পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় সপ্তম খণ্ড.djvu/৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

so बन्नमर्थन। [ ৭ম বর্ষ, জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৪ এবং প্রাণের ভালবাসার মধ্যে একপ্রকার অভেদ-ব্যাস প্রভেদ আছে, আর, সে যে প্রভেদ, তাহার গোড়া’র কথা হ’চ্চে প্রতিযোগিতা অর্থাৎ পাশ্চাত্যবিজ্ঞানশাস্ত্রে যাহাকে বলে “Polarity কিনা মিথুনীভাব। প্রাণকে ভালবাসে, আবার, স্ত্রী যেভাবে পুরুষকে ভালবাসে, প্রাণ সেইভাবে জ্ঞানকে ভালবাসে। রূপকচ্ছলে বলা যাইতে পারে যে, নবেদিত স্বৰ্য্য যেভাবে পদ্মিনীর প্রতি চক্ষু "উন্মীলন করে, নবোদিত জ্ঞান সেইভাবে প্রাণের প্রতি চক্ষু উন্মীলন করে ; তার সাক্ষী —মনুষ্যবিতারের আদিমবয়সে পৃথিবীতে জ্ঞানের যখন সবে-মাত্র অরুণোদয় দেখা দিয়াছিল, তখন জ্ঞানের কার্য্যই ছিল—প্রাণ কিসে তাল থাকে, অহোরাত্র কেবল তাহারই পন্থায় ঘুরিয়া - বেড়ানো। আবার, মুরভি নিশ্বাস ছাড়িয়া পদ্মিনী যেভাবে নব বিভাকরের প্রতি হৃদয়দ্বার উন্মুক্ত করে, প্রাণ সেইভাবে জ্ঞানের প্রতি হৃদয়দ্বার উন্মুক্ত করে ; —জ্ঞানকে পাইলেই • প্রাণ তাহার নিকটে আপনার নিগুঢ় অস্তরের কথা খোলে-বিন বাক্যে অবগু, কেন না, জ্ঞান শ্রোতা নহে— জ্ঞান দ্রষ্টা ; জিজ্ঞাসা বটে শ্রোত, আর, সেইজন্ত তাহার সাঙ্কেতিকচিত্ন কর্ণাকৃতি ( ) এইরূপ —ফলে, জ্ঞানের চক্ষে আকারইতিই বাক্যের চূড়ান্ত • একই আমেৱ অষ্ণুর যেমন আঁটির দলযুগলের জোড়ের মাৰখান হইতে দুই দিকের দুই ড্রাল হইয় হাঁৰিয়া ৰালি, হ্য এক - ভালবাস তেমনি পুরুষপ্রকৃতির দাম্পত্যবন্ধনের মাঝখান হইতে দুইভাবের দুইতরো ভালবাসা হইয়া ছটুকিয়া বাহির হয়। এখন জিজ্ঞাস্ত এই যে, স্ত্রীর প্রতি পুরুষের ভালবাসাই বা কি-ভাবের ভালবাসা, আর, পুরুষের প্রতি স্ত্রীর ভালবাসাই বা কিভাবের ভালবাসা ? যথন দেখিতেছি যে, স্বামী নববিবাহিত স্ত্রীকে “তুমি আমার ভব-জলধি-রত্ন” বলিয়া অধিকার করে, তখন তাহাতেই বুঝিতে পারা যাইতেছে যে, স্বামীর ভালবাসা অধিকার-প্রধান-স্বামিত্ব প্রধান—পাওয়া-প্রধান ; পক্ষাস্তরে, যখন দেখিতেছি যে, স্ত্রী অকথিত ভাষায় “আমি তোমারই” বলিয়া একান্ত অধীনা-ভাবে স্বামীর আশ্রয় যাদ্ধা করে, তখন তাহাতেই বুঝিতে পারা যাইতেছে যে, স্ত্রীর ভালবাসা অধীনতাপ্রধান-চাওয়া-প্রধান, আর, চাওয়া মুখ খুলিতে পারে না বলিয়া লজ্জা-প্রধান- এখন দেখিতে হইবে এই যে, পাওয়া বা অধিক্রিয়া বা উপলব্ধিক্রিয়া জ্ঞানের যেমন স্বভাবসিদ্ধ ধৰ্ম্ম, চাওয়া বা অভাবজ্ঞাপন বা ক্রনন প্রাণের তেম্নি স্বভাবসিদ্ধ ধৰ্ম্ম পুরুষের প্রতি স্ত্রীর যেরূপ চাওয়া-প্রধান ভালবাসা, তাহা প্রাণঘ্যাসা-মনের ভালবাসা-সংক্ষেপে প্রাণের ভালবাসা ; আর, স্ত্রীর প্রতি পুরুষের যেরূপ পাওয়া-প্রধান ভালবাসা, তাহা । জ্ঞানঘ্যাসা-মনের ভালবাসা-সংক্ষেপে জ্ঞানের ভালবাসা । স্ত্রীর প্রাণের ভালবাসা একপ্রকার জ্ঞানশূন্ত অহেতুক ভালবাসা ; রাধাকে তাই কবিরা বলেন “উন্মাদিনী রাধা”। পক্ষাস্তরে, পুরুষের জ্ঞানের ভালবাসা একপ্রকার রত্নচেন ।

  • খ্ৰীণমাদ্যং প্রশয়বচনং ৰিভ্ৰমো হি প্রিয়েৰু।

কালিদাস-মেঘদূত ।