পাতা:বঙ্গরহস্য - ভূবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sor বঙ্গরহস্ত। ' হানিয়া উড়াইয়া দিত, পতিকে যেন চাকর বানাইয়া অনেকগুলি যুবতী আপনাদিগকে কৃতাৰ্থ মনে করিত। ' নিজে স্বাধীন হইয়া পাড়ার কামিনীগণকেও স্বাধীন করিতে নবরঙ্গণী সৰ্ব্বদা অনুরাগিণী ছিলেন। গৃহস্থের কুলবধু অবগুণ্ঠন ত্যাগ করিয়া পদব্ৰজে পাঁচ বাড়ী বেড়াইয়া আসিত, সকলের সহিত কথা কহিত, যাহাদিগকে দেখিলে ঘোমটা দিতে হয়, হাসিয়া হাসিয়া তাহদের সঙ্গেও কথা কহিতে অভিলাষিণী হইত। অপর গৃহিণীরা তাহাদিগকে বেহায়া বলিয়া নিন্দা করিতেন, তাহারা তাহা গ্ৰাহা করিত না । এই রকমে নবরঙ্গিণীর দলপুষ্টি হইয়াছিল। নবরঙ্গিণীর কুটুম্বিনী অনেক । জাতীয় সম্পর্কে কুটুম্ব, অন্যজাতীয় বন্ধুবান্ধবগণের পরিবারগণও কুটুম্বা ; সুতরাং প্রতি শনিবার সেই সকল কুটম্বের নামে তিনি খানকতক পত্র লিখিয়া রাখিতেন। রবিবার আপিসের ছুটী থাকিত, স্বামী দ্বারা প্ৰতি রবিবার সেই সকল চিঠি তিনি বিলি করাইতেন । পুরুষের নামে চিঠি থাকিত, স্ত্রীলোকের নামেও থাকিত । তারাপদ যেন পেয়াদা হইয়া সেই স্বাকল চিঠি বিলি করিয়া বেড়াইতেন। অবশ্য, তিনি অপর লোকের অন্তঃপুরে প্রবেশের অধিকার পাইতেন না, পুরুষগণের হস্তেই স্ত্রীলোকগণের চিঠি তিনি গছাইয়া দিয়া আসিতেন। স্ত্রীলোক স্ত্রীলোককে পত্ৰ লিখিয়াছে, তাহাতে কোন দোষের সম্ভাবনা নাই, ইহা বিবেচনা করিয়া পুরুষেরা শিরোনামানুযায়ী - ‘গুল সেই সেই হস্তে প্ৰদান করিতেন ; পুরুষের নামের চিঠিগুলিও অসঙ্কোচে গৃহীত হইত। 丐冈列怀 চক্ৰবৰ্ত্ত, ঐরূপ কাৰ্য্য করিতে লজ্জাবোধ করিতেন না। স্ত্রীর প্রতি কোনরূপ সন্দেহ আসিত কি না, তাহা তিনি জানিতেন ; বাহিরে। কিন্তু কোন প্ৰকার বিরূদ্ধভাৰ প্ৰকাশ করিতেন না। চিঠিবিলির কথা দূরে থাকুক, পুরুষের মজলীসে নবরঙ্গিণীর হস্ত-বিলাসাদি ক্রীড়া তিনি স্বচক্ষে দেখিতেন, তাহাতেও । কিছু বলিতে পারিতেন না। পরপুরুষের সঙ্গে তরণী আরোহণে তরুণী ভাৰ্য্যা অপরাপর বাবুর বাগানে বেড়াইতে যাইতেন, তাহাতেও তারাপদ বারণ করিতেন না । উৎসাহ প্রাপ্ত স্কাইয়া দিন দিন নবরঙ্গিণীর সাহস বাড়িল, স্বাধীনতা বাড়িল, স্মৰ্ত্ত বাড়িল, বিদ্যােস বাড়িল। অনেকের মুখে শুনা যায়, লেখা-পড়া শিখিলে