পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(&8\', ‘তোমার বনে যাইতে ঔৎসুক্য হইতেছে, সুতরাং তোমার তার বিলম্ব করা উচিত মনে করি না' - কৈকেয়ী এই ভাবের বাক্যে রামচন্দ্রকে তাড়িত করিতেছেন । তার পরে রামচন্দ্রের বিদায়দৃশু। সেখানে মহারাজ দশরথ সংজ্ঞাহীন অবস্থায় শায়িত । একদিকে বশিষ্ঠ, সুমন্ত্র, সিদ্ধার্থ প্রভৃতি সচিব, , অপর দিকে শোকের নিঃশব্দ চিত্রপটের ছায় কৌশল্যাদেবী, তৎপাশ্বে আৰ্ত্তস্বরে রোরুদ্যমান মহিষ বর্গ, সম্মুখে কৈকেয়া,-- সমবেত ব্যক্তিবৃন্দের সমকণ্ঠে উচ্চারিত তিরস্কারের প্রতি ক্ৰক্ষেপহীন, একান্ত স্পদ্ধিত, দুরবস্থার চরম দৃষ্ঠে অবিচলিত, স্বীয় কাৰ্য্যের করুণ ও শোচনীয় ফল প্রত্যক্ষ করিয়া সম্পূর্ণরূপে অম্ৰিয়মাণ। কৈকেয়ী রাজ্ঞীর স্থায় প্রভুত্বব্যঞ্জক কণ্ঠে, বিদ্রোহীর স্তায় স্পদ্ধিতভাবে শতশত ব্যক্তির প্রতিকুলত উপেক্ষা করিয়া, সক লের যুক্তিতর্ক খণ্ডবিখণ্ড করিয়া, সত্যের ধ্বজ - উচ্ছত করিয়া পাপ অভিসন্ধিকে আশ্রয় দিতেছেন ; সেদিন তাহার উদাম প্রতিভা অশুভ ও অকল্যাণের জীবন্তবি গ্রহের দ্যায় অনিবাৰ্য্য হইয়া উঠিয়াছিল ; কিন্তু তন্মধ্যে যে একটা দুৰ্দ্দান্ত সঙ্কল্প ছিল, তাহা অামাদিগকে প্রতি মুহূর্বেত্তম্ভত করিয়া ফেলে এবং আমরা যে এক প্রবলপ্রতাপাম্বিতা সম্রাজ্ঞীর সমীপবৃত্ত, তাহা ক্ষণতরেও বিস্কৃত হইতে অবকাশ দেয় না । সুমন্ত্র দস্ত কট্রমটু ও হস্তে হস্তনিষ্পেষণ" করিয়া বলিতেছিলেন - "ইহার মাত৷ স্বীয় স্বামীর বধের উপায় এইভাবেই করিয়াছিলেনৃ-মাতার গুণ কস্তায় গাইবেন, ইহাতে আর; আশ্চর্য কি? আমােক্ষ কুঠারচ্ছন্ন হইলে আমরা নিম্ববৃক্ষের আশ্রয় , কখনই বঙ্গদর্শন। [৬ষ্ঠ বর্ষ ফাল্গুন । স্বীকার করিব না,-“ভল্গুরিচ্ছ হি নারীণাং পুত্রকোট্য বিশিষ্যতে"--স্ত্রীলোকের পক্ষে কোটি পুত্র হইতেও স্বামীর ইচ্ছা অধিকতর গণ্য, ইনি সেই পতিকে বধ করিতে দাড়াইয়াছেন। যেখানে রাম যাইবেন, আমরা সেইখানে যাইব,—অযোধ্যা বনে পরিণত এবং বন রাজধানীতে পরিণত হইবে।” বশিষ্ঠ ক্রুদ্ধকণ্ঠে বলিলেন--ভিরত যদি দশরথ হইতে জাত হইয়া থাকেন, তবে পিতৃবংশচরিত্রজ্ঞ কখনই রাজ্যগ্ৰহণ করিবেন না ।” এইরূপ শত শত আক্রোশপূর্ণ কথা শুনিয়াও -- “নৈব সভ্য ক্ষুভাতে দেবী ন চ স্ম পরিদুয়তে। ন চাস্ত মুখবর্ণন্ত লক্ষ্যতে বিক্রিয়া তদা ॥” তিনি কিছুমাত্র ক্ষুব্ধ বা বিচলিত হইলেন না—তাহার মুগণও কিছুমাত্র বিকৃত হইল না। : তাহার দৃঢ় ও অবিচলিত মুক্তি এইভাবে সকলের নিকট অতিশয় ভয়াবহ হইয়া উঠিয়াছিল। শুধু যখন রাজা বলিলেন --“ধনকোষ শূন্ত করিয়া সমস্ত ধন রামের সঙ্গে দেওয়া হউক, তিনি উহা বনে ঋষিদিগকে যাগযজ্ঞের জন্ত দান করিবেন ;–সৈনিকগণ, মিষ্টভাষিণী গণিকারা, পণ্যদ্রব্য সহ বণিকৃগণ ইহার অনুগমন করিয়া বনকে সুশোভিত করুক,— মন্নগণ ও শিল্পিগণ যাইয়। বনে এক নূতন রাজধানী স্থাপিত করুক-শোভাসম্পদ্রবর্জিত একান্ত নির্জন অযোধ্যায় ভরত অভিষিক্ত হইবেন।”—তখন কৈকেয়ী ক্ষণতরে ভীত্ত • ও বিচলিত হইয়াছিলেন, কিন্তু মুহূৰ্ত্তমধ্যে* আত্মসংযম করিয়া ক্রুদ্ধ রাজাকে তিনি দ্বিগুণ ক্রোধের ভাষায় বলিলেন—“পীতসারাংশ" " সুরার স্থায় এই রাজ্যকে তাহ হইলে আমার