করিতে ;