পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৪০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব্যঞ্জনবর্ণের উচ্চারণ। শ, ষ, স । শ, ষ, স, এই তিনটি বর্ণের উচ্চারণ লইয়া মহাগোলযোগ। ইহাদের তিনেরই উচ্চারণ বঙ্গদেশে মূৰ্দ্ধন্ত ষ এবং পশ্চিমাঞ্চলে দস্ত্য ‘স’র দ্যায় ; পশ্চিমাঞ্চলে আবার ‘ষ’কে ‘খ’র দ্যায়ও উচ্চারণ করা হয়। অতএব ইহাদের প্রচলিত উচ্চারণ যে ভ্ৰমাত্মক, তাহ বিদ্বান মাত্রেই বুঝিতে পারেন ; কিন্তু একজন ষোল-আন পণ্ডিত র্তাহার ছাত্রগণকে পড়াইতেছেন – তিনি ও সন্ধিবৃত্তিকে যদ্ধিবৃত্তি বলিতেছেন, ছাত্রগণ তাঁহাই শিক্ষা করিতেছে। বিস্তার খনি পুণ্যক্ষেত্র কাশীধামে বিশ্বৰম মহামহোপাধ্যায় মহাশয় বসিয়া দেশদেশান্তর হইতে সমাগত বিদ্যার্থী ছাত্রগণকে বেদ, বেদাঙ্গ, ব্যাকরণ, নিরুক্তাদি শিক্ষা দিতেছেন, তিনিও শিবকে সিব বলিতেছেন। ছাত্রকে পাঠ দেওয়ার সময় বলিতেছেন ইহা তালব্য শ অর্থাৎ ইহার উচ্চারণ তালু হইতে হয়, অথচ নিজে উহাকে দন্ত হইতে দন্ত্য সকারের দ্যায় উচ্চারণ করিতেছেন। তালব্য শকারের উৎপত্তি তালু হইতে হয়, অতএব তাহার উচ্চারণ আমরা বঙ্গদেশে শিব বলিতে শকারের যেরূপ উচ্চারণ করিয়া থাকি, প্রায় তাহাই । ইংরেজী Shallশব্দের প্রথম বর্ণদ্বয়ের যে উচ্চারণ আমাদের ‘ষ’র উচ্চারণ সেইরূপ এবং তালব্য শকারের উচ্চারণও প্রায় সেইপ্রকার, • কেৰুৰ তদপেক্ষা কিঞ্চিৎ ঘোরমাত্র । মূৰ্দ্ধন্ত ৰকায়ের এবং তালব্য শ্বকারের উচ্চারণ প্রায় একপ্রকার; তাহাতে যে কিঞ্চিৎ পার্থক্য আছে, তাহ কেবল উহাদের উচ্চারণস্থানের কিঞ্চিৎ ব্যবধানহেতু। তালব্য শ'র উচ্চারণ করিতেণজহাগ্রকে ঘুরাইয়া মুৰ্দ্ধাতে লইয়া যাইতে হয় ; তাহাতেই মূৰ্দ্ধন্ত ৰ অপেক্ষা তালব্য শি’র উচ্চারণ কিঞ্চিৎ ঘোর হইয়া থাকে, উহাদের উচ্চারণে এইমাত্র সামান্ত প্রভেদ । এস্থলে একটি প্রশ্ন হইতে পারে যে, যদি উহাদের পার্থক্য এন্ত সামান্ত, তবে তালব্য শি’ এবং মুৰ্দ্ধন্ত ষ' এই দুইটি বর্ণের প্রয়োজন কি ছিল ? ইহার উত্তর পরপ্রবন্ধে দেওয়া যাইবে । দস্ত্য ‘স’র উচ্চারণ আমরা মূৰ্দ্ধন্য ষ'র স্তায় করিয়া থাকি, তাহা ভ্রম ; ইহার প্রকৃত উচ্চারণ আমরা স্বান, স্থান প্লভূতি শব্দে যেরূপ করিয়া থাকি, সেইপ্রকার অর্থাৎ ইংরেজী Sর দ্যায়। শ, ষ, স এই তিনটি বর্ণের অধিকার স্বতন্ত্র স্বতন্ত্র । ইতিপূৰ্ব্বে অমুস্বারবিসর্গশীর্ষক প্রবন্ধে পঞ্চ অমুনাসিকের যেমন পৃথকৃ পৃথকৃ অধিকার দেখাইয়া আসিয়াছি, এই ত্রিবর্ণেরও সেইপ্রকার এক এক বর্থে এক একটির অধিকার। তালব্য শ তালু হইতে উচ্চারিত, এইজন্ত তালব্যবর্গের অর্থাৎ চবর্গের প্রথম বর্ণদ্বয়ের উপর ইহার অধিকার, উহাদের উপর মূৰ্দ্ধন্য ষ কিংবা দস্ত্য স কখনই আসিতে পারে না। যথা, ছক্ষর, অনিশ্চয়, বহুিশর, দুশেছন্ত ইত্যাদি। মূৰ্দ্ধন্য ৰ মূৰ্ব হইতে উৎপন্ন, এই