বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় সপ্তম খণ্ড.djvu/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१७ তোমার হৃদয়কম্প অঙ্গুলির মত আমার হৃদয়তন্ত্রী করিবে প্ৰহত । সঙ্গীততরঙ্গধ্বনি উঠিবে গুগুরি সমস্ত জীবন ব্যাপি থরথর করি।” পুনশ্চ-- o • “কার এত দিব্য জ্ঞান কে বলিতে পারে মোরে নিশ্চয় প্রমাণ, পূৰ্ব্বজন্মে নারীরূপে ছিলে কিনা তুমি আমার জীবনবনে সৌন্দর্য্যে কুমুমিপ্রণয়ে বিকশি ? মিলনে আছিলে বাধা শুধু একঠাই, বিরহে টুটিয়া বাধা আজি বিশ্বময় ব্যাপ্ত হয়ে গেছ, প্রিয়ে তোমারে দেখিতে পাই সৰ্ব্বত্র চাহিয়ে ! ধূপ দগ্ধ হয়ে গেছে গন্ধবাষ্প তার পুর্ণ করি ফেলিয়াছে আজি চারিধার। গৃহের বনিতা ছিলে টুটিয়া আলয়— বিশ্বের কবিতারূপে হয়েছ উদয় ।” অবগু এ কথা ধলা নিম্প্রয়োজন যে, কবিজীবনের এই অংশের রচনা সমস্তই કરું' সৌন্দর্য্যের প্রতিমাকে প্রত্যক্ষভাবে সম্বোধন করিয়া পূজা নহে। তবে এই সময়ের • উল্লেখযোগ্য সমস্ত রচনাই- এই ভাবে অল্পপ্রাণিত। কবির স্বর্ণলেখনীপ্রস্তুত "সমুদ্রের প্রতি”, “বসুন্ধরা”, “উৰ্ব্বশী”, “সোনার তরা", “নিরুদ্দেশ যাত্ৰা”, “স্বৰ্গ হইতে বিদায়” ইত্যাদিতে এই • মহাভাবের প্রতিধ্বনি স্পষ্ট ধ্বনিত হইতেছে শুনিতে পাওয়া যায়। যৌব-A নের পূর্ণ সুবেগের সহিত সৌন্দৰ্যসত্ত্বোগের চিন্তু বিশদভাবে অঙ্কিত। —কোথাও বা প্রিয়াবিরহব্যথায় ব্যথিত হৃদয়ের তপ্ত সুশ্ৰুজৰ,— কচিদ্ৰ বুভুক্ষিত হৃদয়ের বিরহান্ত মিরনের দুৰ্জ্জয় আনন্দোচ্ছ,সি বঙ্গদর্শন । [ ৭ম বৰ্ষ, জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৪ এই সময়ের রচনাগুলির মধ্যে আর একটি অপূৰ্ব্বরহস্যময় অথচ ভারতবাসীর চিরপরিচিত ভাব ধীরে ধীরে ফুটিয়া উঠিতেছে দেখিতে পাওয়া যায়। কৈশোরে যাহার আহবানবাণী খেলাঘরের খেলার অবকাশে শুনিতে পাইয়া ত্রস্ত্রনেঐে চতুর্দিকে দৃষ্টিপাত করিতেন—এখন সেই আহবানকারী দেবতাকে নিখিলবিশ্বের প্রাণের ভিতর এবং আপন মানবাত্মার গৃঢ়তম আনন্দের ভিক্টর যেন তিনি অনুভব করিতেছেন ;—যিনি সুন্দর, বিশ্বের সমগ্র সৌন্দর্য্য যাহার অঙ্গ, যিনি চিরপুরাতন হইয়াও ঋষিগণের নিকট, কবিগণের নিকট নিত্যনুতন, তাহাকে যেন অন্তরে-বাহিরে দেখিতে পাইতেছেন। তাই জগতের দিকে চাহিয়া তাহাকে বলিতেছেন— “জগতের মাঝে কত বিচিত্র তুমি হে তুমি বিচিত্ররূপিণী— আলোকে ঝলসিছ নীলগগনে, আকুল পুলকে উলসিছ ফুলকাননে, হালোকে ভূলোকে বিসিছ চলচরণে, তুমি চঞ্চলঞ্জামিনী । মুখর নুপুর বাজিছে সুদূর আকাশে, .অলকগন্ধ-উড়িছে মদ বাতাসে, মধুর নৃত্যে নিখিলচিত্তে বিকাশে e কত মঞ্জুলরাগিণী । কত না বর্ণে কত না স্বর্ণে গঠিত কত যে ছন্দে কত সঙ্গীতে রটিত ‘কত না গ্রন্থে কত না কণ্ঠে পঠিত তল অসংখ্য কাহিনী। জগতের মাঝে কত বিচিত্র তুমি হে “ তুমি বিচিত্ররূপিণী।” তাই আপনার নিভূত হৃদয়ের দিকে অদ্ভুত