পাতা:বঙ্গভাষা ও সাহিত্য - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গৌড়ীয় যুগ Sè (Sd কেহ কেহ পরিবার জনেরে প্রবোধে। কেহ ছিল কার কাৰ্য্য অনুরোধে । হেনহি সময়ে বেণু শুনিল শ্রবণে । bलिल গােপিকা সব যে ছিল যেমনে৷” এই সকল অংশ আমরা বাছিয়া উঠাই নাই ; মূলের সঙ্গে ইহার মোটামুটি বেশ ঐক্য আছে, কেবল রাধিকার প্রসঙ্গ ভাগবত বহির্ভূত। // রাধা প্রথমতঃ ব্ৰহ্মবৈবৰ্ত্ত পুরাণ ও আর কয়েকখানি সংস্কৃতগ্ৰন্থ আশ্রয় করিয়া শুভ দিনে আৰ্য্যা/ধৰ্ত্তের দেব-মণ্ডপে প্রবেশ লাভ করিয়াছিলেন ; চির শ্রদ্ধেয় দেবদেবীগণ প্রকৃতির এই আভরণ-হীনা সৌন্দৰ্য্য প্ৰতিমার আড়ালৈ পড়িয়া গেলেন ; সদ্য চু্যত-অনাস্ত্ৰাত মালতী-পুষ্পের ন্যায় এই দেবীকে পাইয়া কবি ও ভক্ত আনন্দিত হইল। চিরারাধ্যা দুৰ্গা ও কালীর উদ্দেশে আহৃত পুষ্পমালা শ্ৰীরাধিকার কণ্ঠে দোলাইয়া দিল। বঙ্গদেশে কুসুম-সিংহাসনে, ফুল্ল পঙ্কজ ও চন্দনান্দ্র তুলসী-দলে সজ্জিত হইয়া শ্ৰীবাধিক অধিষ্ঠিত হইলেন ; প্রাচীন বঙ্গীয় সাহিত্যের সার সৌন্দৰ্য্য তঁহারই চরণকমলের সুরভিমাখা । রাই কানু নাম বঙ্গ-সাহিত্য হইতে বাদ দিলে, এই দেশের অতীত ও ভাবী শত সহস্র উৎকৃষ্ট গীতি কবিতার শিরে বজ্ৰাঘাত করা হয় ! এই দেশে সেই সব সঙ্গীতের তুল্য মনোহারী কিছু হয় নাই। যদিও রাধার নাম ভাগবতে নাই, তথাপি কোন কোন পুরাণে (ব্ৰহ্মবৈবৰ্ত্ত পুরাণ ছাড়াও রাধার উল্লেখ আছে। রাধা-তন্ত্র, রাধা-চক্ৰ প্ৰভৃতি সংজ্ঞা ও তদ্বিষয়ক প্রাচীন পুথি দুল্লভ নহে। কাহারো কাহারো মতে সৌরমণ্ডলীর আবৰ্ত্তন হইতে রাধাকৃষ্ণলীলার পরিকল্পনা হইয়াছে ;-সূৰ্য্যকে লইয়া গ্ৰহ উপগ্ৰহগণ আকাশ-পথে যে ভাবে পরিভ্রমণ করেন বলিয়া প্ৰাচীনকালে বিশ্বাস ছিল, তাহা হইতেই “সৌরযাত্ৰা” এবং পরিশেষে কৃষ্ণযাত্ৰা” কল্পিত হইয়াছে। সুৰ্য্য-দেব বাধা, অনুবাধা, চিত্রা, বিশাখা প্রভৃতি গ্ৰহগণের সঙ্গে মিলিত হইতেন। এই মিলনই শেষে “রাস” সংজ্ঞা প্রাপ্ত হইয়া আধ্যাত্মিক অৰ্থবাচক হইয়াছে। বৈদিক সাহিত্যে বিষ্ণু অর্থ সূৰ্য্য। কালক্রমে স্বৰ্য্যের পূজা ও তৎসম্বন্ধীয় লীলা বিষ্ণুতে (কৃষ্ণে) আরোপ করা হইয়াছিল। কৃষ্ণ এই সূত্রে রাধা, অনুরাধা, চিত্রা, বিশাখা প্ৰভৃতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হইয়াছিলেন। প্ৰাকৃত পিঙ্গল প্ৰভৃতি বহু প্ৰাচীন গ্রন্থে রাধার নাম পাওয়া যাইতেছে। বস্তুত রাধা সংস্কৃত সাহিত্যে বিশেষ ভাবে স্বীকৃত না হইলেও লৌকিক সাহিত্যে র্তাহার স্থান অতি প্ৰাচীন কাল হইতে প্রতিষ্ঠিত ছিল। চণ্ডীদাসের কৃষ্ণ-কীৰ্ত্তন ও মালাধারের শ্ৰীকৃষ্ণ-বিজয়ে আমরা বঙ্গসাহিত্যে রাধা-কৃষ্ণের লীলার নানারূপ গ্ৰাম্য-আখ্যায়িক প্রাপ্ত হইতেছি । O দানলীলা অধ্যায়ে কবি মালাধর বসু সেই নূতন সৌন্দর্ঘ্যের রেখাপাত করিয়াছেন। ভাগবতের