পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় সংখ্যা । ] শিক্ষাসমস্ত । (t(t প্রথমেই ত বদ্ধডান খাচার পার্থীর মত বাপম, ধনীর ছেলেকে হাতপা সত্বেও একেবারে পঙ্গু করিয়া ফেলেন। তাহার চলিবার জো নাই, গাড়ি চাই ; সামান্ত বোঝাটুকু বহিবার জো নাই, মুটে চাই ; নিজের কাজ চালাইবার জো নাই,জ্জাকর চাই । শুধু যে শারীরিক ক্ষমতার অভাবে এরূপ ঘটে, তাহা নহে, লোকলজ্জায় সে হতভাগ্য সুস্থ-অঙ্গপ্রত্যঙ্গসৰেও পক্ষাঘাতগ্রস্ত হইয়া থাকে। বাহা সহজ, তাহা তাহীর পক্ষে কষ্টকর,—যাহা স্বাভাবিক, তাহ তাহার, পক্ষে লজ্জাকর হইয়া উঠে। দলের লোকের মুখ চাহিয়া তাহাকে যে সকল অনাবশ্যক শাসনে বদ্ধ হইতে হয়, তাহাতে সে সহজ মমুষ্যের বহুতর অধিকার হইতে বঞ্চিত হয় , পাছে তাহাকে কেহ ধনী না মনে করে, এইটুকু লজ্জা সে সহিতে পারে না, ইহার জন্য পৰ্ব্বতপ্রমাণ ভার তাহকে বহন করিতে হয় এবং এই ভারে পৃথিবীতে সে পদে পদে আবদ্ধ হইয়া থাকে। তাহাকে কৰ্ত্তব্য করিতে হইলেও এই সকল ভার বহিয়া করিতে হয়— আরাম করিতে হইলেও এই সকল ভার লইয়। করিতে হয় —ত্ৰমণ করিতে হইলে সঙ্গে সঙ্গে এই সকল ভার টানিয়া বেড়াইতে হয় । সুখ যে মনে, আয়োজনে নহে—এই সরল সত্যটুকু তাহাকে সৰ্ব্বপ্রকার চেষ্টার দ্বারা ভুলিতে দিয়া তাহাকে সহস্ৰবিধ জড়পদার্থের দাসামুদাস করিয়া . তোলা হয়। নিজের সামান্ত প্রয়োজুনগুলিকে সে এত বাড়াইয়া তোলে যে, তাঁহার পক্ষে ত্যাগস্বীকার অসাধ্য হয়,— কষ্টস্বীকার করা অসম্ভব হইয় উঠে। জগতে এতবড় বন্দী, এতৰভু পঙ্গু আর কেহ নাই। مرb তবু কি বলিতে হইৰে—এই সকল, অভিভাবক, যাহার কৃত্রিম অক্ষমতাকে গৰ্ব্বের সামগ্ৰী করিয়া দাড় করাইয়া পৃথিবীর শস্তক্ষেত্রগুলিকে কাটার গাছে ছাইয়া ফেলিল, তাহারাই সন্তানদের হিতৈষী ! যাহারা বয়ঃপ্রাপ্ত হইয়া স্বেচ্ছাপূৰ্ব্বক বিলাসিতাকে বরণ করিয়া লয়, তাহাদিগকে বাধা দেওয়া কাহাবো সাধ্য নয়,-কিন্তু শিশুর, যাহারা ধূলামাটিকে ঘৃণা করে না, যাহারা রৌদ্রবৃষ্টিবায়ুকে প্রার্থনা করে,যাহারা সাজসজ্জা করাইতে গেলে পীড়াবোধ করে, নিজের সমস্ত ইন্দ্রিয় চালনা করিয়া জগৎকে প্রত্যক্ষভাবে পরীক্ষা করিয়া দেখাতেই যাহাঁদের সুখ, নিজের স্বভাবে স্থিতি করিয়া মাহীদের লজ্জা নাই, সঙ্কোচ নাই, অতিমান নাই, তাহাদিগকে চেষ্টার দ্বারা বিকৃত করিয়া দিয়া চিরদিনের মত অকৰ্ম্মণ্য করিয়া দেওয়া কেবল পিতামাতার দ্বারাই সম্ভব—সেই পিতামাতার হাত হইতে এই নিরপরাধগণকে রক্ষা কর । “আমরা জানি, অনেকের ঘরে বালকুবালিকা সাহেবিয়ানায় অভ্যস্ত হইতেছে। তাহার আয়ার হাতে মানুষ হয়, বিকৃত হিন্দুস্থানী শেখে, বাংলা ভুলিয়া যায় এবং বাঙালির ছেলে বাংলাসমাজ হইতে যে শতসহস্ৰ ভাবসুত্রে আজন্মকাল বিচিত্র রস আকর্ষণ করিয়া পরিপুষ্ট হয়, সেই সকল স্বজাতীয় নাড়ির যোগ হইতে তাহারা বিচ্ছিন্ন হয় —অথচ ইংরেজি সমাজের সঙ্গে তাহীদেরe সম্বন্ধ থাকে না । তাহারা অরণ্য হইতুে উৎপাটিত হইয়া বিলাতী টিনের টবের মধ্যে বড় হইতেছে। আমি স্বকৰ্ণে শুনিয়াছি, এই শ্রেণীর একটি ছেলে দুর হইতে কয়েকজন দেশীভাবাপন্ন মাষ্ট্ৰীয়কে