পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় সপ্তম খণ্ড.djvu/৬৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বাদশ সংখ্যা । ] কাৰ্য্যের ঐক্য সংস্থাপিত হইবার সম্ভাবনা সংসার অভাবে শক্তিক্ষয় সাধিত হয়। আমাদের মধ্যে সংযমের অভাব সকল কার্য্যেই ' দেদীপ্যমান।” ভাষার সংযম ভাসিয়া গিয়াছে --তাহ পন্তে গদ্যে কেবল বস্তার হার অাবজর্জন বহন করিয়া ভাসিয়া চলিয়াছে । ভাবের সংযম বাধ ভাঙ্গিয় অপ্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রে ধাবিত হইয়াছে। নিয়ম শৃঙ্খলা সৰ্ব্বতোভাবে খণ্ড খগু হইয়া গিয়াছে। বিদ্যালয়ের বালকেরাও গুরুভক্তি বিসর্জন দিতে ইতস্তত করিতেছে না। এরূপ্ল ক্ষেত্রে ধীরভাবে কোন কৃথার বিচার করিবার উপায় নাই । কতকগুলি প্রতিকার পরের উপর নির্ভর করে,—কতকগুলি কেবল আমাদের উপরেই নির্ভর করে। স্বামরা সৰ্ব্বাংশে পরাধীন হইলে, এরূপ হইত না । আমরা এখনও সৰ্ব্বাংশে পরাধীন হই নাই । যে সকল বিষয়ে স্বাধীনতা অক্ষুন্ন আছে, সেই সকল বিষয়ে আমরা "স্বরাজের কিরূপ পরিচয় প্রদান করিতেছি, তাহার প্রতি দৃষ্টিপাত করিলে, সকলেই তাহ হৃদয়ঙ্গম করিতে পারেন। আমরা যদি ইহা"কেই আমাদের কার্য্যক্ষেত্র করিয়া লইয়া কাৰ্যারম্ভ করি, তাহ হইলে, কার্যের ঐক্য সাধিত হইতে পারে। কিন্তু এখানেও মতের অনৈক্যের অভাব নাই। কেহ বলিতেছেন— "এই পথই পথ।” কেহ বলিতেছেন– “as সকল বিষয় পড়িয়া থাকুক, আপাতত উহাদের প্রতুি দৃষ্টিপাতের প্রয়োজন নাই!” ' ক্ষুদ্র প্রারম্ভকে প্রত্যাখ্যান করিবার বহু গালতি হইলে, বৃহৎ পরিণাম লাভ করিতে পায় বা না। সৰ্ব্বাগ্রে চুড়া গঠন ঐক্য বাক্য অনৈক্য। ند ہ راف করিয়া, তাহার পর প্রাসাদরচনার অগ্রসর হইতে গেলে আকাশে * অট্টালিকা নিৰ্ম্মাণ করিতে হয় ! মতুের অনৈক্য থাকিতে ক্লার্য্যের ঐক্য সাধিত হইবার সম্ভাবনা নাই বলিয়া বসিয়া থাকিলে চলিবে না। মতের ঐক্য সাধিত করিবার জন্তই যত্ন, করিতে হইবে। তাহার উপায় কি ? আমাদের মধ্যে কি কোন বিষয়েই মতের ঐক্য নাই ? ক্ষুদ্র হউক, বৃহৎ হউক, যেখানে মতের ঐক্য আছে, সেখানে আমরা একত্র দাড়াইতে পারিব না কেন ? “ আমরা স্বদেশশিল্পের উন্নতিসাধন করিতে চাই। প্রয়োজন মত বিদেশীয় পণ্যের বর্জন ব্যতীত স্বদেশশিল্পের উন্নতিসাধনের উপায়াস্তর না থাকায়, আমরা প্রয়োজনানুরোধে বিদেশী বর্জন করিতে চাই। আমাদের শিক্ষার ব্যবস্থা আমাদের প্রয়োজনসাধনের উপযোগী করিয়া তুলিতে চাই। এই তিনটি বিষয়ে কোনরূপ মতের অনৈক্য দেখিতে পাওয়া যায় না। কিরূপ রাজশাসন আমাদের লক্ষ্য, তদ্বিয়েও মতের অনৈক্য বড় অধিক নছে। যেখানে অনৈক্য • আছে, তাহ ছাড়িয়া দিয়া, যেখানে—যতদূর— ঐক্য আছে, তাহ লইয়া'আমরা কি এক হহুঁৱা' উঠতে পারি না ? মন্দিরচুড়া কিরূপ হইবে তাহার কথা আপাতত রাখিয়া দিয়া, আমরা কি ভিত্তিস্থাপনে এক হইয়া কাৰ্য্য করিতে পারি না ? বন্ধু তাহাতে অসম্মত। তিনি বলেন—“চুড়া যেরূপ হইবে, তাহার উপযোগী করিয়াই ভিত্তি স্থাপিত করিতে হইবে।” তর্ক অকাট্য। তাহার জন্যই বন্ধুবিচ্ছেদ খটিয়া গিয়াছে। * ,