পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ সংখ্যা । ] বাংলার চিত্র। ➢ ዓ¢ বড়গিল্পী। হুঁ, তুমি আবার এইরকম সাক্ষ্য দাও, আর আমার প্রাণটা একেবারেই যাক্ ! আমার যে ২৪টা টাকা ছিল, তাহ এইরকম করিয়াই উড়িয়া গেল। যে নেয়, সে আর দিতে জানে না । - গোপাল। দিদিঠীরইণ, আমারে টাঙ্গ দিলি তা যাবে না। আমারে ত জানেন ? বড়গিল্পী। আচ্ছ, তুই বৈকালে আসিস, একজন টাকা দিবে কথা আছে ; যদি পাই, তবে তোকে দিব । চাটে জলখাবার নিয়ে য। ওলো নীরে, গোপালকুে চাঢ়ে থৈ দে । নীরদ একখানা ডালায় করিয়া কিছু মুড়কি আনিয়া গোপালের কাপড়ে ঢালিয়া দিল । গোপাল আর-এক সেলাম করিয়া প্রস্থান করিল। © মাণিক আসিয়া খবর দিল—“ছয়জন অতিথ আসিয়াছে, তাদের জলখাবার ও সিধা দিতে হবে ।” e বড়গিল্পী বলিলেন –“ওরে নস্থ, তুই এতগুলি ভাত পাতে রাখিয়া উঠলি যে ? মেজবে, আর ৬জনের সিধা সাজাইয়া দাও। নীরে, মা, একজোড়। নারিকেল বাহির করিয়া মাণিককে দে ত ; মাণিক, নারিকেল দুটা ছাড়াইয়া দে, কুরিতে হইবে।” বড়বে কাদম্বিনী আসিয়া বলিলেন-- "বড়ম, এবেলা. কর্মসের চাল রাধিব ? কতজন খাবে, তা ত জানি না।” বড়গিল্পী। ওমা ! আমি কতদিকৃ দেখিব ? : - এই বলিয়া তিনি মনে মনে হিসাব করিয়া বলিলেন—“এককুড়ি তিনজন ” তিলকপর, ঘট হাতে, ঝোল কাধে এক বৈষ্ণবী আসিয়া উপস্থিত হইল। • o একটি বালক তাহার ভোজন পরিত্যাগ করিয়া বৈষ্ণবীর নিকট দৌড়াইয়া-গিয়া তাহার প্রতি কৌতুহলাবিষ্ট হইয়া একদৃষ্টে তাকাইয় রহিল, যেন সেই বৈষ্ণবী ত বৈষ্ণবী নহে,— একটা গরিলা কি সিম্পাঞ্জী । বড়গিল্পী বলিলেন—“ওমা নীরে, বোঞ্চুমঠাকরুণকে চারিটা চাল দাও। বোঞ্চুমঠাকরুণ, তুমি ঐ ছেলেটাকে 'তোমার ঝোলার মধ্যে ভরির নিয়া যাও। ও বড় ষ্টুমি করে—এই দেখ, ভাত খায় না।” ইহা শুনিয়া সেই ছেলেটি একদৌড়ে বড়গিনীর কোলে আসিয়া বসিল। বৈষ্ণবী একটু হাসিয়া ভিক্ষা লইয়া প্রস্থান করিল। নীরদ বৈষ্ণবীকে ভিক্ষা দিয়া বারান্দায় গিয়া বসিলেন এবং ছোটগিল্পীকে বলিলেন— “খুড়িম), ও কি ফুল আঁকিতেছ?” ছোটগিল্পী। ফুল নয় লে,—এগুলি পদ্মপাত । * Ф е নীরদা। পদ্মপাতার বুঝি এত গাঢ় রঙ ? পাতার রঙ এত নীল হবে কেন ? আর একটু পাতলা করিয়া দাও। ঐ পদ্মের কুঁড়িটি বেশ হইয়াছে। বড়গিল্পী । ছোটবেীকে আর তোমার শেখাতে হবে না। ওর হাত খুব ভাল। তুই আমাকে একখান কুলা আনিয়া দে ত, আমি এই চালগুলা ঝাড়ি । • আজও ভোলার মা আসিল না। আহ, তার ছেলেট যেন কেমন আছে? ও গুরু ! ভোলার মা এ বাড়ীর চাকরাণী। তাহার এই সময়ে “জয় রাধে কৃষ্ণচৈতন্ত” বলিয়া পুত্রের অমুখ বলিয়া কাজে আসে नाही