পাতা:বঙ্গভাষা ও সাহিত্য - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

,6ነb” বঙ্গভাষা ও সাহিত্য নাই। অন্তঃপুৰীতে অপরিচিতের প্রবেশের হঠকারিতার জন্য রাজহস্তীকে তঁহাকে পদদলিত করিতে নিযুক্ত কবেন এবং রাজপুবীর বৃহৎ সারমেয়কে তঁাহার বিরুদ্ধে লেলাইয়া দেন। রাজহস্তী মাথা হেঁট করিয়া বসিয়া শুণ্ড দ্বারা অভ্যর্থনা জানাইল এবং অশ্রু বিসর্জন পূর্বক রাজভক্তি জানাইল । সারমেয় লাঙ্গুল হেলাইয়া রাজ-সন্ন্যাসীব পদতলে লুটাইয়া পড়িল। তখন অদুনা উচ্চৈঃস্বরে কঁাদিয়া উঠিলেন এবং বলিলেন, “বনের পশু প্ৰভু তোমাকে চিনিতে পারিয়াছে। কিন্তু মন্দভাগিনী আমি তোমাকে চিনিতে পারি নাই।” গোবিন্দচন্দ্ৰ পুনরায় রাজ-সিংহাসনে অভিষিক্ত হইলেন। এই গানে কতকগুলি বিষয় এরূপ আছে যা হাতে রাণী ময়নামতির উপর শ্রদ্ধা হইতে পারে না । সন্ন্যাস গ্রহণের প্রস্তাব হইলে গোবিন্দচন্দ্ৰ প্ৰতিবাদ করিয়া বলেন, তিনি কিছুতেই হাড়িসিদ্ধার মন্ত্রশিস্য হইতে সম্মত হইতে পারেন না ; একে সে অতি নীচ জাতি, তাহার উপব যে তঁহারই রাজধানীব। হাটবাজাবের জঘন্য স্থানগুলি পরিস্কার করিয়া বেড়ায়, তিনি রাজাধিরাজ হইয়া কি প্রকারে সেই হাড়িসিদ্ধাকে গুরু বলিয়া বরণ করিয়া লইতে পারেন ? রাণী তখন ক্রুদ্ধ হইয়া হাড়িব অলৌকিক মন্ত্রশক্তির পরিচয় দিতে প্ৰবৃত্ত হইলেন। ইন্দ্ৰ স্বয়ং তাহাকে ব্যজন করেন। সোণার খড়ম পায়ে পরিয়া হাড়ি নদীতে হঁটিয়া বেড়ায়। “চাদের পিঠে আন্ধে বাড়ে, কুরুমের পিঠে খায়”-ইত্যাদি নানারূপ গুণপনার উল্লেখ করিয়া ময়নামতী হাড়িসিদ্ধার প্রতি রাজার শ্রদ্ধা আকর্ষণ করিতে যত্নপার হন। কিন্তু গোবিন্দচন্দ্ৰ এই প্রসঙ্গে রাণীর বিরুদ্ধে অতি গুরুতর অভিযোগ উপস্থিত করেন--তিনি বলেন ; “আমি তোমার একটি কথাও বিশ্বাস করি না।” “হাড়ির খাইছেন গুয়া মা হাড়ির খাইছেন পান। ভাব করি শিখিয়া নিছ, ঐ হাড়ির গিয়ান ৷ হাড়ির গিয়ানে তোমার গিয়ানে জননী একস্তার করিয়া । আমার পিতাকে মারছেন মা গরল বিষ খাওয়াইয়া । বুদ্ধি পরামিশে আমাকে বনে পাঠাইয়া। গুয়া বীচি পাবেন তুমি ঐ হাড়ি লৈয়া ৷ BD BDDB DBDB DBBDu BDBD DBDBD BDD S DBDDBD BBBDB BBDBDD D DBD BBBDB DB D আমার পিতার মরণের দিন সতী গেলেন হএ । সত্য রাজার পুত্ৰ নাও পড়ানু হ’এ। ইহার সংক্ষিপ্ত অর্থ এই-মা তুমি এই হাড়ির হস্তের তাম্বুল ও গুবাক গ্ৰহণ করিয়াছ, এবং তাহার সঙ্গে ভাবি করিয়া তাহার ‘মহাজ্ঞান” শিখিয়া লইয়াছ। তাহার সঙ্গে পরামর্শ করিয়া আমার পিতাকে বিষ প্রয়োগ দ্বারা হত্যা করিয়াছ এবং পুনরায় তাহারই সঙ্গে পরামর্শ করিয়া আমাকে বনে পাঠাইয়া উহার সঙ্গে নির্বিঘ্নে সুখভোগের সংকল্প স্থির করিয়াছ। আমার পিতার মৃত্যুর পর তুমি তাহার চিতায় আরোহণ করিয়া “সতী” হইলে না কেন ? তুমি যদি সহমৃতা হইতে, তবে বুঝিতাম আমি সত্য রাজপুত্র হইয়া ভূমিষ্ঠ হইয়াছি।” এই গুরুতর অভিষোগ শুনিয়া রাণী অবশ্য পুত্রকে অভিসম্পাৎ ও ভৎসনা করিয়া অশ্রুবর্ষণ ময়নামতী ব্যাভিচারিণী কি না ?